রায়গঞ্জ, 4 সেপ্টেম্বর: অতিমারির প্রভাব কাটিয়ে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2022) উন্মাদনা বাঙালির মধ্যে ৷ গত দুটবছরের খরা কাটিয়ে ঠাকুরের বায়নাও পাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা ৷ কিন্তু সেই আনন্দে বাধ সাধছে বৃষ্টি ৷ অতিবৃষ্টির জেরে ঠাকুর তৈরি করতে প্রয়োজনীয় মাটির জোগান পাচ্ছেন না রায়গঞ্জের শিল্পীরা (Raiganj Patuapara Clay Artists Facing Problems) ৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রতিমার চাহিদা বেশি, কিন্তু, মাটির অভাব রয়েছে ৷ ফলে অনেক বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে ভালো মাটি কিনতে হচ্ছে রায়গঞ্জ ও তার সংলগ্ন অঞ্চলের মৃৎশিল্পীদের ৷
করোনা অতিমারির রেষ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে মানুষ ৷ অর্থনীতির দিক থেকে না হলেও, মানসিকভাবে অনেকটাই করোনার আতঙ্ক থেকে মানুষ বেরিয়ে এসেছে এবং চেষ্টা করে যাচ্ছে ৷ আর সেই চেষ্টায় বড় ভূমিকা নিচ্ছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব ৷ 2 বছর পর ফের আগের প্রতিমা শিল্পীদের কাছেও ঠাকুরের বায়না আসছে ৷ কিন্তু, বায়না এলেও সমস্যা পিছু ছাড়ছে না পটুয়াদের ৷ উত্তরবঙ্গে অতিবৃষ্টির কারণে, ভালো মাটি পাচ্ছেন না রায়গঞ্জ ও সংলগ্ন অঞ্চলের শিল্পীরা ৷ ফলে বায়না হওয়া প্রতিমা তৈরি করতে বাইরে থেকে বেশি দামে মাটি কিনতে হচ্ছে তাঁদের ৷ তার উপর দোসর হয়েছে, প্রতিমার সাজসজ্জার সরঞ্জামের চড়া দাম ৷
মূলত, চৈত্র-বৈশাখ মাস থেকেই দুর্গাপুজোর জন্য মাটি সংগ্রহ করতে শুরু করেন রায়গঞ্জের পটুয়া পাড়ার শিল্পীরা ৷ জলাশয় ও বিল থেকে মাটি তোলা হয় ৷ কিন্তু, প্রাক বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় মাটি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি বলে জানাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা ৷ বিশেষ করে সমস্যায় পড়েছেন, ছোট শিল্পীরা ৷ কারণ, তাঁরা ছোটখাটো মূর্তি তৈরির পর শেষ কয়েক মাসে দুর্গাপুজোর বায়না নেন ৷ সেই রকম পুটয়াদের কাছে মাটির জোগান প্রায় নেই বললেই চলে ৷ ফলে বাইরে থেকে 2-3 গুণ বেশি দাম দিয়ে মাটি কিনতে হচ্ছে শিল্পীদের ৷
আরও পড়ুন: রাখিবন্ধন ও রক্তদান শিবিরে অভিনব খুঁটি পুজো বেলেঘাটায়
তার উপর প্রতিমার সাজসজ্জার সরঞ্জামের দামও অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন শিল্পীরা ৷ ফলে যে দরে মূর্তির বায়না হচ্ছে, সেই অর্থে মাটি, রং, সাজ-সরঞ্জাম ও কারিগরদের মজুরি মেটানো দায় হয়ে যাচ্ছে শিল্পীদের পক্ষে ৷ যার পরে লাভ বলে তাঁদের কিছুই থাকছে না ৷ প্রতিমা শিল্পীদের আরও বেশি চিন্তা বাড়িয়েছে অনবরত বৃষ্টি ৷ মাটির অভাবে দেরিতে প্রতিমা তৈরি শুরু করার পর, বৃষ্টির কারণে মাটি শুকিয়ে তাতে রং করার দীর্ঘ প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে ৷ ফলে সময়ে ঠাকুর মণ্ডপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারলেই চিন্তামুক্ত হবেন পটুয়া পাড়ার শিল্পীরা ৷