ETV Bharat / sukhibhava

কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে ওবেসিটি ?

অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা ? আপনার অজান্তেই অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে কোভিড । সতর্ক করছে সুখীভব ।

কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে ওবেসিটি
কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে ওবেসিটি
author img

By

Published : Mar 7, 2021, 1:12 PM IST

শরীরের যে অসুস্থতা নিয়ে আজকাল সবথেকে বেশি কথা হয়, সেটা হল অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি । একটি অসংক্রামক অসুখ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর, ওবেসিটি হচ্ছে এমন একটা ফ্যাক্টর, যা সমস্ত কঠিন রোগে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে । ৪ মার্চ বিশ্ব ওবেসিটি দিবস উপলক্ষ্যে ‘২০২১ অ্যাটলাস রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন । সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যেখানে করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে ওবেসিটি । যেসব দেশে অতিরিক্ত ওজনের লোকের সংখ্যা কম, সেখানকার তুলনায় বেশি ওবেসিটি আক্রান্ত মানুষের দেশে মৃত্যুহারও বেশি দেখা যাচ্ছে ।

পরিসংখ্যান কী বলছে?

২০২১ অ্যাটলাস রিপোর্ট বলছে, ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত কোভিডে ২.৫ মিলিয়ন মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ২.২ মিলিয়ন সেইসব দেশে, যেখানে অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার অতিরিক্ত ওজন । ব্রিটেনের তথ্য বলছে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে যতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৩৬ শতাংশ কোনও শারীরিক পরিশ্রম করতেন না এবং তাঁদের ওজনও অতিরিক্ত ছিল । “ আমেরিকায় ১ মার্চ থেকে ১৪ মে ২০২০ পর্যন্ত করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কোভিড পজিটিভ আনুমানিক ১০.৫ শতাংশ মানুষের ওবেসিটি আছে ।”

ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)-এর মতে, “কোভিডের কারণে ২০২০-২১ সালে বিশ্বজুড়ে উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে, এবং ২০২০-২৫ সালে এটা বাড়তে বাড়তে ২২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে ।” আইএমএফের অনুমান, ওবেসিটির মতো ফ্যাক্টরের কারণে রোগের প্রাবল্য বেড়ে যাওয়ায়, দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে এই ক্ষতি আরও ৬-৭ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে ।

আরও পড়ুন : স্থূলতা : প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে বাড়তে থাকা উদ্বেগের কারণ

ভারতের জনগণের বিএমআই সন্তোষজনক নয়

পরিস্থিতি, নাগরিকদের আনুমানিক বয়স, মেডিক্যাল অগ্রগতি ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশে যে গবেষণা করা হয়েছে তাতে ভারতের অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক । রিপোর্ট বলছে, বিএমআই, অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্কদের বডি মাস ইনডেক্স এদেশে একেবারেই সন্তোষজনক নয় । গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৯.৭ শতাংশ মানুষের ওজন অতিরিক্ত ছিল, আর ৩.৯ শতাংশ ওবেসিটিতে আক্রান্ত ছিলেন ।

ভারতে ২০১০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ওবেসিটিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা সম্ভবত বাড়তে চলেছে । ২০১০ সালে প্রায় ২ শতাংশ মানুষ ওবেসিটির সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন । ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা বেড়ে ৫.৩ শতাংশ হবে মনে করা হচ্ছে । যদি সংখ্যার দিক থেকে দেখা যায়, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৬,৩২১.৮ জন পুরুষ ওবেসিটির শিকার হবেন । একই সঙ্গে যদি মহিলাদের পরিসংখ্যান দেখা যা, তাহলে ২০১০ সালে তা ছিল ৪ শতাংশ, যেটা ২০২৫ সালের মধ্যে ৮.৪ শতাংশে পৌঁছবে, অর্থাৎ ৩৯,৬০৪.৭ জন মহিলা ।

সাম্প্রতিক অতীতে বাচ্চাদের মধ্যেও ওবেসিটি বাড়তে দেখা যাচ্ছে । শতাংশের দিক থেকে দেখলে , ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের মধ্যে ওবেসিটি আক্রান্তের সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১ শতাংশ, যেটা ২০২৫ সালের মধ্যে বেড়ে ৫.১ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে, অর্থাৎ ১৮,২৯৪.১ জন ।

মৃত্যুর হারে খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব

গবেষকরা ওবেসিটিকে উস্কে দেওয়া খাবার নিয়েও গভীরে গবেষণা করেছেন । একে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে: স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, যার মধ্যে ডাল, মাটির নিচে হওয়া সব্জি এবং আমিষ, পরিশুদ্ধ তেল, গ্লুকোজ ও শর্করা যুক্ত খাদ্য সহ বিভিন্ন এনার্জি-বর্ধক খাবার রয়েছে । ফলাফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কোভিডে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আমিষাশী, চিনিযুক্ত খাবার বেশি খান এবং ওবেসিটি আক্রান্তের সংখ্যা সেইসব মানুষের তুলনায় অনেক বেশি, যাঁরা নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান ।

সুতরাং, ওবেসিটি একটা উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে এবং এটাই সময় যখন আমাদের লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাস বদলাবার দিকে নজর দেব । তার কারণ অতিরিক্ত ওজন এবং ওবেসিটি অন্যান্য অসুস্থতার দিকেও ঠেলে দিতে পারে এবং তাদের আরও গুরুতর করে তুলতে পারে । তাই সুস্থ ও ফিট থাকার দিকে নজর দিতে হবে ।

