ETV Bharat / sukhibhava

উচ্চ রক্তচাপ কি অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় ?

বিশ্বের 2 থেকে 10 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা মহিলা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের শিকার । গর্ভাবস্থায় নানা কারণে এটা হতে পারে । তা একদম আলাদাভাবে মোকাবিলা করতে হবে । যাতে শিশুকে প্রভাবিত না করে মা-কে নিরাপদে রাখা যায় । স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. পূর্বা সাহাকারি এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন ।

bp
সুখীভব
author img

By

Published : Sep 10, 2020, 12:00 PM IST

বিশ্বের 2 থেকে 10 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা মহিলা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের শিকার । গর্ভাবস্থায় নানা কারণে এটা হতে পারে । তা একদম আলাদাভাবে মোকাবিলা করতে হবে । যাতে শিশুকে প্রভাবিত না করে মা-কে নিরাপদে রাখা যায় । স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. পূর্বা সাহাকারি এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন ।

গর্ভাবস্থায় হাইপারটেনশন এই চারটি প্যাটার্নে হতে পারে :

  • যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা গর্ভাবস্থার আগে বা 20 সপ্তাহের (5 মাস) মাথায় উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে শুরু করেন ।
  • যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয় । তা প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া প্রোটিনের উপস্থিতির সঙ্গে যুক্ত ।
  • যখন 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়, যা প্রস্রাবের নমুনায় পাওয়া প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত নয় ।
  • 1 ও 2 নম্বর কারণ সম্মিলিতভাবে ।

চেক আপের সময়েই হাইপারটেনশন ধরা পড়ে । যখন ব্লাড প্রেসার ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত দুবার 140/90-এর মাত্রায় পৌঁছায় । প্রস্রাবের নমুনায় প্রোটিনের উপস্থিতি আমাদের হাইপারটেনশনের ধরণ বুঝতে সাহায্য করে ।

কাদের ঝুঁকি বেশি ?

  • প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা
  • 40 বা তার বেশি বয়সের মহিলা
  • পূর্বের গর্ভাবস্থার সময় যাঁর উচ্চ রক্তচাপের হিস্ট্রি রয়েছে ।
  • যাঁদের ডায়াবিটিস, স্থূলতা এবং গর্ভাবস্থার আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে । যাঁদের ধূমপান, অটোইমিউনড ডিজ়িজ, কিডনির সমস্যার হিস্ট্রি রয়েছে ।
  • যমজ বা একাধিক প্রেগনেন্সি।

অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ -

  • পা ফুলে যাওয়া, হাত ও মুখ ফুলে যাওয়া ।
  • মাথাব্যাথা, ঝিমুনি, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, অস্বাভাবিক যন্ত্রণা, হঠাৎ নসিয়া এবং বমি ইত্যাদি ।

অন্তঃসত্ত্বাদের হাইপারটেনশন মায়ের পাশাপাশি ভ্রুনের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে -

  • মায়েদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভরতি করার বা এমার্জেন্সি ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে । কনভালসন, লিভারের সমস্যা, ব্রেন হেমারেজ এবং স্ট্রোকও হতে পারে ।
  • হাইপারটেনশনে আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভে ভ্রুণের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে । আগেই ডেলিভারি, জটিলতা, জন্মের সময় কম ওজন, এমনকী ভ্রুণের মৃত্যুও ঘটতে পারে ।
  • কীভাবে যত্নবান হবেন :
  • এক্ষেত্রে মহিলাদের ঘনঘন তাঁদের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যেতে হবে এবং তাঁদের অতিরিক্ত রক্তপরীক্ষা ও বিশেষ আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাও করাতে হতে পারে ।
  • নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং চার্টে লিখে রাখলে পর্যবেক্ষণে সুবিধা হবে ।
  • পর্যাপ্ত ঘুম, বিশ্রাম, অল্প হাঁটা, মেডিটেশন করা যেতে পারে ।
  • প্রয়োজন হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, যাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ।

স্বাভাবিক প্রসব না সিজ়ারিয়ান ?

এটা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল । অবস্থার ওপর নির্ভর করে প্রতিটি কেসের ভিত্তিতে চিকিৎসক এই সিদ্ধান্ত নেন । জটিলতা বা নির্দিষ্ট সমস্যা থাকলে সিজ়ারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে ডেলিভারি হয় ।

ডেলিভারির পর কি রক্তচাপ কমে যায় ?

অনেক ক্ষেত্রে হ্যাঁ । যদিও কয়েকজনকে ডেলিভারির পরও ওষুধ খেয়ে যেতে হতে পারে । এটা নির্দিষ্ট কেসের ভিত্তিতেই দেখা উচিত । কয়েকজনের পরের দিকেও রক্তচাপ তৈরির সম্ভাবনা থাকতে পারে । তাই একটা স্বাস্থ্যকর জীবনচর্যা, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা কমে ।

নিয়মিত চেকআপ, মানসিকভাবে স্বাস্থ্যবান থাকা, পরিবারের ভালবাসার সঙ্গে যত্ন পেলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভাবস্থা এবং প্রসব নিরাপদ হতে পারে ।

আপনাদের প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ drpurva1410@gmail.com

বিশ্বের 2 থেকে 10 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা মহিলা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের শিকার । গর্ভাবস্থায় নানা কারণে এটা হতে পারে । তা একদম আলাদাভাবে মোকাবিলা করতে হবে । যাতে শিশুকে প্রভাবিত না করে মা-কে নিরাপদে রাখা যায় । স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. পূর্বা সাহাকারি এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন ।

গর্ভাবস্থায় হাইপারটেনশন এই চারটি প্যাটার্নে হতে পারে :

  • যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা গর্ভাবস্থার আগে বা 20 সপ্তাহের (5 মাস) মাথায় উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে শুরু করেন ।
  • যখন কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয় । তা প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া প্রোটিনের উপস্থিতির সঙ্গে যুক্ত ।
  • যখন 20 সপ্তাহের পর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়, যা প্রস্রাবের নমুনায় পাওয়া প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত নয় ।
  • 1 ও 2 নম্বর কারণ সম্মিলিতভাবে ।

চেক আপের সময়েই হাইপারটেনশন ধরা পড়ে । যখন ব্লাড প্রেসার ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত দুবার 140/90-এর মাত্রায় পৌঁছায় । প্রস্রাবের নমুনায় প্রোটিনের উপস্থিতি আমাদের হাইপারটেনশনের ধরণ বুঝতে সাহায্য করে ।

কাদের ঝুঁকি বেশি ?

  • প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা
  • 40 বা তার বেশি বয়সের মহিলা
  • পূর্বের গর্ভাবস্থার সময় যাঁর উচ্চ রক্তচাপের হিস্ট্রি রয়েছে ।
  • যাঁদের ডায়াবিটিস, স্থূলতা এবং গর্ভাবস্থার আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে । যাঁদের ধূমপান, অটোইমিউনড ডিজ়িজ, কিডনির সমস্যার হিস্ট্রি রয়েছে ।
  • যমজ বা একাধিক প্রেগনেন্সি।

অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ -

  • পা ফুলে যাওয়া, হাত ও মুখ ফুলে যাওয়া ।
  • মাথাব্যাথা, ঝিমুনি, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, অস্বাভাবিক যন্ত্রণা, হঠাৎ নসিয়া এবং বমি ইত্যাদি ।

অন্তঃসত্ত্বাদের হাইপারটেনশন মায়ের পাশাপাশি ভ্রুনের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে -

  • মায়েদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভরতি করার বা এমার্জেন্সি ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে । কনভালসন, লিভারের সমস্যা, ব্রেন হেমারেজ এবং স্ট্রোকও হতে পারে ।
  • হাইপারটেনশনে আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভে ভ্রুণের বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে । আগেই ডেলিভারি, জটিলতা, জন্মের সময় কম ওজন, এমনকী ভ্রুণের মৃত্যুও ঘটতে পারে ।
  • কীভাবে যত্নবান হবেন :
  • এক্ষেত্রে মহিলাদের ঘনঘন তাঁদের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যেতে হবে এবং তাঁদের অতিরিক্ত রক্তপরীক্ষা ও বিশেষ আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাও করাতে হতে পারে ।
  • নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং চার্টে লিখে রাখলে পর্যবেক্ষণে সুবিধা হবে ।
  • পর্যাপ্ত ঘুম, বিশ্রাম, অল্প হাঁটা, মেডিটেশন করা যেতে পারে ।
  • প্রয়োজন হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, যাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ।

স্বাভাবিক প্রসব না সিজ়ারিয়ান ?

এটা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল । অবস্থার ওপর নির্ভর করে প্রতিটি কেসের ভিত্তিতে চিকিৎসক এই সিদ্ধান্ত নেন । জটিলতা বা নির্দিষ্ট সমস্যা থাকলে সিজ়ারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে ডেলিভারি হয় ।

ডেলিভারির পর কি রক্তচাপ কমে যায় ?

অনেক ক্ষেত্রে হ্যাঁ । যদিও কয়েকজনকে ডেলিভারির পরও ওষুধ খেয়ে যেতে হতে পারে । এটা নির্দিষ্ট কেসের ভিত্তিতেই দেখা উচিত । কয়েকজনের পরের দিকেও রক্তচাপ তৈরির সম্ভাবনা থাকতে পারে । তাই একটা স্বাস্থ্যকর জীবনচর্যা, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা কমে ।

নিয়মিত চেকআপ, মানসিকভাবে স্বাস্থ্যবান থাকা, পরিবারের ভালবাসার সঙ্গে যত্ন পেলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মহিলাদের গর্ভাবস্থা এবং প্রসব নিরাপদ হতে পারে ।

আপনাদের প্রশ্নের জন্য যোগাযোগ drpurva1410@gmail.com

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.