শ্রীনগর, 11 অগস্ট: কাশ্মীরের বুকে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নামে সেনা। শনিবার রাতে অনন্তনাগ জেলার কোকেরনাগ অঞ্চল থেকে একটু দূরে আহলান গাগারমান্ডু জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনা। সমতল থেকে এলাকাটি প্রায় 10 হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত ৷ তল্লাশি অভিযানের সময়েই সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। পালটা জবাব দেয় ভারতীয় জওয়ানরাও। গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন 2 জওয়ান ৷ আহত হয়েছেন অন্তত 6 জন সেনা জওয়ান ৷
জানা গিয়েছে, গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গেই জওয়ানদের দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে পৌঁছানোর কিছু ক্ষণ পরই ওই দু'জন জওয়ানের মৃত্যু হয় ৷ ওই এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের সনাক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ করেছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর কর্মকর্তারা ৷ উল্লেখ্য, ওই জঙ্গলে কয়েক জন জঙ্গি ঘাঁটি গেড়েছেন বলে খবর পাওয়ার পরেই অভিযান চালানো হয়।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি অনন্তনাগের ঘটনায় জড়িত জঙ্গিরা গুলির লড়াইয়ের পর কিশতওয়ার জেলা হয়ে পালিয়ে গিয়েছে ৷ বর্তমান তল্লাশির বিবরণ দিয়ে শ্রীনগরের এক সেনা মুখপাত্র বলেছেন, গত 5 অগস্ট নিশ্চিত করা হয়েছিল যে জুলাই মাসে ডোডা অঞ্চলে যে এনকাউন্টার হয়েছিল তাতে ওই জঙ্গিরা কিশতওয়ার রেঞ্জ পেরিয়ে কাপরান-গারোল এলাকায় লুকিয়েছে যা, দক্ষিণ কাশ্মীরে। ভারতীয় সেনা ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ নিরলসভাবে এই জঙ্গিদের ট্র্যাক করে ৷ গতকাল রাতে কাপরানের পূর্বের পাহাড়ে যেখানে এই জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল বলে ভারতীয় সেনা বুঝতে পেরে তল্লাশি শুরু করে। তখনই শুরু হয় বন্দুকের লড়াই ৷ যার জেরে প্রাণ হারান দুই জওয়ান ৷
উল্লেখ্য, জম্মুতে ইতিমধ্যেই কাঠুয়া ও ডোডায় জঙ্গি হামলা হয়েছে। তারপরই এবার অনন্তনাগের খবর। বেশ কিছু রিপোর্টের দাবি, পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে বেশ কিছু জঙ্গি অনুপ্রবেশ হয়েছে। তারা মূলত জম্মু এলাকায় ছড়িয়ে গিয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে কাশ্মীরের বুকেও সন্ত্রাসবাদের খবর আসছে। তারও আগে, গতবছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, কোকেরনাগের গাদোল এলাকায় জঙ্গিদের আস্তানা সম্পর্কে একটি গোপন তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়েছিল ৷
সেনাবাহিনীর 19 রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে গাদোলের কোকেরনাগের জঙ্গল এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ৷ এরপর ওই এলাকায় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা সেনা বাহিনীকে অতর্কিতে আক্রমণ চালালে, 9 রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সিও কর্নেল মনপ্রীত সিং-এর মৃত্যু হয় । তিনি ছাড়াও মেজর আশিস ডনচাক ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের উপ-পুলিশ সুপার হুমায়ুন বাটও শহিদ হন । জখম হওয়া এক নিরাপত্তা কর্মীরও প্রাণ যায় ওই বন্দুকের লড়াইয়ে ৷ সেবার শহিদ হওয়া সৈনিকের সংখ্যা ছিল 4 ৷