রায়গঞ্জ, 28 সেপ্টেম্বর: পুলিশি নজরদারিতে একের পর এক রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাদকাসক্ত যুবকদের নানা কুকীর্তি সামনে আসছে । মাদক সেবন করার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করতে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তারা । এমনকী টাকা জোগাড় করতে নিজের বন্ধুকে রীতিমতো গুলি চালিয়ে বা ছুরি মেরে আঘাত করার বেশকিছু ঘটনা সামনে এসেছে । মাদকাসক্তদের সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার । তাই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন রিহ্যাব সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করছে রায়গঞ্জ পুলিশ ।
রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, করণদিঘি, ইটাহার থানা এলাকায় একের পরে এক মাদকাসক্ত যুবক-যুবতিদের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । কেউ মাদক সেবন করার জন্য পাচারকারীদের ক্যারিয়ার হিসেবে নিজেকে কাজে লাগাচ্ছে । কেউ বা আবার ছোটোখাটো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে । এমনকী টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা অপরাধমূলক কাজ সামনে আসছে ।
সম্প্রতি রায়গঞ্জ থানার কসবা এবং রাবিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দু'টি পৃথক ঘটনা সামনে এসেছিল । নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য বন্ধুর পায়ে গুলি চালিয়েছিল এক যুবক । অন্যদিকে টাকা জোগাড়ের জন্য বন্ধুকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছিল আর এক বন্ধু । বারবার অভিযান চালিয়েও মাদক সেবন কার্যত বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন রায়গঞ্জ পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা । দাবি, মাদকাসক্ত যুবকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন রিহ্যাব সেন্টার । কিন্তু জেলার সবথেকে কাছাকাছি রিহ্যাব সেন্টার রয়েছে শিলিগুড়িতে । যেখানে যাওয়া-আসার সমস্যা চিকিৎসা করানোর পথে একটি প্রধান বাধা । সেই কারণেই কোরোনা আবহ শুরুর আগে জেলায় একটি পৃথক রিহ্যাব সেন্টার খোলার পরিকল্পনা করেন রায়গঞ্জ পুলিশকর্মী এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা । বর্তমানে কোরোনার কারণে সেই পরিকল্পনা সামান্য পিছিয়ে গেলেও দ্রুত সেন্টার চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সুমিত কুমার । তাঁর দাবি, "চিকিৎসাই একমাত্র পথ । এর মাধ্যমেই মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায় ।"
ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশ সুপার বলেন, "মাদকাসক্তদের রুখতে অনেকদিন ধরেই আমরা অভিযান চালাচ্ছি । নানান জায়গায় অভিযানের ফলে ভালো ফল মিলেছে । কিন্তু মাদকাসক্তদের চিকিৎসা অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন । তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসার জন্য একটি রিহ্যাব সেন্টার প্রয়োজন । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসনিক আধিকারিক এবং আমরা মিলে এখানে একটি নতুন রিহ্যাব সেন্টার খোলার কথা পরিকল্পনা করেছি । দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। বর্তমানে কোরোনার কারণে এই পরিকল্পনা সামান্য পিছিয়ে গেছে । তবে খুব তাড়াতাড়ি এই কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে মনে করছি ।"