কালিয়াগঞ্জ, 14 সেপ্টেম্বর: উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকারপুরের উদগ্রামের দুর্গা মন্দির ৷ 500 বছর আগে অবিভক্ত দিনাজপুরের রাধিকারপুরের জমিদার জগদীশচন্দ্র রায় বাহাদুর এই পুজোর সূচনা করেছিলেন (Five Hundred Years Old Durga Puja of Udgram) ৷ সেই সময় কামানের তোপে পুজোর সূচনা হত উদগ্রামে ৷ দেশভাগের পর সেই প্রথা বিলোপ হয়েছে ৷ কিন্তু, আজও স্থানীয়রা নিয়ম নিষ্ঠা মেনে সেই পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন ৷
তবে, বঙ্গভঙ্গের পর থেকে এই দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2022) আগের মতো জৌলুস আর নেই ৷ অন্তত সেই সময় জমিদার বাড়ির সেই পুজোয় অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে সেই উৎসাহটা আর ছিল না ৷ কারণ, বঙ্গভঙ্গের পর বহু মানুষ তৎকালীন পূর্ববঙ্গে চলে যায় ৷ ফলে তাঁরা কেউ আর এপার বাংলার পুজোয় অংশ নিতে পারতেন না ৷ তবে, সময়ের সঙ্গে সেই লোকজনও আর বেঁচে নেই এবং বঙ্গভঙ্গের যন্ত্রণাও বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে নেই ৷ তবে, স্বাধীনতার পর 500 বছর আগে শুরু হওয়া কামান দাগার রীতি বন্ধ হয়ে যায় ৷
উদগ্রামের দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয় পুরনো কাঠামো দিয়েই ৷ এই মন্দিরের প্রতিমা জন্মাষ্টমীতে বিসর্জন দেওয়া হয় ৷ পর কাঠামোকে জল থেকে তুলে, তা যত্ন করে রেখে দেওয়া হয় ৷ সেই কাঠামোতেই পড়া মাটির প্রলেপ ৷ এখনও এই পুজোর বেশ কিছু পুরোনো নিয়মরীতি পালন করা হয় ৷ 500 বছর আগে শুরু হওয়া মুখোশ নাচ ও চণ্ডীপাঠের বিশেষ অনুষ্ঠান আজও হয় পুজোর চারদিন ৷ মূলত অশুভ শক্তির বিনাস ঘটিয়ে গ্রামের মঙ্গল কামনা করে এই মুখোশ নাচ ও চণ্ডীপাঠ হয় ৷
আরও পড়ুন: অবিভক্ত দিনাজপুরের বাহিন জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো আজ সর্বজনীন
গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, দুর্গা মন্দিরে সেখানকার মেয়েদের বিয়ে হলে, তাঁদের সংসার জীবন সুখের হয় ৷ সেই বিশ্বাস নিয়ে আজও গ্রামের সব বিয়ের অনুষ্ঠান দুর্গা মন্দিরেই করা হয় ৷ এমনকি গ্রামে কোনও নববধূ এলে তাঁকে আগে ওই মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে দেবী দুর্গাকে প্রণাম করে শ্বশুর বাড়িতে পা রাখেন গ্রামের নববধূরা ৷ মন্দিরের নামে বেশ কিছু জমি আছে ৷ সেই জমিতে চাষ করা হয় ৷ সেই ফসল বিক্রি করে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ ও পুজোর খরচ জোগাড় করা হয় বর্তমানে ৷ পাশাপাশি, গ্রামবাসীরা নিজেদের সাধ্য মতো দান করেন দুর্গা মন্দিরে ৷