রায়গঞ্জ, 9 মে : শিলিগুড়িতে ওয়্যারিংয়ের কাজে এসেছিলেন । লকডাউনের পর আর পাঁচটা ভিনরাজ্যের শ্রমিকের মতোই অবস্থা হয় তাঁদের । কাজ বন্ধ হয়ে যায় । থাকার জায়গায় ভাড়া দিতে গিয়ে সমস্যা শুরু হয় । তবে, মালিকপক্ষ এক্ষেত্রে খাবার দিয়ে তাঁদের কিছুদিন সাহায্য করেন । কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় লকডাউন বাড়তে থাকায় বিপাকে পড়েন শ্রমিকরা । মালিক হাত গুটিয়ে নেন । এরপর আর দেরি করেননি জামশেদপুরের এই পাঁচ শ্রমিক । টাকা ফুরানোর আগেই যা ছিল তা দিয়ে সাইকেল কিনে রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশে । রাতে পৌঁছান রায়গঞ্জ । এখানেই রাস্তার পাশে একটু বিশ্রাম নিয়ে ফের ভোরের দিকে জামশেদপুরের উদ্দেশে রওনা দেন ।
তিন মাস আগে শিলিগুড়িতে ওয়্যারিংয়ের কাজ করতে এসেছিলেন জামশেদপুরের পাঁচজন শ্রমিক । কাজ ঠিকমতোই চলছিল । লকডাউন ঘোষণা হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায় । দেশের অধিকাংশ ভিনরাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকের মতো বাড়ি ফিরতে চান তাঁরাও । কিন্তু কীভাবে ? শিলিগুড়ি থেকে জামশেদপুরের দূরত্বটা তো কম নয় । সেই ভেবে ক'দিন অপেক্ষাও করে যান । ঠিক হয় প্রথমদফা লকডাউন শেষে বাড়ি ফিরবেন তাঁরা । কিন্তু ফের লকডাউনের সময়সীমা বাড়ায় চাপে পড়ে যান । একদিকে ফুরাতে থাকে টাকা, অন্যদিকে বাড়ি ভাড়া আর খাবারের চাপ । সব ভেবে টাকা ফুরানোর আগেই সাইকেল কিনে রওনা দেন তাঁরা ।
গতকাল রাতে রায়গঞ্জে পৌঁছে 34 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি জায়গায় বিশ্রাম নেন । তাঁদের মধ্যে গুরু সুরেন নামে একজন বলেন, শিলিগুড়িতে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালিক টাকা দিচ্ছেন না । এখানে থাকলে আমরা না খেয়ে মরে যাব । তাই আমাদের কাছে যেটুকু টাকা ছিল তা দিয়ে সাইকেল কিনে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছি । এখন সবার কাছে 50-100 টাকা মাত্র রয়েছে । রাতে কিছু খাবার জোটেনি । তবে, এভাবেই বাড়ি পৌঁছাতে হবে ।