বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ পাবলিক হেলথের গবেষকদের রিসার্চ অনুযায়ী, প্রজনন ক্ষমতার উপর করোনার ভ্যাকসিনের কোনও প্রভাব নেই (COVID vaccination does not affect fertility) ৷ অর্থাৎ ভ্যাকসিন কখনওই ফার্টিলিটি কমায় না ৷ তবে গবেষণা বলছে, পুরুষরা যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে সাময়িকভাবে কমে যেতে পারে প্রজনন ক্ষমতা ৷
কোভিড-19 এর ভ্যাকসিন বন্ধ্যাত্বের কারণ নয়, বলছে গবেষণা:
আমেরিকান জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি-তে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, সন্তানের জন্য চেষ্টা করছেন এমন দম্পতিদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, করোনার ভ্য়াকসিনের সঙ্গে প্রজনন ক্ষমতার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই ৷ দম্পতিদের মধ্যে যাঁরা ফাইজার, মডার্না কিংবা জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন পেয়েছেন, তাঁদের প্রত্য়েকের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে প্রতি মাসিক চক্রে ৷ বরং এর ফলাফল এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, পুরুষরা যদি করোনা আক্রান্ত হন তবে সাময়িকভাবে তাঁদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার যে ঝুঁকি থাকে, ভ্যাকসিন তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম ৷
গবেষণার প্রধান লেখক তথা বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ পাবলিক হেলথের মহামারিবিদ্যার গবেষণা সহকারী অধ্যাপক ডঃ অ্যামেলিয়া ওয়েসেলিংক বলেছেন, "অনেক বয়স্ক ব্য়ক্তিই প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়াকে টিকা না নেওয়ার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন ৷ আমাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সঙ্গমের মাধ্য়মে যে সমস্ত দম্পতি সন্তান লাভের চেষ্টা করছেন তাঁদের উভয়ের ফার্টিলিটির ক্ষেত্রে টিকা কোনও প্রভাব ফেলে না ৷ বরং এটাই দেখা গিয়েছে যে, টিকাগ্রহণের সময়কাল যাই হোক না কেন গর্ভধারণের সময়কাল একই রয়েছে ৷ "
ওয়েসলিংক এবং তাঁর সহকর্মীরা অনলাইনে বিভিন্ন দম্পতিদের ওপর এই সমীক্ষাটি চালিয়েছেন ৷ এনআইএইচের অর্থায়নে সংগঠিত এই সমীক্ষাটিতে গর্ভধারণের ছয়মাস আগে থেকে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর অবধি সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে গবেষকরা অংশগ্রহণকারীর শেষ মাসিকের তারিখ, সাধারণ মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্য এবং গর্ভধারণের সময়কাল বিশ্লেষণ করে প্রত্য়েক মাসিক চক্রের সম্ভব্য ধারণা তৈরি করেছেন ৷ এক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ভ্য়াকসিনের অন্তত একটি ডোজ গ্রহণকারী মহিলাদের সঙ্গে ভ্যাকসিন না নেওয়া মহিলাদের ফার্টিলিটি হারের প্রায় কোনও তফাৎ নেই ৷ একইভাবে পুরুষদের মধ্য়েও এই তুলনা করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন থেকে প্রাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছ'মাসের মধ্যেই হারিয়ে ফেলেন 30% মানুষ : গবেষণা
এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷ যেমন ভ্যাকসিনটি কি ধরণের, বন্ধ্যাত্বের ইতিহাস আছে কি না, পেশা, ভৌগলিক অবস্থান প্রভৃতি ৷ কিন্তু এক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে একই ফলাফল ৷ গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনের সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কোনও সরাসরি যোগ নেই ৷ যদিও করোনা রোগের কারণে বন্ধ্য়াত্ব আসে না, তবে গবেষণা বলছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং যাঁরা কখনওই করোনা আক্রান্ত হননি তাঁদের মধ্যে একটি 60 দিনের পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, সংক্রমিত পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা 60 দিনের এই চক্রের মধ্য়ে কিছুটা কমে গিয়েছে ৷