কলকাতা: প্রচণ্ড গরম, গায়ে রাখা যাচ্ছে না গরম পোশাক । শরীরে দিচ্ছে ঘাম । সোয়েটার খোলার পর মুহূর্তেই কনকনে ঠান্ডা হাওয়া । গরম জামায় আবার নিজেকে মুড়িয়ে ফেলা । আবহাওয়ার এই তারতম্যে অতিষ্ঠ রাজ্যবাসী । আর সেই তারতম্যের জন্যই ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে সর্দি-কাশি-জ্বর । সেখানে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কী করে ? সেই পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস ।
এই আবহাওয়া তারতম্যে সর্দি-কাশি সাধারণ বিষয়ে । কিন্তু একে আটকাব কি করে এটাই প্রশ্ন । সে বিষয়ে চিকিৎসক বলেন যতটা সম্ভব জনসমাগমে না যাওয়া এবং মাস্ক পড়ে বেড়ানোটাই শ্রেয় । কিন্তু এই যে গরম লাগছে বলে আমরা কখনও ঠান্ডা জল খেয়ে ফেলছি, গায়ের মোটা জামাটা খুলে ফেলছি এটা কখনওই করা উচিত নয় । আবার তারই সঙ্গে ঠান্ডা লাগছে বলে গরম জল খাচ্ছি । এটাও উচিত নয় । এতে আমাদের শরীরের কোনও সুবিধা হয় না, শুধুমাত্র গলায় আরাম লাগে । " আবার তারই সঙ্গে চিকিৎসকৈর কথায়, "এই সময় আমরা অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাওয়ার খেয়েনি । আবার অনেকে মদ্যপান বেশি করেন । যেটাও শরীরের পক্ষে খারাপ । কারণ মদ্যপান বা তৈলাক্ত খাওয়ার কিছুক্ষণের জন্য শরীর গরম থাকছে । আবার একটা সময় পর শরীরটা আগের অবস্থাতেই ফিরে যাচ্ছে । এটা বন্ধ করতে হবে ।"
চিকিৎসকের মতে, আমরা গরমকালেও যা যা খাবার খাই শীতকালেও সেগুলিই খেতে হবে । অতিরিক্ত শাকসবজি, ফল খেলেই শরীরে ভিটামিন বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হবে । যেটাই এই সর্দি-কাশি বা জ্বরকে নির্মূল করতে পারে । অতিরিক্ত জল খাওয়ার কথাও বলেন চিকিৎসক । মূলত যাদের কিডনি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের এই সময়ের নিউমোনিয়া হওয়ার একটা প্রকোপ দেখা যায় । তবে বেশ কিছু টিকা রয়েছে যা এই ধরনের রোগীদের সুস্থ রাখতে পারেন । চিকিৎসক বলেন, "65 এর উপরে প্রত্যেক বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়া যেতে পারে । আর এখন নিউমোনিয়ার দু'রকমের টিকা নেওয়া যায় এক বছরের ব্যবধানে । যারা পঞ্চাশোর্দ্ধ তারা যদি ক্যানসার বা কিডনি বা শ্বাসকষ্ট হলে তো সমস্যায় ভোগেন তারাও কিন্তু এই টিকা নিতে পারেন । এছাড়াও তাদের যে ওষুধ চলছে তা প্রতিনিয়ত খেলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না ।"
তবে এসবের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ যেহেতু করোনার সাব ভ্যারিয়েন্টের হদিশ রাজ্যে দেখা গিয়েছে তাই জ্বর যদি তিন দিনের বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি । শিশুদের ক্ষেত্রে যদি জ্বর হয় তাহলে তাদের স্কুলে পাঠানো বা বাইরে বের করা যেন না হয় । তার সঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক হয় । তাহলেই এই জ্বর-সর্দি-কাশি বা করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুস্থ থাকবে রাজ্যবাসী ।
আরও পড়ুন: