একটা সময় পুজোর চারটে দিন এই বাড়িটায় VVIP-রা আসতেন ৷ দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনির দাশমুন্সি বাড়িতে যেন চাঁদের হাট বসত । পুজো আসছে । কিন্তু এখন সেই বাড়ি নিস্তব্ধ । প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ি আজ অনেক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে । বন্ধ হয়ে গেছে দাশমুন্সি বাড়ির দুর্গোৎসব । পাড়া প্রতিবেশী থেকে দলের কর্মী সকলেই বেদনাহত । পুজোর কটা দিন তাঁরা পুরানো স্মৃতি আঁকড়ে হতাশ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন শ্রীকলোনির দাশমুন্সি ভিলার দিকে।
বাঙালি যখন মেতে উঠেছে শারদীয়া উৎসবের আনন্দে তখন উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনি পাড়ায় মলিন স্মৃতি আর বিষাদের ছায়া । এই শ্রীকলোনি পাড়া পুজোর কটা দিন হয়ে উঠত VVIP এলাকা । শুধু শ্রীকলোনি পাড়াই নয়, সমগ্র কালিয়াগঞ্জবাসীর কাছে শ্রেষ্ঠ দুর্গোৎসব ছিল দাসমুন্সী বাড়ির দুর্গাপুজো । প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ির দুর্গাপুজো মানেই এলাকাবাসীর কাছে মহোৎসব । দুস্থ থেকে সাধারন মানুষ, এলাকার ছোটো বড় নেতা নেত্রী থেকে VVIP সকলের প্রাণের পুজো প্রিয়দার বাড়ির দুর্গাপুজো । আজ সবই অতীত ।
2017 সাল 20 নভেম্বরে প্রয়াত হন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি । স্ত্রী প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি ছেলে মিছিলের পড়াশুনা ও তাঁর নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দিল্লিতেই ব্যস্ত থাকেন । এখন আর পুজো হয় না দাশমুন্সি বাড়িতে । তাই বিষাদের ছায়া শ্রীকলোনির বাতাসকে ভারী করে তুলেছে । পুজোর কটা দিন গমগম করা দাশমুন্সি বাড়ি আজ যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা । খাঁ খাঁ করছে দাশমুন্সি ভিলা । প্রিয়দা নেই ৷ তাঁর বসার চেয়ারে পড়েছে ধুলোর আস্তরণ । একজন কেয়ারটেকার বাড়ির দেখভাল করেন ৷
দেবী দশভুজার পুরানো কাঠামো নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশাল ঠাকুর দালান । পুজোর দিনে আলোয় ভরা পুজো মণ্ডপে দেবীর সামনে ঢাক বাজানো থেকে শুরু করে স্ত্রী দীপাকে সাথে নিয়ে ধুনুচি হাতে আরতিও করতে দেখা গেছে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিকে। নিয়ম করে প্রতি বছর মহালয়ার এলাকার দুস্থদের নিজে হাতে প্রিয়দা বস্ত্র বিতরণ করতেন । নবমীর দুপুরে দীপা দাশমুন্সি নিজে হাতে প্রসাদ বিতরণ করতেন ৷ সবই আজ অতীতের স্মৃতি ।
প্রয়াত নেতার একদা একনিষ্ঠ কর্মী কানাই জয়সোয়াল বলেন, প্রিয়বাবুর বাড়ির দুর্গাপুজোর বিশাল কর্মকাণ্ডের কথা। হাজার হাজার দুস্থ মানুষকে নতুন বস্ত্র বিতরণ থেকে শুরু করে দাশমুন্সি দম্পতির নিজে হাতে প্রসাদ দেওয়ার কথা । প্রিয়দার বাড়ির পুজো এখন শুধুই স্মৃতি । নেই রাজা, নেই তার রাজ্যপাট । দাশমুন্সি বাড়িতে এখন সারা বছরই দশমীর বিষাদের ছায়া ।