শরীরের যে অসুস্থতা নিয়ে আজকাল সবথেকে বেশি কথা হয়, সেটা হল অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি । একটি অসংক্রামক অসুখ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর, ওবেসিটি হচ্ছে এমন একটা ফ্যাক্টর, যা সমস্ত কঠিন রোগে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে । ৪ মার্চ বিশ্ব ওবেসিটি দিবস উপলক্ষ্যে ‘২০২১ অ্যাটলাস রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন । সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যেখানে করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে ওবেসিটি । যেসব দেশে অতিরিক্ত ওজনের লোকের সংখ্যা কম, সেখানকার তুলনায় বেশি ওবেসিটি আক্রান্ত মানুষের দেশে মৃত্যুহারও বেশি দেখা যাচ্ছে ।

পরিসংখ্যান কী বলছে?

২০২১ অ্যাটলাস রিপোর্ট বলছে, ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত কোভিডে ২.৫ মিলিয়ন মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ২.২ মিলিয়ন সেইসব দেশে, যেখানে অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার অতিরিক্ত ওজন । ব্রিটেনের তথ্য বলছে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে যতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৩৬ শতাংশ কোনও শারীরিক পরিশ্রম করতেন না এবং তাঁদের ওজনও অতিরিক্ত ছিল । “ আমেরিকায় ১ মার্চ থেকে ১৪ মে ২০২০ পর্যন্ত করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কোভিড পজিটিভ আনুমানিক ১০.৫ শতাংশ মানুষের ওবেসিটি আছে ।”

ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)-এর মতে, “কোভিডের কারণে ২০২০-২১ সালে বিশ্বজুড়ে উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে, এবং ২০২০-২৫ সালে এটা বাড়তে বাড়তে ২২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে ।” আইএমএফের অনুমান, ওবেসিটির মতো ফ্যাক্টরের কারণে রোগের প্রাবল্য বেড়ে যাওয়ায়, দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে এই ক্ষতি আরও ৬-৭ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে ।

আরও পড়ুন : স্থূলতা : প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে বাড়তে থাকা উদ্বেগের কারণ

ভারতের জনগণের বিএমআই সন্তোষজনক নয়

পরিস্থিতি, নাগরিকদের আনুমানিক বয়স, মেডিক্যাল অগ্রগতি ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশে যে গবেষণা করা হয়েছে তাতে ভারতের অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক । রিপোর্ট বলছে, বিএমআই, অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্কদের বডি মাস ইনডেক্স এদেশে একেবারেই সন্তোষজনক নয় । গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৯.৭ শতাংশ মানুষের ওজন অতিরিক্ত ছিল, আর ৩.৯ শতাংশ ওবেসিটিতে আক্রান্ত ছিলেন ।

ভারতে ২০১০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ওবেসিটিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা সম্ভবত বাড়তে চলেছে । ২০১০ সালে প্রায় ২ শতাংশ মানুষ ওবেসিটির সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন । ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা বেড়ে ৫.৩ শতাংশ হবে মনে করা হচ্ছে । যদি সংখ্যার দিক থেকে দেখা যায়, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৬,৩২১.৮ জন পুরুষ ওবেসিটির শিকার হবেন । একই সঙ্গে যদি মহিলাদের পরিসংখ্যান দেখা যা, তাহলে ২০১০ সালে তা ছিল ৪ শতাংশ, যেটা ২০২৫ সালের মধ্যে ৮.৪ শতাংশে পৌঁছবে, অর্থাৎ ৩৯,৬০৪.৭ জন মহিলা ।

সাম্প্রতিক অতীতে বাচ্চাদের মধ্যেও ওবেসিটি বাড়তে দেখা যাচ্ছে । শতাংশের দিক থেকে দেখলে , ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সের মধ্যে ওবেসিটি আক্রান্তের সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১ শতাংশ, যেটা ২০২৫ সালের মধ্যে বেড়ে ৫.১ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে, অর্থাৎ ১৮,২৯৪.১ জন ।

মৃত্যুর হারে খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব

গবেষকরা ওবেসিটিকে উস্কে দেওয়া খাবার নিয়েও গভীরে গবেষণা করেছেন । একে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে: স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, যার মধ্যে ডাল, মাটির নিচে হওয়া সব্জি এবং আমিষ, পরিশুদ্ধ তেল, গ্লুকোজ ও শর্করা যুক্ত খাদ্য সহ বিভিন্ন এনার্জি-বর্ধক খাবার রয়েছে । ফলাফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কোভিডে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আমিষাশী, চিনিযুক্ত খাবার বেশি খান এবং ওবেসিটি আক্রান্তের সংখ্যা সেইসব মানুষের তুলনায় অনেক বেশি, যাঁরা নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান ।

সুতরাং, ওবেসিটি একটা উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে এবং এটাই সময় যখন আমাদের লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাস বদলাবার দিকে নজর দেব । তার কারণ অতিরিক্ত ওজন এবং ওবেসিটি অন্যান্য অসুস্থতার দিকেও ঠেলে দিতে পারে এবং তাদের আরও গুরুতর করে তুলতে পারে । তাই সুস্থ ও ফিট থাকার দিকে নজর দিতে হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.