রায়গঞ্জ, 9 এপ্রিল: কেউ খুনের মামলায়, কেউ আবার ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত । আবার কেউ জড়িত নেহাতই সামান্য মারপিটের ঘটনার সঙ্গে । লকডাউনের ফলে জেলে থাকতে হচ্ছে এদের সকলকেই । এই সমস্ত শুনানি শেষ করতে রায়গঞ্জ জেলা দায়রা আদালত খোলা থাকল রাত একটা পর্যন্ত । যদিও অভিযোগকারীদের আদালত চত্বরে ঢোকাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন । অপ্রয়োজনে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি আদালত চত্বরে । স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেই আদালত চত্বরে ঢোকার অনুমতি ছিল তাদের ।
রায়গঞ্জ আদালতে সকাল 11টা থেকে শুরু করে রাত একটা পর্যন্ত চলে শুনানি । আইনজীবীদের একাংশের মতে, 12- 14 বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি । কোরোনা সংক্রমণ রোধে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে । স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন আদালত বর্তমানে জনশূন্য রয়েছে । কোথাও কোনও মামলার শুনানি বর্তমানে হচ্ছে না । এমনকী হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল আদালত চলছে যথেষ্ট সতর্কভাবে । ব্যতিক্রমী নয় রায়গঞ্জ জেলা আদালতও । ইতিমধ্যেই বন্ধ করা হয়েছে আদালতের সবকটি কক্ষ । কোনওভাবেই স্পেশাল কোর্টে আইনজীবী এবং অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া আর কাউকেই ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না জেলা আদালত । এই সময়ও জামিনের অপেক্ষা করছে অনেকে। তাই গতকাল সকাল থেকে রায়গঞ্জ জেলা আদালত খোলা হয় । আদালত চত্বরে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যদের ভিড় হয় ।
রাত একটা পর্যন্ত আদালত চত্বরে বসে থাকতে দেখা যায় একাধিকজনকে । গতকাল সারাদিনে 100-রও বেশি মামলার শুনানি হয়েছে । এই বিষয়ে রায়গঞ্জ আদালতের আইনজীবী দীপক দাস বলেন, "সকাল থেকে রাত একটা পর্যন্ত প্রায় 100-রও বেশি মামলার শুনানি হল । সারাদিন ধরে শুনানি চলেছে । এর আগে শেষ কবে এত রাত পর্যন্ত আদালত চলেছিল তা মনে করতে পারছি না । যারা বিচারের অপেক্ষায় জেল খাটছে তাদের জন্য বিশেষ আদালত খোলা হয়েছিল । তবে আমরা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি । বিচারের আশায় যারা এসেছিল তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল ।" এক বিচারপ্রার্থী স্ত্রী ঝরণা মজুমদার জানিয়েছেন, সকাল 10টায় তিনি আদালতে আসেন । অপেক্ষা করতে হয় প্রায় রাত একটা পর্যন্ত । লকডাউনের আগে সামান্য ঝামেলায় ফেঁসে গিয়ে জেলে আছে তাঁর স্বামী । গতকাল মামলার শুনানি হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনজীবী ।