রায়গঞ্জ, 12 জানুয়ারি : একটা সেতু হলে তিরিশ কিলোমিটার রাস্তা কমে গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র আট কিলোমিটারে, উপকৃত হবেন 300 গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ । এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট আসে ভোট যায় নদীর উপর সেতু তৈরি নিয়ে শুধুই রাজনীতি হয় । তাদের দুর্ভোগের শেষ হয় না । তাই এবার সেতু না হলে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বয়কট করার চিন্তা ভাবনা শুরু করছেন রায়গঞ্জের শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের 5 নম্বর শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খলসিঘাটে কুলিক নদীর উপর সেতু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা । উত্তর দিনাজপুর জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পূর্নেন্দু দে জানিয়েছেন, খলসিঘাট এলাকায় কুলিক নদীর উপর সেতু নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। সেতু নির্মানের জন্য সয়েল টেস্ট করাও হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু কলকাতায় মাঝেরহাট সেতু ভেঙে যাওয়ার পর 50 মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু সরাসরি রাজ্য সরকার নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ফলে জেলাপরিষদ এই সেতু নির্মানের পরিকল্পনা নিয়েও তা করতে পারেনি। তবে জেলাপরিষদ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে ।
রায়গঞ্জ ব্লকের ৫ নম্বর শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খলসিঘাটের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে কুলিক নদী । এই কুলিক নদীর দুইপাড়ে রয়েছে শেরপুর, গোবিন্দপুর, লাইনপাড়া, ডাঙ্গিপাড়া, বরমপুর, খোকসা, গামাডাঙ্গি, বিন্দোল, খলসি, মেহেন্দিগ্রাম সহ প্রায় তিনশটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ । প্রতিদিন প্রায় 50 হাজার মানুষ কুলিক নদী পাড়াপার করেন । জেলা সদর রায়গঞ্জে যাওয়া থেকে বিডিও অফিস, রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ বিভিন্ন কাজে শহরে আসতে গেলে এই নদী পার হতে হয় ।
আরও পড়ুন কলকাতায় কোভিশিল্ড
বর্ষার সময় নদীতে জল বেড়ে যায় , সেই সময় পার হতে একমাত্র ভরসা নৌকো আর বছরের অন্যান্য দিনে ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো । এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ , মাত্র 8 কিলোমিটার দূরের জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরে যেতে সেতু না থাকায় ঘুরপথে প্রায় 30 কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয় ।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ সব রাজনৈতিক দলই এই খলসিঘাট সেতু নিয়ে রাজনীতি করে চলেছে । প্রতিবার পঞ্চায়েত, বিধানসভা কিংবা লোকসভা ভোট আসে, ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় ভোট পার হলেই আর সেতুর কথা কারও মনে থাকে না । বছরের পর বছর বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন তাঁরা । এবার তাঁরা আর চুপ করে বসে থাকবেন না । সেতু না হলে এবারের বিধানসভা ভোট বয়কট করার চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা ।
আরও পড়ুন কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ
এদিকে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেছেন , এই ব্রিজটা না করার কারণ হল , প্রতি বছর নির্বাচন আসবে আর গায়ের জোর দেখিয়ে যেমন গাধাকে কাজ করিয়ে নেওয়া হয় সেমনি গায়ের জোর দেখিয়ে সাধার মানুষের থেকে ভোট নেওয়া । ব্রিজটা করব করব কিন্তু করা হচ্ছে না । গ্রামবাসীরা যদি ভোট বয়কটের সিদ্ধান নে তাহলে তা অন্যায্য নয় । গ্রামবাসীদের বলব বিজেপির সরকার আসবে , আর ওই খালাসিঘাট ব্রিজ বিজেপি করবে"
এদিকে তৃমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলার আহ্বায়ক মাশারফ হোসেন বলেন , আমাদের সরকার আসার পর পথসাথীর মত ভাবল ভাল প্রকল্প শুরু হয়েছে । রাস্তা ঘাট যেগুলো খারাপ সেগুলোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে । সরকার মানুষের যা দরকার বড় বড় রাস্তা , ব্রিজ দরকার তার সার্ভে করেছে । এই সার্ভেতে যদি থাকে তাহলে হবে না হলে আমরা রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাশনের কাছে আবেদন করব যাতে ভোটের আগে কাজ শুরু হয়ে যায় ।