ETV Bharat / sukhibhava

বৃদ্ধ বয়সে আয়ুর্বেদ কীভাবে সাহায্য করতে পারে ? - বৃদ্ধ বয়সে আয়ুর্বেদের সাহায্য

আসুন, বয়স্কদের স্বাস্থ্যজনিত রোগব্যধির উপর (জেরিয়াট্রিক ডিজ়িজ়) মনোনিবেশ করা যাক, বিশেষ করে পরিপাকজনিত এবং সংবহন তন্ত্রের সঙ্গে যেগুলি সম্পর্কিত এবং যা বয়স্কদের প্রায়ই আক্রান্ত করে । পাশাপাশি চলুন দেখে নেওয়া যাক, হাসপাতালের শয্যায় আটকে পড়ে না থেকে কীভাবে জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ করার পরামর্শ আয়ুর্বেদ দেয় ।

Ayurveda Be Helpful During Old Age
বৃদ্ধ বয়সে আয়ুর্বেদের সাহায্য
author img

By

Published : Mar 5, 2021, 2:28 PM IST

বৃদ্ধাবস্থা সার্বিকভাবে অভিজ্ঞতার উপরই দাঁড়িয়ে থাকে । তা সে জীবন হোক বা টাকাপয়সা কিংবা স্বাস্থ্যজনিত । যদি অবস্থায় আপনি সুস্বাস্থে্যর অধিকারী থেকে থাকেন, তাহলে বয়ঃকালে আপনার জীবন সুন্দর হতে বাধ্য। আমাদের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. রঙ্গনায়াকুলু বলেন, সূর্যালোকে জীবন কাটান আর আনন্দে মৃতু্যবরণ করুন । কীভাবে বৃদ্ধাবস্থাতেও সুস্বাস্থে্যর অধিকারী থাকা যায়, তা নিয়েই কিছু টিপস দিয়েছেন তিনি ।

আয়ুর্বেদে শৈশবকে জীবনের প্রথম ধাপ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে, যা জন্ম থেকে শুরু করে স্থায়ী হয় 30 বছর বয়স পর্যন্ত । 30 বছর সক্রিয়ভাবে কাটানোর পর তার থেকে 60 বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে মাঝবয়সিদের জন্য বলে গণ্য করা হয়, যা হল দ্বিতীয় ধাপ । বৃদ্ধাবস্থা 60 বছর থেকে শুরু হয়ে একশো বছর পর্যন্ত কিংবা মৃতু্য পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । আয়ুর্বেদের আরও একটি স্কুলের মতে আবার শৈশবকে জন্ম থেকে শুরু করে 16 বছর পর্যন্ত স্থায়ী বলে মানা হয় । এখানে মাঝবয়স তথা মিডল এজ হল 16 থেকে 70 বছর আর বৃদ্ধাবস্থা শুরু হয় 70 বছর বয়স থেকে ।

আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে, শৈশবে ‘কাফা’ ধাতের আধিক্য থাকে, মাঝবয়সে ‘পিত্ত’ ধাতের প্রবণতা বেশি হয় আর বৃদ্ধবয়সে বেশি দেখা যায় ‘ভাতা’ ধাত । আর সেই মতো, রোগ-ব্যধি শরীরে বাসা বাঁধে ।

সংজ্ঞাবহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিরও উপরও এইরূপ সংজ্ঞাবহ ধারণা অনুযায়ীই প্রভাব এসে পড়ে ।

আসুন, বয়স্কদের স্বাস্থ্যজনিত রোগব্যধির উপর (জেরিয়াট্রিক ডিজ়িজ়) মনোনিবেশ করা যাক, বিশেষ করে পরিপাকজনিত এবং সংবহন তন্ত্রের সঙ্গে যেগুলি সম্পর্কিত এবং যা বয়স্কদের প্রায়ই আক্রান্ত করে । পাশাপাশি চলুন দেখে নেওয়া যাক, হাসপাতালের শয্যায় আটকে পড়ে না থেকে কীভাবে জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ করার পরামর্শ আয়ুর্বেদ দেয় ।

খাবারদাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, হজম দেরিতে হওয়া, খিদে কমে আসা, পেটে সারাক্ষণ কিছু যেন জ্বলছে এমন অনুভূতি হওয়া (অ্যাসিডিটি), কোষ্ঠ-কাঠিন্য এবং ডায়েরিয়া-এই সবই হল পরিপাকজনিত সমস্যার মধে্য অন্যতম ।

