16 মার্চ ভারতে পালন করা হয় হাম টিকাকরণ দিবস, যার লক্ষ্য এই মারাত্মক অসুখ সম্পর্কে এবং কেন টিকাকরণ প্রয়োজন, তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, যদিও নিরাপদ এবং কম দামের ভ্যাকসিন এখন পাওয়া যায়, তা সত্ত্বেও 2018 সালে বিশ্বজুড়ে হামের প্রকোপে 1 লাখ 40 হাজারেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে ৷ যাদের মধ্যে অধিকাংশই পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশু । হামের টিকাকরণের জেরে বিশ্বজুড়ে 2000 থেকে 2018 সালের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা 73 শতাংশ কমেছে ।
হাম অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ ৷ যার কারণ একটি ভাইরাস ৷ এর কোনও ওষুধ হয় না । একে রোখার একমাত্র পথ টিকাকরণ ৷ যা একইসঙ্গে নিরাপদ ও সস্তা । হু জানাচ্ছে 1963 সালে হাম ভ্যাকসিন আসা এবং ব্যাপকভাবে টিকাকরণ শুরুর আগে দু-তিন বছর অন্তর বড় মহামারী দেখা দিত ৷ প্রতি বছর 2.6 মিলিয়ন মৃত্যু হত । কিন্তু হামের টিকাকরণের জন্য 2000 থেকে 2018 সালের মধ্যে 73 শতাংশ মৃত্যু কমেছে ।
হাম নিয়ে আরও তথ্য
হামের কারণ হল প্যারামিক্সোভাইরাস গোত্রের একটি ভাইরাস ৷ যা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সঙ্গে হাওয়ায় মাধ্যমে ছড়াতে পারে । এই ভাইরাস সাধারণত শ্বাসনালীর মধ্যে ঢোকে এবং আস্তে আস্তে গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে । ভ্যাকসিন না নেওয়া বাচ্চারা বাকিদের তুলনায় বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে । পাশাপাশি ভ্যাকসিন না নেওয়া অন্তঃসত্ত্বা এবং যাঁদের ভ্যাকসিন নিয়েও প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠেনি, তাঁরাও আক্রান্ত হতে পারেন ।
আরও পড়ুন: খাদ্যকে সুরক্ষিত করা, ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়ার শক্তিশালী অস্ত্র
উপসর্গ
ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার 7 থেকে 14 দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে এবং পরে তার আরও অবনতি হতে পারে । সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মতে, নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দেয় :
১. সংক্রমিত হওয়ার 7 থেকে 14 দিন পর : প্রথম উপসর্গ
হাম সাধারণত শুরু হয়
জ্বর (104 ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে)
কাশি
সর্দি
চোখ লাল হয়ে জল পড়া
২. উপসর্গ দেখা দেওয়ার 2 থেকে 3 দিন পর: কপলিক স্পটস
মুখের মধ্যে ছোটো ছোটো সাদা ছোপ দেখা দিতে পারে উপসর্গ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিনদিনের মাথায় ।
৩. উপসর্গ দেখা দেওয়ার 3 থেকে 5 দিন পর: হামের র্যাশ
তিন থেকে পাঁচদিনের মাথায় র্যাশ বেরোতে শুরু করে । প্রথমে কপালে সমতল লাল ছোপের মতো শুরু হয় এবং নিচের দিকে নামতে নামতে ঘাড়, কোমর, পা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় ।
সমান লাল ছোপের ওপর ছোটো উঁচু অংশও তৈরি হতে পারে ।
সারা শরীরে ছড়াবার সময় একটা ছোপ অন্যটার সঙ্গে জুড়ে যেতে পারে ।
এই সময় জ্বর 104 ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে ।
হাম থেকে যা হতে পারে
কানে সংক্রমণ
ডায়রিয়া, এবং তার জেরে ডিহাইড্রেশন
নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস
এনসেফ্যালাইটিস
গর্ভাবস্থায় সমস্যা
চোখের সংক্রমণ (কনজাংটিভাইটিস)
অন্ধত্ব
ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে
ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল অফ ইন্ডিয়া বলছে, “হু সুপারিশ করছে প্রত্যেক শিশুকে দুটো করে হামের ভ্যাকসিনের ডোজ় নিতে ৷ হয় শুধু হাম, নয়তো মিজলস-রুবেলা বা মিজলস-মাম্পস-রুবেলা কম্বিনেশনে । ভারতে ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজ়েশন প্রোগ্রামের আওতায় 9 থেকে 12 মাস বয়সে প্রথম ডোজ় এবং 16 থেকে 24 মাসে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়ে থাকে ।”