হায়দরাবাদ: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস- নামের সঙ্গে আজকাল সকলেই পরিচিত ৷ বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন ৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পিসিওএস এমন একটা ব্যধি যা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে ৷ এর অন্যতম মূল কারণ জেনেটিক, দ্বিতীয়ত অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ৷
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম আসলে কী? পিসিওএস সিন্ড্রোমে মেয়েদের ডিম্বাশয় বেশি পরিমাণে অ্যান্ড্রোজেন তৈরি করে, যা মূলত ছেলেদের হরমোন ৷ প্রধানত, মেয়েদের শরীরে এই হরমোন খুব কম থাকে ৷ কিন্তু পিসিওএসের ক্ষেত্রে এই হরমোন বেশি তৈরি হয় মেয়েদের শরীরে ৷ যা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে ৷ শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের মতে, ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার জন্য যে হরমোনের প্রয়োজন হয়, সেটা পর্যাপ্ত পরিমাণে না-থাকলে ডিম্বাণু মেয়েদের শরীরে তৈরি হয় না ৷ যা পরবর্তী সময়ে ডিম্বাশয়ের বাইরে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি করে ৷ সেই থেকেই এই রোগ বাড়তে থাকে ৷
জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানেই চিকিৎসকরা মহিলাদের মধ্যে এই সিনড্রোম নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেন ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং বিপাকের সমস্যা রয়েছে। পিরিয়ডসের অনিয়ম থেকে শুরু করে বন্ধ্যাত্বের মতো কঠিন সমস্যা তৈরি করতে পারে পিসিওএস ৷ পাশাপাশি, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্থূলতা এবং মানসিক সমস্যার মতো অন্যান্য রোগের কারণের নেপথ্য থাকে পিসিওএস ৷
বেশিরভাগ চিকিৎসকদের মতে, অনেক মহিলা বুঝতেই পারেন না তাঁর পিসিওএস রয়েছে কি না ৷ তাঁদের মতে শুধুমাত্র আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমেই পিসিওএস নির্ণয় করা যায় তা নয় ৷ এই রোগে আক্রান্ত মেয়েদের চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, ব্রণ, মুখে ও শরীরে শক্ত ও অপ্রয়োজনীয় চুল থাকাও একটা বড় লক্ষণ ৷ যদিও এই রোগটি নতুন নয়, তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে এটি মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমেও বাড়বে না ওজন, মেনে চলুন এই টিপসগুলি
দেশের অন্যান্য দেশের মতো, কাশ্মীর উপত্যকার মহিলারাও পিসিওএস-এ ভুগছেন ৷ পাশাপাশি প্রতিদিন 15 থেকে 20 জন রোগীকে হাসপাতালের ওপিডি-তে দেখা হচ্ছে। পিসিওএস সোসাইটি ইন্ডিয়ার আহ্বায়ক ডঃ সাবাহত রসুল জানান, এই রোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য না থাকার কারণে অনেক মেয়ে চিকিৎসা ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করেন ৷ এমনকী সঠিক চিকিৎসার অভাবে অনেক মহিলা মারাও যান। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ রোগের সম্পূর্ণ চিকিৎসা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে সতর্কতা অবলম্বন এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে এই রোগ এড়ানো যায় বলে জানান ডঃ সাবাহাত।