কলকাতা, 17 অক্টোবর: পুজো মানেই আনন্দের রেশ ৷ তাই পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায় প্রায় দু'মাস আগে থেকে ৷ কেনাকাটার সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় খাবার খাওয়ার লিস্ট। আবার পুজোর আগে থেকেই দেখা যায় ওজন কমানোর হিড়িক। পুজোর আগে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য জিম থেকে যোগা সবতেই উপচে পড়ে ভিড়। এই বিষয়ে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাম্মানিক ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ ডঃ অরিত্র খাঁ বলেন, "পুজোর ঠিক আগে আগে ওজন কমানো একটা ট্রেন্ড। তবে এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখা নেই । আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় চলে যার জন্য দরকার পর্যাপ্ত সময়।"
তবে সবাই যে জিম বা যোগা করেই ওজন কমাচ্ছেন তা নয় । বহু মানুষ ঠিক করেন তাঁদের নিজস্ব ডায়েট প্রেসক্রিপশন । তবে এটি কতটা যুক্তিযুক্ত ? আদৌ কোনও বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দিয়ে দেখানো হয়েছে কি ?
পুষ্টিবিদের কথা অনুযায়ী, এই ডায়েট প্রেসক্রিপশন বলে কিছু হয় না । বহু মানুষ এখন নিজে থেকে ভুলভাল কিছু একটা মেনে চলতে থাকে । যা থেকে বিপদ বাড়ে । কারণ একজন ব্যক্তির সঙ্গে কখনওই অন্য মানুষের ডায়েট মেলে না । তাই ক্লিনিক্যাল ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ না-নিয়ে খাওয়া কমানো বা বন্ধ করা উচিৎ নয় ।
পুজো মানেই পরিক্রমা, এক মণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডপ যাওয়া ৷ বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ।তবে এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল খাওয়া দাওয়া । পুজোর কটা দিন কী খাওয়া হবে তা যেন এক বড় ভাবনার বিষয় । মণ্ডপে ঠাকুর দেখার লাইনকেও যেন হার মানায় এই সময়ে রেস্টুরেন্টের ভিড় । তবে পুজো মিটতেই এই অনিয়মের জেরে অসুস্থও হয়ে পড়েন বহু মানুষ । কী করা উচিত তাঁদের ? পুষ্টিবিদ অরিত্রর কথা অনুযায়ী, হঠাৎ করে ফুচকা খেলাম তারপরে দুধ চা তারপর ফের ভাজাভুজি এমন করলে কিন্তু শারীরিক সমস্যা দেখা যাবে ৷ কোন দিন কোনটা খাওয়া উচিত সেটি বিচার করেই খাওয়ার উপর ঝুঁকতে হবে ৷ কারণ সবার হজম ক্ষমতা এক হয় না ।
অন্যদিকে তাঁর মতে, এই পুজোর সময় অতি অবশ্যই ঠাকুর দেখার সঙ্গে জলের বোতল রাখা দরকার ৷ এরই সঙ্গে পুষ্টিবিদের আরও বেশ কিছু পরামর্শ রয়েছে । অষ্টমী মানেই অঞ্জলি আর অঞ্জলি মানেই উপোস রেখে দেবী বন্দনা। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি বড় বিপদের। পুষ্টিবিদ জানান, যদি কেউ ডায়াবেটিক থাকেন তাহলে অতি অবশ্যই সকালে কিছু একটা খেয়ে তারপর অঞ্জলি দেবেন আর নয়তো সকাল সকাল গিয়ে অঞ্জলি দিয়ে আসবেন । যাতে খালি পেট বেশিক্ষণ না থাকে ।
এছাড়াও তিনি সতর্ক করেন হার্টজনিত সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের । তিনি বলেন, "পাঁঠার মাংস হল রেড মিট ও হোয়াইট মিটের মর্ধ্যবর্তী স্ট্রেন । কারণ ভাজাভুজি খাওয়ার পর রেডমিট শরীরে ক্ষতি করবে । আমাদের শরীর কোলেস্টেরল তৈরি করে । তাই বাইরে থেকে কোলেস্টেরল নিয়ে আসার কোন দরকারই পড়ে না ।" এছাড়াও পর্যাপ্ত ব্যায়ম করার নির্দেশও দেন তিনি ।