ক্যাঙ্গারু কেয়ার বা ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ারকে (KMC), যা মা ও শিশুর ত্বকের সংস্পর্শ বলেও পরিচিত, তা স্তন্যদান, সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো এবং সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের হাসপাতাল থেকে ছাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং কম ওজনের শিশুদের মধ্যে মৃত্যুহার কমায়।
এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরতে, ইটিভি ভারত সুখীভব কথা বলেছিল হায়দরাবাদের রেনবো চিল্ড্রেন্স হসপিটালের নিওনেটোলজিস্ট এবং শিশুচিকিৎসক নিতাশা বাগ্গার সঙ্গে।
কেএমসি হল একটি পদ্ধতি যেখানে শিশুদের প্রধানত মায়ের (কখনও কখনও বাবার সঙ্গে) বুকের সঙ্গে বুক স্পর্শ করিয়ে রাখা হয়। এটা সাধারণত সমস্ত শিশুদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়, আর বিশেষ করে সেইসব শিশুদের জন্য, যাদের ওজন কম থাকার জন্য শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং এনআইসিইউ-তে ভর্তি করতে হয়।
কয়েকটি প্রাণী যেভাবে তাদের সন্তানদের বহন করে, তার থেকেই ক্যাঙ্গারু কেয়ারের নাম দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতি তৈরি হয় সেইসব দেশে, যেখানে সময়ের আগে জন্মানো শিশুদের যত্নের জন্য হয় ইনকিউবেটর ছিল না, অথবা থাকলেও তা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। এরপর তা নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয় এবং সমস্ত সদ্যোজাতের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হতে থাকে, বিশেষ করে যে নবজাতকদের ওজন 2000 গ্রামের কম । যে শিশুদের জন্মের সময় ওজন হাজার গ্রাম, অথবা রেসপিরেটরি সাপোর্ট লাগছে, তাদের ক্ষেত্রেও এটা করা যেতে পারে।
কেএমসি যাতে সাহায্য করে:
দীর্ঘ ব্রেস্টফিডিংয়ে সহায়তা করে
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
সংক্রমণের ঘটনা ও অভিঘাত কমায়
এনআইসিইউ-তে থাকার সময়সীমা কমায়
গভীর ঘুমের সংখ্যা ও সময় প্রলম্বিত করে
ইন্দ্রিয়গুলোকে সজাগ করে (গন্ধ, স্পর্শ ও স্বাদ)
সময়ের আগে জন্মানো শিশুদের ক্ষেত্রে স্নায়র বিকাশে সাহায্য করে
মায়ের কী কী উপকারে লাগে:
স্তনদুগ্ধের পরিমাণ বাড়ায়
মা ও শিশুর মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় করে
মা ও শিশুর ‘জিরো সেপারেশন’-এ সহায়ক হয়
মাতৃত্বকালীন ব্যাথা ও অবসাদ থেকে স্বস্তি দেয়
মা শিশুকে আঁচলে জড়িয়ে নেন, যাতে শিশু দুধ না থাকা সত্ত্বেও স্তন্যপান করে। একে নন-নিউট্রিভ সাকিং (এনএনএস) বলে। সাধারণত এনএনএস ও কেএমসি একসঙ্গে অনুসরণ করা হয়। প্রতি ২-৩ ঘণ্টায় ব্রেস্ট মিল্ক পাম্প ব্যবহার করা হলে, তা স্তনদুগ্ধ নিশ্চিত হতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন যষ্টিমধুর উপকারিতা
কম ওজনের শিশুর স্তন্যপান করতে অসুবিধা হয় বলে আমরা সরাসরি তা দিতে পারি না। তাই স্তনদুগ্ধ বার করে নিয়ে, খালি স্তন শিশুর মুখে দেওয়া হয় এনএনএসের জন্য। বাচ্চার ওজন দেড় থেকে দু’কেজির মধ্যে থাকলে এবং মা আত্মবিশ্বাসী হলে সরাসরি ব্রেস্ট ফিডিংয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়। কেএমসি শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেই নয়, দেশজুড়ে গ্রামেও অনুসরণ করা হয়।
আরও জানতে যোগাযোগ: nitashabagga@gmail.com