রায়গঞ্জ, 2 মার্চ: কয়েকদিন বাদেই দোল উৎসবে। ফাগের রঙে রেঙে উঠবে সারা বাংলা ৷ সেই ফাগ বা আবিরে সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে রাসায়নিক উপকরণের উপস্থিতি ৷ যা ব্যবহারের ফলে চামড়ার ক্ষতি হয়। চামড়ার ক্ষতির ভয়ে মানুষ ইদানিং দোলে আবির খেলতে ভয় পান। তবে গত কয়েকবছর ধরে দোল উৎসবের ছবিটা ভিন্ন। রঙের উৎসব এখন উদযাপন হচ্ছে ভেষজ আবিরে ৷ এবারও সেই আবির তৈরিতেই ব্যস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। একদম ঠিকই শুনেছেন ৷ উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের ধন্দুগছ শক্তি ও সোনার তরী স্বর্নিভর গোষ্ঠীর মহিলারা যৌথভাবে ভেষজ আবির তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দোলের আগে। ভেষজ আবির তৈরি করে আয়ের মুখ দেখছেন এই স্বর্নিভর গোষ্ঠীর মহিলারা (Self Help Group in Raiganj) । মহিলাদের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার বাসিন্দারা।
প্রায় চার বছর ধরে মহিলারা আবির তৈরি করে বিক্রি করছেন। সেই আবির চলে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ইতিমধ্যে বহু জায়গা থেকে অর্ডারও পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। দলের সদস্যারা জানিয়েছেন, উত্তর দিনাজপুর জেলা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভেষজ আবির বানানোর কাজ শিখেছেন দলের মহিলারা। রাসায়নিক উপকরণের হাত থেকে বাঁচতে বিশেষ কিছু ফল, ফুল, পাতা ব্যবহার করে ভেষজ আবির বানানো হচ্ছে। এই আবির ব্যবহারে চামড়া, চোখ বা শরীরের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না ৷
আরও পড়ুন: প্রথা ভেঙে বিশ্বভারতীতে 'অকাল' বসন্ত উৎসব ও আবির খেলা
প্রায় চার বছর ধরে তাঁরা এই ভেষজ আবির বানাচ্ছেন। আগের তুলনায় এবার বেশি পরিমাণে তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির। এবছর দেড় কুইন্টাল আবির বানানোর বরাত পেয়েছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। সরকারি সংস্থা-সহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে ইতিমধ্যেই বেশকিছু অর্ডার পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, গ্রামবাসীরা জানান, বাজারে যেভাবে রাসায়নিক আবির বিকোচ্ছে, তার তুলনায় এতে অনেকটাই ক্ষতি কম হচ্ছে ৷ তাঁরা বলেন, "আমরা গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ভেষজ আবির নিচ্ছি। এই আবির ব্যবহারে ফলে দেশের ও সমাজের অনেক উপকার হচ্ছে। এইভাবে কাজ করে দলের মহিলারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। আরও অন্যান্য মহিলারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হোক এটাই তাঁরা চান। এই দলের মহিলারা আবির তৈরি করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমরা খুশি ৷"