বৃদ্ধ বয়সে হওয়া স্বাস্থে্যর সমস্যার সমাধানে একাধিক উপায় রয়েছে । যেমন–

  • সবসময় গরম এবং তাজা খাবার খান ।
  • মধ্যাহ্নভোজের অন্তত এক ঘণ্টা আগে এক টেবিলচামচ গোরুর দুধ থেকে তৈরি ঘি সেবন করুন ।
  • বেশিরভাগ সময়ই ঈষদুষ্ণ জল পান করুন ।
  • হজমের সমস্যা মেটাতে পাঁচ গ্রাম হিংভস্তকা চূর্ণ, 100 মিলিলিটার ঈষদুষ্ণ জলের সাথে মিশিয়ে খান ।
  • ডায়েরিয়ার নিরসনে পাঁচ গ্রাম দাদিমস্তক চূর্ণ, 100 মিলিলিটার বাটার মিল্কের সঙ্গে মিশিয়ে খান ।
  • কোষ্ঠ-কাঠিনে্যর সমস্যা দূর করতে শোওয়ার সময় ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে 10 গ্রাম পঞ্চশর্করা চূর্ণ বা ত্রিফলা চূর্ণ মিশিয়ে খান ।
  • জলের সঙ্গে পাঁচ গ্রাম আমলকি চূর্ণ মিশিয়ে খান অন্তত এক থেকে তিন মাস । এতে ইমিউনিটি বাড়বে ।

কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যার হার সিনিয়র সিটিজেনদের মধে্য দিন দিন বাড়ছে । অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দন (প্যালপিটেশন বা বুক ঢিপঢিপ করা), বুকে ব্যথা, অ্যানিমিয়া, করোনারি অার্টারি ডিজ়িজ় এবং রক্তজালিকায় প্লাকের উপস্থিতি হল অতি সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যজনিত অভিযোগ, যা বয়স্করা করে থাকেন ।

  • এর সমাধানে পাঁচ গ্রাম অর্জুন চূর্ণ ঈষদুষ্ণ দুধের সঙ্গে রোজ খেতে হবে বা অর্জুন রসায়ন বিধি মানতে হবে ।
  • 10 গ্রাম চবন প্রাশ লেহ্য রোজ সকালে খান, অন্তত তিন মাস ।

যদিও কোনও স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দিলে নিচের কিছু পরীক্ষা করাতে কখনওই ভুলবেন না ।

  • হাইপারটেনসিভ না হলেও মাসে অন্তত এক বার রক্তচাপ পরীক্ষা করান ।
  • মলমূত্রের পরীক্ষা, রক্তপরীক্ষা করান ।
  • পাঁচ বছরে অন্তত এক বার সিগময়ডোস্কোপি করান, 10 বছরে একবার কোলোনোস্কোপি করান ।
  • প্রতি ছ’মাসে একবার ইসিজি করান ।

এছাড়াও দৈনন্দিন শরীরচর্চা, যোগাভ্যাস এবং ইতিবাচক অভ্যাস যেমন বই পড়া, শিল্পকলা চর্চা করা, সামাজিক স্তরে যোগাযোগ রাখা জীবনের আয়ু বাড়িয়ে দেয় ।

বৃদ্ধাবস্থা সার্বিকভাবে অভিজ্ঞতার উপরই দাঁড়িয়ে থাকে । তা সে জীবন হোক বা টাকাপয়সা কিংবা স্বাস্থ্যজনিত । যদি অবস্থায় আপনি সুস্বাস্থে্যর অধিকারী থেকে থাকেন, তাহলে বয়ঃকালে আপনার জীবন সুন্দর হতে বাধ্য। আমাদের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. রঙ্গনায়াকুলু বলেন, সূর্যালোকে জীবন কাটান আর আনন্দে মৃতু্যবরণ করুন । কীভাবে বৃদ্ধাবস্থাতেও সুস্বাস্থে্যর অধিকারী থাকা যায়, তা নিয়েই কিছু টিপস দিয়েছেন তিনি ।

আয়ুর্বেদে শৈশবকে জীবনের প্রথম ধাপ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে, যা জন্ম থেকে শুরু করে স্থায়ী হয় 30 বছর বয়স পর্যন্ত । 30 বছর সক্রিয়ভাবে কাটানোর পর তার থেকে 60 বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে মাঝবয়সিদের জন্য বলে গণ্য করা হয়, যা হল দ্বিতীয় ধাপ । বৃদ্ধাবস্থা 60 বছর থেকে শুরু হয়ে একশো বছর পর্যন্ত কিংবা মৃতু্য পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । আয়ুর্বেদের আরও একটি স্কুলের মতে আবার শৈশবকে জন্ম থেকে শুরু করে 16 বছর পর্যন্ত স্থায়ী বলে মানা হয় । এখানে মাঝবয়স তথা মিডল এজ হল 16 থেকে 70 বছর আর বৃদ্ধাবস্থা শুরু হয় 70 বছর বয়স থেকে ।

আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে, শৈশবে ‘কাফা’ ধাতের আধিক্য থাকে, মাঝবয়সে ‘পিত্ত’ ধাতের প্রবণতা বেশি হয় আর বৃদ্ধবয়সে বেশি দেখা যায় ‘ভাতা’ ধাত । আর সেই মতো, রোগ-ব্যধি শরীরে বাসা বাঁধে ।

সংজ্ঞাবহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিরও উপরও এইরূপ সংজ্ঞাবহ ধারণা অনুযায়ীই প্রভাব এসে পড়ে ।

আসুন, বয়স্কদের স্বাস্থ্যজনিত রোগব্যধির উপর (জেরিয়াট্রিক ডিজ়িজ়) মনোনিবেশ করা যাক, বিশেষ করে পরিপাকজনিত এবং সংবহন তন্ত্রের সঙ্গে যেগুলি সম্পর্কিত এবং যা বয়স্কদের প্রায়ই আক্রান্ত করে । পাশাপাশি চলুন দেখে নেওয়া যাক, হাসপাতালের শয্যায় আটকে পড়ে না থেকে কীভাবে জীবনকে পুরোপুরি উপভোগ করার পরামর্শ আয়ুর্বেদ দেয় ।

খাবারদাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, হজম দেরিতে হওয়া, খিদে কমে আসা, পেটে সারাক্ষণ কিছু যেন জ্বলছে এমন অনুভূতি হওয়া (অ্যাসিডিটি), কোষ্ঠ-কাঠিন্য এবং ডায়েরিয়া-এই সবই হল পরিপাকজনিত সমস্যার মধে্য অন্যতম ।

বৃদ্ধ বয়সে হওয়া স্বাস্থে্যর সমস্যার সমাধানে একাধিক উপায় রয়েছে । যেমন–

  • সবসময় গরম এবং তাজা খাবার খান ।
  • মধ্যাহ্নভোজের অন্তত এক ঘণ্টা আগে এক টেবিলচামচ গোরুর দুধ থেকে তৈরি ঘি সেবন করুন ।
  • বেশিরভাগ সময়ই ঈষদুষ্ণ জল পান করুন ।
  • হজমের সমস্যা মেটাতে পাঁচ গ্রাম হিংভস্তকা চূর্ণ, 100 মিলিলিটার ঈষদুষ্ণ জলের সাথে মিশিয়ে খান ।
  • ডায়েরিয়ার নিরসনে পাঁচ গ্রাম দাদিমস্তক চূর্ণ, 100 মিলিলিটার বাটার মিল্কের সঙ্গে মিশিয়ে খান ।
  • কোষ্ঠ-কাঠিনে্যর সমস্যা দূর করতে শোওয়ার সময় ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে 10 গ্রাম পঞ্চশর্করা চূর্ণ বা ত্রিফলা চূর্ণ মিশিয়ে খান ।
  • জলের সঙ্গে পাঁচ গ্রাম আমলকি চূর্ণ মিশিয়ে খান অন্তত এক থেকে তিন মাস । এতে ইমিউনিটি বাড়বে ।

কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যার হার সিনিয়র সিটিজেনদের মধে্য দিন দিন বাড়ছে । অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দন (প্যালপিটেশন বা বুক ঢিপঢিপ করা), বুকে ব্যথা, অ্যানিমিয়া, করোনারি অার্টারি ডিজ়িজ় এবং রক্তজালিকায় প্লাকের উপস্থিতি হল অতি সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যজনিত অভিযোগ, যা বয়স্করা করে থাকেন ।

  • এর সমাধানে পাঁচ গ্রাম অর্জুন চূর্ণ ঈষদুষ্ণ দুধের সঙ্গে রোজ খেতে হবে বা অর্জুন রসায়ন বিধি মানতে হবে ।
  • 10 গ্রাম চবন প্রাশ লেহ্য রোজ সকালে খান, অন্তত তিন মাস ।

যদিও কোনও স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দিলে নিচের কিছু পরীক্ষা করাতে কখনওই ভুলবেন না ।

  • হাইপারটেনসিভ না হলেও মাসে অন্তত এক বার রক্তচাপ পরীক্ষা করান ।
  • মলমূত্রের পরীক্ষা, রক্তপরীক্ষা করান ।
  • পাঁচ বছরে অন্তত এক বার সিগময়ডোস্কোপি করান, 10 বছরে একবার কোলোনোস্কোপি করান ।
  • প্রতি ছ’মাসে একবার ইসিজি করান ।

এছাড়াও দৈনন্দিন শরীরচর্চা, যোগাভ্যাস এবং ইতিবাচক অভ্যাস যেমন বই পড়া, শিল্পকলা চর্চা করা, সামাজিক স্তরে যোগাযোগ রাখা জীবনের আয়ু বাড়িয়ে দেয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.