ETV Bharat / sukhibhava

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খাবারদাবার কীভাবে প্রভাব ফেলে? - Sukhibhaba

আমাদের অন্ত্র সরাসরি আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত (অন্ত্র—মস্তিষ্ক সংযোগ) । অন্ত্রকে দ্বিতীয় মস্তিষ্কও বলা হয় । যা আমাদের মুড এবং ভালো থাকাকে প্রভাবিত করে । রাগ, উদ্বেগ, দুঃখ প্রভৃতি অন্ত্রে উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে । আমরা যা খাই, তা শুধু আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরই প্রভাব ফেলে না, বরং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ভালো থাকাকেও সমানভাবে প্রভাবিত করে ।

food
food
author img

By

Published : Oct 22, 2020, 3:45 PM IST

আমাদের অন্ত্র সরাসরি আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত (অন্ত্র—মস্তিষ্ক সংযোগ) । অন্ত্রকে দ্বিতীয় মস্তিষ্কও বলা হয় । যা আমাদের মুড এবং ভালো থাকাকে প্রভাবিত করে । রাগ, উদ্বেগ, দুঃখ প্রভৃতি অন্ত্রে উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে । আমরা যা খাই, তা শুধু আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরই প্রভাব ফেলে না, বরং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ভালো থাকাকেও সমানভাবে প্রভাবিত করে ।

আমাদের GI ট্র‌্যাক্টে (অন্ত্র) কয়েক কোটি ব্যাকটেরিয়া বাস করে । যা নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদনকে প্রভাবিত করে । এই নিউরোট্রান্সমিটার আদপে হল রাসায়নিক পদার্থ যা প্রতিনিয়ত অন্ত্র থেকে বার্তা মস্তিষ্কে প্রেরণ করে (যেমন সেরোটোনিন এবং ডোপামিন) । স্বাস্থ্যকর খাবারদাবার খেলে ‘ভালো’ ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়, যা ইতিবাচকভাবে নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদনকে প্রভাবিত করে । ডায়েটে যদি জাঙ্ক ফুড এবং চিনি থাকে, তাহলে এখানে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে GI ট্র‌্যাক্টে ‘মন্দ’ ব্যাকটিরিয়ারা খাবার পায় । আপনি যখন একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করে চলেন, তখন আপনার কারণেই আপনার ‘মুড ফ্লাকচুয়েশনস’ অর্থাৎ অনুভূতির তারতম্য তুলনামূলকভাবে কম হয় এবং আপনার মনোনিবেশ করার ক্ষমতার উন্নতি হয় ।

অতি পুষ্টিকর ডায়েটের সুপারিশ করা হয় স্বাস্থ্যেরর বিকাশ এবং সমৃদ্ধির জন্য । কাজেই মানসিক স্বাস্থে্যর উন্নতিসাধনের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা চালু করা খুব জরুরি ।

যে সব খাবার আপনার সুস্বাস্থে্যর জন্য প্রয়োজনীয় :

1) নিজের ফ্রিজ ফল আর সবজিতে ভরতি করুন

আমরা যখন কোনও কারণে চাপে থাকি, তখন আমরা খাবারে সেই চাপমুক্তির সূত্র খুঁজি আর তার জেরে প্রক্রিয়াজাত, চিনিযুক্ত এবং উচ্চ—ফ্যাটযুক্ত খাবারদাবার খেয়ে ফেলি, যা আমাদের শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে । তাই চেষ্টা করুন নানা ধরনের ফল আর সবজি খেতে, কারণ সেগুলি ভিটামিনস, মিনারেলস এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসে ভরতি ।

2 ) প্রোবায়োটিক খাবার খান

যেহেতু আমাদের অন্ত্র এবং মস্তিষ্ক পরস্পর সংযুক্ত, তাই তারা বার্তা আদানপ্রদান করে এবং অন্ত্র যেমন আবেগসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, তেমনই মস্তিষ্ক অন্ত্রে উপস্থিত ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলতে পারে । এতে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, অবসাদ হ্রাস পায়। তাই খাদ্যতালিকায় ইয়োগার্ট, কোমবুচা, সু্যরক্র‌্যাট মাছ, দই—ভাত, ধোকলা, ইডলি, কেফির, কিমচি, আচার প্রভৃতি অর্ন্তভুক্ত করুন ।

3 ) কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটস

খাদ্যতালিকায় কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটস অর্ন্তভুক্ত করুন যেমন ব্রাউন রাইস, ওটস, মিলেটস, কুইনোয়া প্রভৃতি যাতে মস্তিষ্ক আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে ।

