হায়দরাবাদ : গবেষণায় দেখা গিয়েছে সার্স কোভ-2 শুধু ফুসফুস-সহ অন্যান্য় অঙ্গের উপর প্রভাব ফেলে তাই নয়, একইসঙ্গে অগ্ন্যাশয়ের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে ৷ করোনা সংক্রমণের পর বিটা কোষে ইনসুলিন সেক্রেটারি গ্রানুলের সংখ্যা হ্রাস এবং গ্লুকোজ-স্টিমুলেটেড ইনসুলিনের নিঃসরণের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে দেখা গিয়েছে ৷ এমনকি কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎই বেড়ে গিয়েছিল যাঁদের ডায়াবেটিসের কোনও পূর্ব ইতিহাস ছিল না (COVID Increases Chance of Diabetes) ৷
প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি সিগন্যালিং সাবট্যান্সগুলিরও প্রচুর নিঃসরণের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই কোভিড ৷ শুধু তাই নয় কোভিড আক্রান্ত হওয়ার কয়েকমাস পর ইমিউন সিস্টেমের সক্রিয়তা চলতে পারে, যা ইনসুলিনের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করতে পারে ৷ কোভিড স্থায়ীভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় না কি লক্ষণগুলি ক্ষণস্থায়ী তা এখনই বলা সম্ভব নয় ৷ জার্মান ডায়াবেটিস সেন্টার, জার্মান সেন্টার ফর ডায়াবেটিস রিসার্চ এবং IQVIA-র গবেষকরা এবিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন ৷ তাঁদের এই গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন প্রায় 1,171 জন চিকিৎসক ৷
গবেষণার প্রধান লেখক উলফগ্যাং রাথম্যান জানিয়েছিলেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল সার্স-কোভ-2 সংক্রমণের পরে ডায়াবেটিসের বিভিন্ন ঘটনাগুলি চিহ্নিত করে তা নিয়ে অনুসন্ধান চালানো ৷ গবেষকরা প্রায় 35,865 জন করোনা আক্রান্ত রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন ৷ এখানে গবেষকরা উপরের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ (AURI) রয়েছে এমন লোকেদের নির্বাচন করেছিলেন ৷ এরপর লিঙ্গ, বয়স, কোমর্বিবিডিটি প্রভৃতি দেখে তাঁদের দুটি দলে ভাগ করা হয় ৷
আরও পড়ুন : কীভাবে কাটাবেন পরীক্ষার চাপ ? রইল কিছু টিপস
রথম্যান বলেছেন, "আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে যে কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে AURI-তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তুলনায় টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেশি ৷ AURI-এর ক্ষেত্রে প্রতি 1000 জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন 12.3 শতাংশ ৷ তুলনায় করোনার সংক্রমণে ডায়াবেটিসের ঘটনা ছিল প্রতি 1000 জনে 15.8 শতাংশ ।" তিনি আরও জানান, এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে উপরের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রয়েছে এমন রোগীদের তুলনায় কোভিডে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় 28 শতাংশ বেশি ৷ যদিও মৃদু করোনায় আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকের জন্য টাইপ-2 ডায়াবেটিসের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷ তবে বারবার প্রস্রাব, ক্লান্তি, প্রচণ্ড তৃষ্ণা এধরনের কোনও লক্ষণ দেখলে অবশ্য়ই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন ৷