রায়গঞ্জ, 19 মার্চ: একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতি প্রমাণিত হল রাজ্যের এক মন্ত্রীর স্ত্রী'র বিরুদ্ধে ৷ ফলত 4 লক্ষ 17 হাজার টাকা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের (Satyajit Burman) স্ত্রী জ্যোৎস্না রানি বর্মনকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মন জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ তিনি এখনও হাতে পাননি। নির্দেশ দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে (100 Days Work Scam)।
উল্লেখ্য, এমজিএনআরইজিএস বা (একশো দিনের) প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার এই তদন্ত করতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকে গিয়েছিলেন তাঁরা। একশো দিনের প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছে খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের জগদীশপুর অঞ্চল সভাপতি মেহেতাব আলি। মেহেতাব আলির অভিযোগ, জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে 21টি পুকুর খনন বাবদ প্রায় 22 লক্ষ টাকা সরকারি অর্থ খরচ দেখানো হলেও বাস্তবে পুকুর না-কেটেই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এই আর্থিক তছরূপের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের স্ত্রী জ্যোৎস্না রানি বর্মন। মেহেতাব আলি লিখিতভাবে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। প্রশাসন সেই অভিযোগের গুরুত্ব না-দেওয়ায় তাঁরা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। হাইকোর্ট উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন খাড়ি সরিয়াবাদ গ্রামের তিনটি পুকুর খননের তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন।
আরও পড়ুন: 100 দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ফোন পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে, দিলেন ইতিবাচক ইঙ্গিত
আদালত সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত প্রধানকে 4 লক্ষ 17 হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই নির্দেশেও খুশি নন অভিযোগকারী মেহেতাব আলি। তাঁর দাবি, তিনটি নয় একুশটি পুকুরের তদন্ত রিপোর্ট আদালতের কাছে পেশ করতে হবে। দুর্নীতির অভিযোগ, প্রমাণিত হওয়ায় মন্ত্রীর স্ত্রী জ্যোৎস্ন রানি বর্মনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। জ্যোৎস্না রানির স্বামী সত্যজিৎ বর্মন জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ তিনি হাতে পাননি। নির্দেশ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তবে জগদীশপুর অঞ্চলটি বন্যাপ্রবণ এলাকা। 2018 সালে পুকুর খনন হয়েছিল।পুকুর মাপা হল 2023-এ। বন্যার সময় পলি জমে পুকুরের নাব্যতা কমিয়ে দেয়। দীর্ঘ কয়েক বছর পর পুকুরের মাপ হওয়ায় সঠিক তথ্য না-পাওয়ায় আদালত এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে সত্যজিৎবাবু জানিয়েছেন।