রায়গঞ্জ, 29 নভেম্বর: 9 বছর আগে শিলান্যাস হয়েছে সেতুর ৷ 80 শতাংশ কাজও প্রায় শেষ ৷ কিন্তু, তারপরেই হঠাৎ থমকে যায় কাজের গতি ৷ বর্তমানে অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কুলিক নদী (Kulik River)-র উপর তৈরি হওয়া সেতুটি ৷ 2013 সালে শুরু হওয়া সেতুর কাজ বর্তমানে বন্ধ ৷ ফলে সেতুর ধার ঘেঁষে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করছেন গ্রামবাসীরা (Parar Pukur Villagers Demand to Finish Incomplete Flyover in Raiganj) ৷
রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরী পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাড়ারপুকুর গ্রামের উপর দিয়ে গিয়েছে কুলিক নদী ৷ গৌরী, বাহিন ও মাড়াইকুরা এই 3টি পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম রয়েছে নদীর দুই পারে ৷ সেখানকার কয়েক হাজার মানুষকে প্রতিদিন এই নদী পারাপার করতে হয় ৷ পাশাপাশি, সংলগ্ন বিহারের একাংশ মানুষও এই নদী পারাপার করেন বাঁশের সাঁকো দিয়ে ৷ ফলে নদীর উপরে স্থায়ী সেতুর দাবি তোলেন ওই 3 গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ৷
স্থানীয় সূত্রের খবর, 2013 সালে বিএডিপি ফান্ডে এই সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল ৷ যার শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি ৷ তারপর জোর কদমে কাজ শুরু হয় ৷ প্রায় অধিকাংশ কাজ হয়ে যাওয়ার পর তা বন্ধ হয়ে যায় ৷ নদীর উপরে পিলার তোলার কাজ শেষ ৷ এমনকি একাংশে গার্ডার বসানো হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, হঠাৎই কাজ থেমে যায় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের ৷ তাঁরা জানান, সেতুটি সম্পূর্ণ না হওয়ায়, বর্তমানে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৷ বছরের বাকি সময়ে যেমন-তেমন করে চালিয়ে নিলেও, বর্ষাকালে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷ নৌকা করে পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে যায় বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা ৷
আরও পড়ুন: বাহারাইলের জঙ্গলে পর্যটন কেন্দ্র তৈরির দাবি স্থানীয়দের
গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, আশঙ্কাজনক রোগীদের বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে রায়গঞ্জ শহরে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য ৷ অনেক সময় মাঝরাস্তাতেই রোগীর মৃত্যুও হয় ৷ সেতু তৈরি হয়ে গেলে, অনেক দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানো যাবে বলে জানান তাঁরা ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, এই অর্ধসমাপ্ত সেতু থেকে প্রচুর নির্মাণ সামগ্রী চুরি হয়ে গিয়েছে ৷ রাতের অন্ধকারে লোহার সামগ্রী খুলে নিয়ে যায় অসাধু মানুষজন ৷
এই ঘটনায় প্রশাসনিক উদসীনতার অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা ৷ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি ৷ এবিষয়ে ইটিভি ভারত কথা বলেছিল রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মানস ঘোষের সঙ্গে ৷ তাঁর দাবি বর্তমানে বিএডিপি ফান্ডে কাজের ক্ষেত্রে নিয়মের রদবদল হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে ৷ অন্যদিকে, বিজেপি জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং তৃণমূলের নেতাদের কাটমানি খাওয়া কারণেই এই কাজ সম্পন্ন হয়নি ৷