রায়গঞ্জ, ৮ জানুয়ারি : ইংরেজ শাসনের সময় বাংলায় নীলচাষের কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি ৷ চাষিদের উপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের কথাও আমরা শুনেছি ৷ তবে সুলতানী ও মুঘল যুগেও হত নীলচাষ এখানে ৷ অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডে বস্ত্র শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটায় সে দেশে বিপুল নীলের চাহিদা দেখা দেওয়ায় তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বাংলায় চাষীদের দিয়ে নীলচাষ করিয়ে প্রচুর মুনাফা করত ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মত সেসময় নীলকুঠি গড়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘির বেলবাড়ি গ্রামেও (Neel Kuthi of Karandighi) । সেই নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ আজও বহু ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে । স্থানীয়রা চান এই ইতিহাস সংরক্ষণ হোক ৷
করণদিঘির নাগর নদীর দুই তীরের জমিতে একসময় প্রচুর নীলচাষ হত । নীলচাষের জন্যই করণদিঘির বেলবাড়ি গ্রামে তৈরি করা হয়েছিল নীলকুঠি । কোনও কোনও জমিতে কৃষকদের বছরে দু'বার করে নীল চাষ করতে বাধ্য করত অত্যাচারী নীলকর সাহেবরা । কেউ সেই চাষ করতে রাজি না হলে তাঁর উপর নেমে আসত চরম অত্যাচার ৷ নীলকুঠির ঘরে আটকে রেখে চরম অত্যাচার চালনো হত চাষিদের উপরে ৷ তথ্য বলছে, এই কুঠিতে বড় বড় ঘর ছিল, ছিল লম্বা বারান্দা । নীলগাছ জলে পচানোর জন্য ছিল সার সার চৌবাচ্চা, আর নীল শুকানোর জন্য বিশালাকারের বেশ কয়েকটি উনুন । আজও তার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে এখানে । তবে এখন গোটা নীলকুঠি এলাকা কৃষিজমি ।
আরও পড়ুন : করোনার প্রথম ঢেউয়ের মতো এবারও রেল পরিষবায় সংক্রমণের থাবা
জেলার ইতিহাসবিদরাও চান এই নীলকুঠিকে সংরক্ষণ করে এখানকার ইতিহাস তুলে ধরা হোক সকলের সামনে ৷ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পাঠ্য পুস্তকেও স্থান পাক সেই ইতিহাস ৷