4 ) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস

হেলদি ফ্যাট যেমন অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, বাদাম, বীজ, সাদা মাখন, ঘি, অ্যাভোক্যাডো, ফ্যাট—সমৃদ্ধ মাছ যেমন স্যালমন এবং ম্যাকারেল প্রভৃতি আমাদের চিন্তাশক্তি ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ ঘটায় এবং মুড ভালো করে ।

5 ) অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। নানা ধরনের বেরি জাতীয় ফল, সবুজ শাকসবজি এবং হলুদে এটি পাওয়া যায় । ডার্ক চকোলেটেও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস (তবে সঙ্গে চিনিও থাকে) থাকে, যদিও মেপে খাওয়া যেতে পারে ।

6 ) ফোলেট

এই ধরনের ভিটামিন বি পাওয়া যায় সবুজ শাকসবজি, ডিম, ডাল, বিনস প্রভৃতিতে ।

7 ) ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। সাধারণত আমরা ভিটামিন ডি পাই সূর্যের আলো থেকে । মাশরুমও এর ভালো উৎস ।

8 ) ম্যাগনেসিয়াম

এই খনিজ পদার্থও খাবারের সঙ্গে মুডের সংযোগসূত্রের জরুরি উপাদান । কোনও খনিজ পদার্থের ঘাটতি হলে তা অন্ত্রের ব্যাকটিরিয়াকে আঘাত করতে পারে এবং তার জেরে অবসাদ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হয় । এর প্রাকৃতিক উৎস হল ডার্ক চকোলেট, বাদাম, কাজুবাদাম, পালংশাক ও অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাকসবজি, কলা এবং বিনস ।

9 ) জিংক

এই পুষ্টি উপাদান মানসিক চাপের ফলে শরীরের প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে । এর উৎসের মধে্য উল্লেখযোগ্য অয়েস্টার, রেড মিট, মটরশুঁটি, বীজ, বাদাম, ডিম প্রভৃতি ।

নোট: মন দিয়ে খাওয়াদাওয়া করুন । উপরে বর্ণিত টিপসগুলি মেনে চলুন নিজের মানসিক সুস্বাস্থে্যর জন্য । তাছাড়া আপনাকে যদি ওষুধপত্র নিয়মিত খেতে হয়, সেক্ষেত্রেও সে সব কিছু আরও ভালো কাজ করবে যদি আপনি উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন এবং মস্তিষ্কের সুস্বাস্থে্যর জন্য উপযোগী ডায়েট মেনে চলেন ।

আমাদের অন্ত্র সরাসরি আমাদের মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত (অন্ত্র—মস্তিষ্ক সংযোগ) । অন্ত্রকে দ্বিতীয় মস্তিষ্কও বলা হয় । যা আমাদের মুড এবং ভালো থাকাকে প্রভাবিত করে । রাগ, উদ্বেগ, দুঃখ প্রভৃতি অন্ত্রে উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে । আমরা যা খাই, তা শুধু আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরই প্রভাব ফেলে না, বরং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং ভালো থাকাকেও সমানভাবে প্রভাবিত করে ।

আমাদের GI ট্র‌্যাক্টে (অন্ত্র) কয়েক কোটি ব্যাকটেরিয়া বাস করে । যা নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদনকে প্রভাবিত করে । এই নিউরোট্রান্সমিটার আদপে হল রাসায়নিক পদার্থ যা প্রতিনিয়ত অন্ত্র থেকে বার্তা মস্তিষ্কে প্রেরণ করে (যেমন সেরোটোনিন এবং ডোপামিন) । স্বাস্থ্যকর খাবারদাবার খেলে ‘ভালো’ ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়, যা ইতিবাচকভাবে নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদনকে প্রভাবিত করে । ডায়েটে যদি জাঙ্ক ফুড এবং চিনি থাকে, তাহলে এখানে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে GI ট্র‌্যাক্টে ‘মন্দ’ ব্যাকটিরিয়ারা খাবার পায় । আপনি যখন একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করে চলেন, তখন আপনার কারণেই আপনার ‘মুড ফ্লাকচুয়েশনস’ অর্থাৎ অনুভূতির তারতম্য তুলনামূলকভাবে কম হয় এবং আপনার মনোনিবেশ করার ক্ষমতার উন্নতি হয় ।

