রায়গঞ্জ, 17 জুলাই : ফের নাশকতার হুমকি ৷ এবার নিশানায় রাজ্য সরকার ৷ আজ সকালে রায়গঞ্জে উত্তর দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সামনে একটি বেনামি সিডি ও একটি চিরকুট পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ চিরকুটে লেখা, এই সিডি পাওয়ামাত্র লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে ৷ সমস্ত খবরের চ্যানেলগুলিতে যাতে এই সিডি দেখানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয় ৷
ভিডিয়োটি চালাতেই দেখা যায়, কাপড়ে মুখ ঢাকা, মাথায় টুপি পরা এক ব্যক্তি হুমকি দিচ্ছে রাজ্য সরকারকে ৷ তৌসিফ আলি নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে জঙ্গি গোষ্ঠী হিজ়বুল মুজাহিদিনের বাংলা ডিভিশনের কমান্ডার বলে দাবি করে ৷ হিজ়বুল প্রধান হাফিজ় সৈইদের ছবিও টাঙানো রয়েছে পিছনের দেওয়ালে ৷ যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ৷
কী দাবি করা হচ্ছে হুমকি সিডিতে ?
ভিডিয়োটি আরও এগোতেই স্পষ্ট হয়, ওই ব্যক্তির দাবি ৷ রাজ্য সরকারের শিক্ষক নিয়োগের যে তালিকা রয়েছে, তাতে নাকি তৌসিফ নামে ওই 'জঙ্গি'-র ছ‘জন আত্মীয় রয়েছে ৷ সেই তালিকায় তার নিজের ভাইও রয়েছে বলে দাবি ৷ তৌসিফের বক্তব্য, তারা এখনও চাকরি না পাওয়ার কারণে আত্মহত্যার কথা ভাবছে, কিন্তু সে তা হতে দিতে চায় না ৷ তৌসিফের ওই ছ‘জন প্রার্থীকে অবিলম্বে নিয়োগ করা না হলে নিয়োগ তালিকার 13 হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে মেরে ফেলার হুঙ্কার দিয়েছে সে ৷
এই 13 হাজারের মধ্যে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির 1 হাজার 475 জন, নবম-দশম শ্রেণির 4 হাজার 926 জন, উচ্চ প্রাথমিকের 5 হাজার 221 জন এবং প্রাথমিকের 2,120 জন চাকরি প্রার্থীর নাম রয়েছে ৷
এর জন্য সময়সীমাও বেধে দিয়েছে ৷ তৌসিফের হুঁশিয়ারি, এই বছর স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত যদি নিয়োগ না হয় ওই ছ‘জনের তাহলে, 13 হাজার প্রার্থীর মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য সরকার ৷ সে আরও জানিয়েছে, দুর্গাপুজো পর্যন্ত এই নাশকতা চলতে থাকবে ৷
নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিশ
চাকরিতে নিয়োগের জন্য জঙ্গি সংগঠনের তরফ থেকে এই ধরনের হুমকি বার্তা একেবারেই নজিরবিহীন ৷ ওই ব্যক্তি আদৌ হিজ়বুল মুজাহিদিন বা অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে ৷ আর কেনই বা হঠাৎ কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী রাজ্য সরকারের নিয়োগ নিয়ে হুমকি দেবে, তা নিয়েও বেশ সংশয় রয়েছে ৷
তবে বিষয়টি একেবারেই হেলায় উড়িয়ে দিচ্ছেন না জেলা পুলিশের আধিকারিকরা ৷ উত্তর দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আর্শ বর্মা বলেছেন, "ভিডিয়োতে যা দেখা গিয়েছে, তা নিয়ে আমি এখনই কিছু বলতে চাই না ৷ সিডিটি কীভাবে এল, কার জন্য এই সিডি পাঠানো হল... সেই সংক্রান্ত বিষয়গুলি আমরা খতিয়ে দেখব ৷ তারপরেই এই বিষয়ে কিছু বলা যাবে ৷"
তিনি আরও বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি ৷ আমাদের কাছে যখনই এই ধরনের কোনও ঘটনা আসে, সবগুলিকেই খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখি ৷ হতেই পারে কেউ মজা করছে, কিন্তু আমরা এটিকে নিছক মজা হিসেবে দেখছি না ৷"