হায়দরাবাদ, 3 সেপ্টেম্বর: কথাতেই বলে রাখে হরি মারে কে! কারোর কাছে হরি, কারোর কাছে গোপাল আবার কারোর কাছে শ্রী কৃষ্ণ তিনি ৷ অষ্টশতনামে যিনি ভূ-ভারতে পরিচিত তাঁর জন্মোৎসব 6 সেপ্টেম্বর ৷ অর্থাৎ জন্মাষ্টমী পড়েছে এই দিন ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষ্ণভক্তরা মেতে ওঠেন শ্রী কৃষ্ণের জন্মোৎসব পালনে ৷ আপনিও কী সাক্ষী থাকতে চান বিশেষ এই মুহূর্তের তাহলে প্ল্যান করে ফেলুন ৷ দেশের এই সাত জায়গায় শ্রী কৃষ্ণের পুজো দেখতে আজো লাখো লাখো ভক্তরা ভিড় করেন ৷
মথুরা- জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সেজে ওঠে কৃষ্ণভূমি মথুরা ৷ উত্তরপ্রদেশের বিখ্যাত এই শহরে বিভিন্ন মন্দিরে সকালে কৃষ্ণ স্নান থেকে পুজোর সূচণা হয় ৷ তারপর একে একে রীতি মনে দেওয়া হয় নানা ধরনের ভোগ ৷ পাশাপাশি জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয় রাসলীলারও ৷ যেখানে ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা রাধা-কৃষ্ণ সেজে কৃষ্ণের জন্মকাহিনী ফুটিয়ে তোলেন মঞ্চে৷ এই রাসলীলা দেখতে দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে লোকজন ভিড় করেন মথুরায় ৷
বৃন্দাবন- মথুরার কাছে বৃন্দাবনেও জন্মাষ্টমী খুব ধুমধাম করে পালন করা হয় ৷ মনে করা হয়, শ্রী কৃষ্ণের ছোটবেলা কেটেছে এই বৃন্দাবনেই ৷ আসলে বৃন্দাবন সকলের কাছে বেশি পরিচিত রাধা-কৃষ্ণের রাসলীলার জন্য ৷ জন্মাষ্টমীর 10 দিন আগে থেকে এখানে উরসব উদযাপন শুরু হয়ে যায় ৷ ফুল ও আলোর মালায় সেজে ওঠে বিভিন্ন জায়গা ৷ গোবর্ধন পাহাড়, বাঁকে বিহারি মন্দির হতে পারে সেরা গন্তব্যস্থল।
গোকুল- মথুরা থেকে 15 কিলোমিটার দূরে গোকুলে জন্মাষ্টমী উদযাপিত হয় গোকুলাষ্টমী নামে ৷ যেদিন দেশজুড়ে শ্রী কৃষ্ণের জন্ম উৎসব পালিত হয়, এখানে সেদিন তা হয় না ৷ বরং কৃষ্ণের জন্মোৎসব এখানে পালিত হয় একদিন পরে ৷ মন্ত্রোচ্চারণ থেকে শুরু করে ভজন, ভোগ নিবেদন থেকে পুজো সবকিছুই ভক্তদের মনে ভক্তির আলোড়ন তোলে ৷ এখানে আসলে মনের ভিতর অদ্ভুত শান্তি খুঁজে পাওয়া যায় ৷
দ্বারকা- কৃষ্ণ-ভূমি হিসেবে সবচেয়ে পুরনো শহর দ্বারকা ৷ গুজরাতের গোমতী নদীর তীরে দ্বারকা শহর অবস্থিত ৷ পুরাণ মতে, এখানে শ্রী কৃষ্ণ নিজের রাজত্ব গড়ে তুলেছিলেন ৷ মথুরা ছেড়ে আসার পর এখানেই নাকি, কৃষ্ণ পাঁচ হাজার বছর বসবাস করেছেন ৷ এখানে একমাস ধরে জন্মাষ্টমী পালন করা হয় ৷ পাশাপাশি গরবা ও রাসলীলাতেও মেতে ওঠেন স্থানীয়রা ৷
মায়াপুর- পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে মায়াপুরের ইসকনের মন্দিরেও এই সময় বিশেষ পুজো হয় ৷ মন্দির চত্বর সেজে ওঠে ফুল ও আলোক সজ্জায় ৷ সারাদিন শ্রী হরির নাম কীর্তনে মুখরিত হয় মায়াপুরের আকাশ বাতাস ৷ মঙ্গল আরতি দিয়ে শুরু হয় দিন ৷ তারপর সারাদিন চলতে থাকে শ্রীম্দভগবত গীতা পাঠ,দর্শন আরতি, কীর্তন মেলা, রাজভোগ আরতি, সন্ধ্যা আরতি, মহাভিষেক ও মহাআরতি ৷
মুম্বই- মুম্বই, নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তারার ঝলকানি, পার্টি আরও কত কী! কিন্তু মুম্বইয়েও জন্মাষ্টমী ধূমধাম করে পালিত হয় ৷ এখানে 'দহি হান্ডি' এলাকা বিখ্যাত ৷ কারণ এখানে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হাড়ি ভাঙা উৎসব পালিত হয় ৷ এই মুহূর্ত আপনার সারাজীবন মনে থাকবে ৷
আরও পড়ুন: এই জন্মাষ্টমীতে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন কৃষ্ণের প্রিয় কিছু খাবার
উদপী- কর্ণাটকের বিখ্যাত মন্দির শ্রীকৃষ্ণ মঠ ৷ একসময় এই শহর জলের তলায় ডুবে গিয়েছিল ৷ তারপর তৈরি হয় এই মঠ ৷ এখানকার মন্দিরের আর্কিটেকচর মুগ্ধ করবে আপনাকে ৷ মন্দির ঘিরে রয়েছে আটটি মঠ ৷ এখানে শ্রী কৃষ্ণ আসিত রয়েছেন সোনার রথে ৷ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বিশেষ ধরনের প্রসাদ যা 'গুণ্ডা' বা 'কোটিগে' নামে পরিচিত ৷