রায়গঞ্জ, 20 নভেম্বর : সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে রাতভর উচ্চগ্রামে চলল দ্রুত লয়ের গান ৷ সঙ্গে মঞ্চ বেঁধে উদ্দাম নাচ ