হায়দরাবাদ: যদি শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, তখন এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে কোনও প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু যদি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল, তখন এই ব্যাকটেরিয়া আঁকড়ে ধরে শরীরকে । নিউমোনিয়া একটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ফুসফুসের সংক্রমণ । নিউমোনিয়ার হলে কাশি ও কফের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ঠান্ডা লাগার মত নানান ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় । কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময় মতো এই নিউমোনিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে, পরবর্তী সময়ে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে । এমনকী এর ফলে মৃত্যুও হতে পারে । এই কারণে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রতি বছর 12 নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালিত হয় ।
নিউমোনিয়া দিবসের ইতিহাস:
2009 সালে শিশুদের নিউমোনিয়ার নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সচেতনা বৃদ্ধির কাদ শুরু হয়। গঠিত হয় দ্য গ্লোবাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট চাইল্ডহুড নিউমোনিয়া । এটি এমন একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা অন্য সমস্ত সরকারি, বেসরকারি এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক সংস্থা থেকে শুরু করে গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে । যে বছর বিশ্বে নিউমোনিয়া দিবস পালন শুরু হয় তখন এই রোগে প্রায় 1.2 মিলিয়ন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল ৷
নিউমোনিয়ার সম্পর্কে বলতে গেলে দমদমের আইএলএস হাসপাতালের বিশেষ ফুসফুস বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ সরকার বলেন, এখন হার্টের রোগ পর্যন্ত ভালো হচ্ছে তাহলে নিউমোনিয়া কেনো ভালো হবে না ? তবে নিউমোনিয়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে ৷ বয়স যদি 65 বছরের বেশি হয় তাহলে ভয় থেকেই যায় ৷ এটি একটি ওয়াল্ড ওয়াইস ৷ গোটা পৃথিবী জুড়েই বয়স একটা মেন ফ্যাক্টর ৷ এইক্ষেত্রেও যদি কারও শরীরে ইমিউনিটি ক্ষমতা কম থাকে বা শরীরে যদি কোনও অন্য কোনও উপসর্গ থেকে থাকে তাহলে সমস্যা হতে পারে ৷ অ্যান্টি বায়োটিক খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় কাজ করে না ৷
তিনি এটাও বলেন, অ্যান্টি বায়োটিক জিনিসটা সবথেকে মাথাব্যথার কারণ ৷ অ্যন্টি বায়োটিক ঠিকমতো না ব্যবহার করলে বা খেতে খেতে খাওয়া বন্ধ করে দিলে সমস্যা হতে পারে ৷ সাধারণ সর্দি কাশিটা সবসময় নিউমোনিয়া নয় ৷ নিউমোনিয়ার প্রধান লক্ষণ হল খুব বেশি জ্বর, দীর্ঘসময় কাশি, কাশির সঙ্গে কফ, বুকে ব্যথা ইত্যাদি হতে পারে ৷
নিউমোনিয়া বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া ৷ এছাড়াও স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া ৷ নিউমোনিয়ার ধরণের মধ্যেও আছে ফাঙ্গাল নিউমোনিয়া, ভাইরাল নিউমোনিয়া ৷ এছাড়াও তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে ৷ তাই বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের বিপদ বেশি ৷ শিশুদের ক্ষেত্রে ততটা ভয়ের কিছু নেই।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবধান অবলম্বন করা প্রয়োজন ৷ অ্যন্টি বায়োটিক ঠিকঠাক গ্রহণ করা, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন ৷ এসির তাপমাত্রার দিকে নজর দেওয়া 16 ডিগ্রি বা 18 ডিগ্রিতে না রেখে 27 থেকে 28 ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখা বাঞ্ছনীয় ৷ ফলে বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে ভিতরের তাপমাত্রার পার্থক্য ঠিক রাখা ৷ মেঘলা দিনে বা যেকোনও সময় ঠান্ডা জল দেওয়া, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাওয়া ও গরম জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: