রায়গঞ্জ, 31 মে: করা যাবে না কোনওরকম জমায়েত ৷ তাই বিয়েবাড়ি থেকে অন্নপ্রাশন, জন্মদিন থেকে বিবাহবার্ষিকী, সব অনুষ্ঠানই বন্ধ ৷ আর সেই কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে ফোটোগ্রাফি ব্যবসা ৷ নতুন কাজ তো নেই উলটে যা অর্ডার ছিল সেসবও বাতিল হয়ে গেছে ৷ ফলে লকডাউনে বাকি ব্যবসার মতোই ফোটোগ্রাফি ব্যবসার সঙ্গে যুক্তরাও চরম সংকটে পড়েছে ৷ হাতে কাজ থাকায় স্ত্রী, সন্তান পরিবার নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেনরায়গঞ্জের ফোটোগ্রাফি ব্যবসায়ীরা ৷
সম্প্রতি পঞ্চম দফার লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার । চলবে আগামী জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত । ফলে যতদিন লকডাউন থাকবে ততদিন সামাজিক অনুষ্ঠান করার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে ৷ ফলে বিপাকে পড়েছেন ফোটোগ্রাফাররা । এই অবস্থায় কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এই সময়টা অন্যান্য বছর ভালোই কাটে ৷ পরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় কাজের অভাব তো হয় না উলটে শ্বাস ফেলারও সময় থাকে না । এবারের চিত্রটা একেবারেই অন্যরকম । শুধুমাত্র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফোটোগ্রাফি করে সংসার চলে যাঁদের, কীভাবে সংসার চলবে তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা ।
।
এমনিতেই লকডাউনে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গিয়েছে । যা অর্ডার এসেছিল সমস্তটাই বাতিল হয়ে গেছে । যারা অগ্রিম টাকা দিয়ে ছিলেন তারা টাকা ফেরত নিয়ে গেছেন । এদিকে ফোটোকে আরও সুন্দর করার জন্য আধুনিক মডেলের বেশ কিছু ক্যামেরা ও ইকুইপমেন্ট কেনা হয়েছে । ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে বিয়ে বা অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে বড়ো স্ক্রিনের মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করার জন্য অত্যাধুনিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে । প্রতিমাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে যা রোজগার হত তা দিয়ে সংসার ও ব্যাঙ্কের লোনে টাকা দেওয়া হত । কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ঋণশোধ করা নিয়েও চিন্তার মধ্যে রয়েছেন তাঁরা।লকডাউন উঠে গেলে আদৌ মানুষ আগের মতো জাঁকজমক করে অনুষ্ঠান করবে কি না সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে ফোটোগ্রাফির সঙ্গে যুক্ত মানুষদের ৷
এই নিয়ে রায়গঞ্জের এক ফোটোগ্রাফার সঞ্জিৎ দাস বলেছেন, "২০ বছর ধরে এই কাজ করে এসেছি । ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে ভিডিয়ো ক্যামেরা ও স্টিল ক্যামেরা কিনেছি । ব্যাঙ্ক থেকে লোনের কিস্তি দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে । এটার উপর আমার সংসার চলে । বহু অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়ে আছি । স্থানীয় কাউন্সিলর এই লকডাউনে কিছু খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন । কিন্তু কত দিন চলবে এভাবে?" সন্তান, সংসার নিয়ে কীভাবে দিন চলবে তা ভাবতেও পারছেন না সঞ্জিৎবাবু ।