ETV Bharat / sukhibhava

ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনকে বোঝা ও তা নিরাময় করা

আপনার কী কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে ? আপনি কী হতাশায় ভুগছেন ? মন দিয়ে কাজ করতে পারছেন না ? তাহলে আপনি ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড ৷ এটি একটি গুরুতর মানসিক রোগ ৷ চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ নিরাময় সম্ভব জানালেন বিশেষজ্ঞ মনোবিদ ডা. রেশমী ওয়াধয়া ৷

Understanding and Treating Clinical Depression
ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনকে বোঝা ও তা নিরাময় করা
author img

By

Published : Aug 18, 2020, 9:02 AM IST

অন্য কোনও শারীরিক অসুস্থতার মতো ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন সহজে লক্ষ্য করা বা বোঝা যায় না । অনেক সময় দুঃখে থাকা কোনও মানুষকে ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড বলে ভুল করা হয় আর তার ফলে সতি্যকারের অসুস্থতা ধরা পড়ে না । ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন আসলে হল এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা যা বাস্তব, সাধারণ মানুষেরও হতে পারে ৷ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হয় । ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড মানুষকে স্বাভাবিক মনে হলেও ভিতরে ভিতরে অসুস্থতা থেকেই যায় আর খুব খুঁটিয়ে কাউকে পর্যবেক্ষণ না করলে, এই অসুস্থতা বোঝা যায় না ।

দুখী হওয়ার সঙ্গে ক্লিনিকাল ডিপ্রেসড হওয়ার কিছু উপসর্গ অনেক সময় মিলে যায় । একজন মানুষ যেসব কাজ আগে করতে ভালবাসতেন তাঁর সেই কাজেই অনীহা দেখা দেয়, অবসাদ গ্রাস করে তাঁকে ৷ এঁরা সকালের দিকে অল্পেতেই ক্নান্ত হয়ে পড়েন অথচ রাতে এনার্জি বেড়ে যায় । অতীতে হওয়া ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে এঁরা চিন্তা করেন আর তার জন্য নিজেকে তুচ্ছ বলে ভাবতে শুরু করেন । কেউ ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড কি না তা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ না করলে কখনওই বোঝা যাবে না । এই সব মানুষ বেশিরভাগ সময় একাকীত্বে ভোগেন আর এঁদের মনে সারাক্ষণ নেতিবাচক চিন্তা এবং আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা ঘুরতে থাকে ।

আমাদের বিশেষজ্ঞ মনোবিদ ডা. রেশমী ওয়াধয়া নানা ধরনের অবসাদ, তার কারণ এবং নিরাময় সম্পর্কে বলেছেন । একাধিক ধরনের অবসাদ হতে পারে, যেমন-

  • মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার (MDD)
  • পারসিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার
  • বাইপোলার ডিজ়অর্ডার
  • পোস্ট-পারটাম ডিজ়অর্ডার
  • প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিজ়অর্ডার
  • আটিপিকাল ডিজ়অর্ডার

স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, ঠিক কী কারণে অবসাদ হয় তা জানা যায়নি । কিন্তু এ কথা ঠিক যে, একাধিক কারণে ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন হতে পারে । ডা. রেশমী জানিয়েছেন, “যখন কোনও মানুষ এমন পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েন যা অনেক চেষ্টা করেও তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, বা তাঁর ইচ্ছাগুলি কোনওভাবে পূর্ণ হচ্ছে না, তখন দুঃখের অনুভব হয় । এই অনুভূতিগুলিই পরে সেই মানুষের মধ্যে এমন মনোভাব তৈরি করে যে, সবরকম কাজকেই তাঁর বিশাল বড় দায়িত্ব বলে মনে হয় ৷ আর সেই দায়িত্ব পূরণে তিনি সম্পূর্ণভাবে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন । কোনওভাবে তাতে বার বার ঘাটতি হলে, তাঁর মধ্যে দুঃখ হয় । তার থেকে হয় উদ্বেগ ও চিন্তা । আর যথা সময়ে তা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলেই ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন দেখা দেয় ।

কেউ ক্লিনিকাল ডিপ্রেসনে আক্রান্ত কি না তা বোঝার একমাত্র রাস্তা হল এর উপসর্গগুলি ভাল করে জানা । যে মানুষ আগে স্বাভাবিক ও স্বক্রিয় ছিলেন কিন্তু হঠাৎ পরে তার সবকিছুতেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন এবং বেশিরভাগ সময়ই বিনা কারণে দুঃখে থাকাই হল ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড হওয়ার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য ৷ আমাদের জীবনে এমন সময় প্রত্যেকেরই আসে যখন আমরা একবার হলেও অবসাদগ্রস্ত হই, আর এটা স্বাভাবিক । কিন্তু যে ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড, সে বেশিরভাগ সময়ই অবসাদে ভোগে । দিনের বেশিরভাগ সময়, সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন মন বিষাদে ভারাক্রান্ত থাকে । কেউ ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে আক্রান্ত কি না তা বোঝার এটাই হল প্রথম এবং প্রধান পর্যবেক্ষণজনিত উপসর্গ ।

  • চিকিৎসা

ডা. রেশমী জানিয়েছেন, “রাতারাতি ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন নিরাময় করা সম্ভব নয় । এতে সময় লাগে । কোনও প্রশিক্ষিত কাউন্সিলরের কাছ থেকে যথাযথ কাউন্সেলিং করাতে হবে এবং ওষুধ খেতে হবে । এতে অবসাদের কারণ চিহ্নিত করার পাশাপাশি নিরাময় শুরু করাও সম্ভব হবে ।”

ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন হল একটি গুরুতর মানসিক রোগ । কিন্তু চিকিৎসা সম্ভব । কেউ ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড কি না তা বুঝতে তাকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং তার লক্ষণগুলি যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে । যথাসময়ে চিকিৎসাগত সহযোগিতা পেলে এই অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ।

অন্য কোনও শারীরিক অসুস্থতার মতো ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন সহজে লক্ষ্য করা বা বোঝা যায় না । অনেক সময় দুঃখে থাকা কোনও মানুষকে ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড বলে ভুল করা হয় আর তার ফলে সতি্যকারের অসুস্থতা ধরা পড়ে না । ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন আসলে হল এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা যা বাস্তব, সাধারণ মানুষেরও হতে পারে ৷ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হয় । ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড মানুষকে স্বাভাবিক মনে হলেও ভিতরে ভিতরে অসুস্থতা থেকেই যায় আর খুব খুঁটিয়ে কাউকে পর্যবেক্ষণ না করলে, এই অসুস্থতা বোঝা যায় না ।

দুখী হওয়ার সঙ্গে ক্লিনিকাল ডিপ্রেসড হওয়ার কিছু উপসর্গ অনেক সময় মিলে যায় । একজন মানুষ যেসব কাজ আগে করতে ভালবাসতেন তাঁর সেই কাজেই অনীহা দেখা দেয়, অবসাদ গ্রাস করে তাঁকে ৷ এঁরা সকালের দিকে অল্পেতেই ক্নান্ত হয়ে পড়েন অথচ রাতে এনার্জি বেড়ে যায় । অতীতে হওয়া ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে এঁরা চিন্তা করেন আর তার জন্য নিজেকে তুচ্ছ বলে ভাবতে শুরু করেন । কেউ ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড কি না তা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ না করলে কখনওই বোঝা যাবে না । এই সব মানুষ বেশিরভাগ সময় একাকীত্বে ভোগেন আর এঁদের মনে সারাক্ষণ নেতিবাচক চিন্তা এবং আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা ঘুরতে থাকে ।

আমাদের বিশেষজ্ঞ মনোবিদ ডা. রেশমী ওয়াধয়া নানা ধরনের অবসাদ, তার কারণ এবং নিরাময় সম্পর্কে বলেছেন । একাধিক ধরনের অবসাদ হতে পারে, যেমন-

  • মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার (MDD)
  • পারসিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার
  • বাইপোলার ডিজ়অর্ডার
  • পোস্ট-পারটাম ডিজ়অর্ডার
  • প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিজ়অর্ডার
  • আটিপিকাল ডিজ়অর্ডার

স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, ঠিক কী কারণে অবসাদ হয় তা জানা যায়নি । কিন্তু এ কথা ঠিক যে, একাধিক কারণে ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন হতে পারে । ডা. রেশমী জানিয়েছেন, “যখন কোনও মানুষ এমন পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েন যা অনেক চেষ্টা করেও তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, বা তাঁর ইচ্ছাগুলি কোনওভাবে পূর্ণ হচ্ছে না, তখন দুঃখের অনুভব হয় । এই অনুভূতিগুলিই পরে সেই মানুষের মধ্যে এমন মনোভাব তৈরি করে যে, সবরকম কাজকেই তাঁর বিশাল বড় দায়িত্ব বলে মনে হয় ৷ আর সেই দায়িত্ব পূরণে তিনি সম্পূর্ণভাবে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন । কোনওভাবে তাতে বার বার ঘাটতি হলে, তাঁর মধ্যে দুঃখ হয় । তার থেকে হয় উদ্বেগ ও চিন্তা । আর যথা সময়ে তা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলেই ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন দেখা দেয় ।

কেউ ক্লিনিকাল ডিপ্রেসনে আক্রান্ত কি না তা বোঝার একমাত্র রাস্তা হল এর উপসর্গগুলি ভাল করে জানা । যে মানুষ আগে স্বাভাবিক ও স্বক্রিয় ছিলেন কিন্তু হঠাৎ পরে তার সবকিছুতেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন এবং বেশিরভাগ সময়ই বিনা কারণে দুঃখে থাকাই হল ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড হওয়ার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য ৷ আমাদের জীবনে এমন সময় প্রত্যেকেরই আসে যখন আমরা একবার হলেও অবসাদগ্রস্ত হই, আর এটা স্বাভাবিক । কিন্তু যে ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড, সে বেশিরভাগ সময়ই অবসাদে ভোগে । দিনের বেশিরভাগ সময়, সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন মন বিষাদে ভারাক্রান্ত থাকে । কেউ ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে আক্রান্ত কি না তা বোঝার এটাই হল প্রথম এবং প্রধান পর্যবেক্ষণজনিত উপসর্গ ।

  • চিকিৎসা

ডা. রেশমী জানিয়েছেন, “রাতারাতি ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন নিরাময় করা সম্ভব নয় । এতে সময় লাগে । কোনও প্রশিক্ষিত কাউন্সিলরের কাছ থেকে যথাযথ কাউন্সেলিং করাতে হবে এবং ওষুধ খেতে হবে । এতে অবসাদের কারণ চিহ্নিত করার পাশাপাশি নিরাময় শুরু করাও সম্ভব হবে ।”

ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন হল একটি গুরুতর মানসিক রোগ । কিন্তু চিকিৎসা সম্ভব । কেউ ক্লিনিকালি ডিপ্রেসড কি না তা বুঝতে তাকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং তার লক্ষণগুলি যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে । যথাসময়ে চিকিৎসাগত সহযোগিতা পেলে এই অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.