হায়দরাবাদ, 16 এপ্রিল: গ্রীষ্মের প্রখর রোদ যেন শরীরকে নিংড়ে শেষ করে দেয়। গরম আবহাওয়া ত্বক থেকে শুষে নেয় যাবতীয় আর্দ্রতা। স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায় চোখ-মুখ। সারাক্ষণ রোদে থাকার ফলে পোড়া দাগ, চামড়ায় ট্যান পড়াও এ মরশুমে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এমনকী এই সময় ফোসকাও পড়ে স্কিনে। গরমের দিনগুলোতে এই সমস্যা লাগাতার চলতে থাকে ৷ অনেক মাথা খাটালেও সমাধান মেলে না। তবে চিন্তার কিছু নেই, ত্বকের এই ট্যান থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা কিছু উপায় বাতলে দিচ্ছেন, যা আপনার হাতের মুঠোতেই রয়েছে ৷
এই উপকরণগুলি আপনার ত্বককে সহজেই ঘরে বসে 'সান ট্যান' দূর করতে পারে। তাই আয়ুর্বেদিক স্কিনকেয়ার এবং বিউটি প্রোডাক্ট ব্র্যান্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা শ্রীধা সিংয়ের দেওয়া এই আয়ুর্বেদিক 10টি উপায় প্রচেষ্টা করে দেখতেই পারেন ৷
আরও পড়ুন: রোজের খাবারে এক চামচের বেশি নুন ঘটাতে পারে চরম বিপর্যয় !
1. আয়ুর্বেদিক বডি মাস্ক: এই আয়ুর্বেদিক বডি মাস্কের জন্য প্রয়োজন দুই চা-চামচ ত্রিফলা গুঁড়ো, অল্প একটু হলুদ, এক চা-চামচ বেসন এবং দুই থেকে তিন ফোঁটা গোলাপ জল। এই মিশ্রণটি ত্বকে যেখানে ট্যান পড়েছে সেখানে লাগিয়ে 15 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন ৷
2. কফি বডি স্ক্রাব: এর জন্য এক টেবিল চামচ ফিল্টার কফিতে এক থেকে দুই চা-চামচ বাদাম বা নারকেল তেল, আধ চামচ চিনি এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। উপাদানগুলি ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার ট্যান পড়া জায়গায় হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। তার কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন ৷ প্রতি সপ্তাহে দু'বার এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল আপনি অবশ্যই পাবেন ৷
3. পেঁপের মাস্ক: ত্বকের যত্নে পেঁপে অন্যতম সেরা উপাদান। পেঁপের মধ্যে রয়েছে এনজাইম; যা ত্বককে সাদা ও ট্যান কমাতে সাহায্য করে। উপরন্তু, এটি ত্বকের আলসারের চিকিৎসাতেও সাহায্য করে ৷ তাই ঝটপট একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ মধু এবং আধপাকা পেঁপে নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপরে, এটি ট্যান পড়া জায়গায় হালকাভাবে প্রয়োগ করুন এবং দশ মিনিটের জন্য ম্যাসাজ করতে থাকুন। তারপর 20 মিনিটের জন্য রেখে দিন ৷ ঠান্ডা জলে ধোয়ার পর হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগান। দ্রুত ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত দু'বার এই মাস্কটি ব্যবহার করুন।
4. নালপামারাডি থাইলাম: আয়ুর্বেদিক "নালপামারাডি থাইলাম" নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক হালকা এবং উজ্জ্বল হয় ৷
5. হলুদ ও বেসনের প্যাক: দুই চা-চামচ বেসন, এক চা-চামচ দুধ বা দই এবং এক চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে একটি ঘন প্যাক তৈরি করুন। এবার পেস্টটি আপনার ট্যান পড়া জায়গায় মিনিট তিরিশের জন্য লাগিয়ে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
6. কলা এবং মধুর মুখোশ: বেশকিছু পাকা কলা, এক চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা দুধ এবং মালাই দিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে তা ত্বকে হালকা করে লাগিয়ে মিনিট পনেরো পরে ধুয়ে ফেলুন। এর ফল আপনি নিজের চোখের দেখতে পাবেন ৷
7. নারকেল দুধ: এই ডি-ট্যানারটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং সহজেই উপলব্ধ। নারকেলের দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে, যা ত্বকের ট্যান উল্লেখযোগ্যভাবে দূর করতে সাহায্য করে। উপরন্তু, এটি খুব ময়শ্চারাইজিং এবং পুষ্টিকর, যা আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। তাজা জৈব নারকেল দুধে একটি তুলার প্যাড ভিজিয়ে নিন। এটি মুখ এবং ঘাড়ে সমানভাবে প্রয়োগ করুন এবং এটি 15 মিনিটের জন্য ত্বকে রেখে দিন। শেষে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
8. মুসুর ডাল, অ্যালোভেরা এবং টমেটো প্যাক: অ্যালোভেরা পিউরি, টমেটো পেস্ট এবং মুসুর ডাল নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এরপর শরীরের যে জায়গায় ট্যান পড়েছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন 30 মিনিটের জন্য ৷ ভালো করে শুকিয়ে নেওয়ার পর ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে অন্তত দু'বার এই মাস্কটি প্রয়োগ করুন।
9. চালের গুঁড়োর বডি স্ক্রাব: 1 থেকে 2 টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো নিন আর তা কাঁচা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে মুখে, ঘাড়ে এবং শরীরের অন্যান্য ট্যানিং এলাকাগুলিতে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। 20 মিনিট রেখে দেওয়ার পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ট্যান থেকে মুক্তি পেতে সপ্তাহে এটিও দুই থেকে তিনবার তৈরি করে পেস্টটি লাগান ৷
10. সানস্ক্রিন: আপনার ত্বককে কেয়ার করতে, ট্যানকে দূর করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে ৷ যেমন মাসদু'য়েক ৷ তাই ত্বক থেকে ট্যান পড়া দূর করতে রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন লাগান।
(পরামর্শগুলি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে ৷ আপনার কোনও জিজ্ঞাসা থাকলে চিকিৎসকের পরারর্শ নিন)