অতি পুষ্টিকর ডায়েটের সুপারিশ করা হয় স্বাস্থ্যেরর বিকাশ এবং সমৃদ্ধির জন্য । কাজেই মানসিক স্বাস্থে্যর উন্নতিসাধনের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা চালু করা খুব জরুরি ।

যে সব খাবার আপনার সুস্বাস্থে্যর জন্য প্রয়োজনীয় :

1) নিজের ফ্রিজ ফল আর সবজিতে ভরতি করুন

আমরা যখন কোনও কারণে চাপে থাকি, তখন আমরা খাবারে সেই চাপমুক্তির সূত্র খুঁজি আর তার জেরে প্রক্রিয়াজাত, চিনিযুক্ত এবং উচ্চ—ফ্যাটযুক্ত খাবারদাবার খেয়ে ফেলি, যা আমাদের শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে । তাই চেষ্টা করুন নানা ধরনের ফল আর সবজি খেতে, কারণ সেগুলি ভিটামিনস, মিনারেলস এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসে ভরতি ।

2 ) প্রোবায়োটিক খাবার খান

যেহেতু আমাদের অন্ত্র এবং মস্তিষ্ক পরস্পর সংযুক্ত, তাই তারা বার্তা আদানপ্রদান করে এবং অন্ত্র যেমন আবেগসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, তেমনই মস্তিষ্ক অন্ত্রে উপস্থিত ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলতে পারে । এতে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, অবসাদ হ্রাস পায়। তাই খাদ্যতালিকায় ইয়োগার্ট, কোমবুচা, সু্যরক্র‌্যাট মাছ, দই—ভাত, ধোকলা, ইডলি, কেফির, কিমচি, আচার প্রভৃতি অর্ন্তভুক্ত করুন ।

3 ) কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটস

খাদ্যতালিকায় কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটস অর্ন্তভুক্ত করুন যেমন ব্রাউন রাইস, ওটস, মিলেটস, কুইনোয়া প্রভৃতি যাতে মস্তিষ্ক আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে ।

4 ) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস

হেলদি ফ্যাট যেমন অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, বাদাম, বীজ, সাদা মাখন, ঘি, অ্যাভোক্যাডো, ফ্যাট—সমৃদ্ধ মাছ যেমন স্যালমন এবং ম্যাকারেল প্রভৃতি আমাদের চিন্তাশক্তি ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ ঘটায় এবং মুড ভালো করে ।

5 ) অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। নানা ধরনের বেরি জাতীয় ফল, সবুজ শাকসবজি এবং হলুদে এটি পাওয়া যায় । ডার্ক চকোলেটেও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস (তবে সঙ্গে চিনিও থাকে) থাকে, যদিও মেপে খাওয়া যেতে পারে ।

6 ) ফোলেট

এই ধরনের ভিটামিন বি পাওয়া যায় সবুজ শাকসবজি, ডিম, ডাল, বিনস প্রভৃতিতে ।

7 ) ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। সাধারণত আমরা ভিটামিন ডি পাই সূর্যের আলো থেকে । মাশরুমও এর ভালো উৎস ।

8 ) ম্যাগনেসিয়াম

এই খনিজ পদার্থও খাবারের সঙ্গে মুডের সংযোগসূত্রের জরুরি উপাদান । কোনও খনিজ পদার্থের ঘাটতি হলে তা অন্ত্রের ব্যাকটিরিয়াকে আঘাত করতে পারে এবং তার জেরে অবসাদ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হয় । এর প্রাকৃতিক উৎস হল ডার্ক চকোলেট, বাদাম, কাজুবাদাম, পালংশাক ও অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাকসবজি, কলা এবং বিনস ।

9 ) জিংক

এই পুষ্টি উপাদান মানসিক চাপের ফলে শরীরের প্রতিক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে । এর উৎসের মধে্য উল্লেখযোগ্য অয়েস্টার, রেড মিট, মটরশুঁটি, বীজ, বাদাম, ডিম প্রভৃতি ।

নোট: মন দিয়ে খাওয়াদাওয়া করুন । উপরে বর্ণিত টিপসগুলি মেনে চলুন নিজের মানসিক সুস্বাস্থে্যর জন্য । তাছাড়া আপনাকে যদি ওষুধপত্র নিয়মিত খেতে হয়, সেক্ষেত্রেও সে সব কিছু আরও ভালো কাজ করবে যদি আপনি উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন এবং মস্তিষ্কের সুস্বাস্থে্যর জন্য উপযোগী ডায়েট মেনে চলেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.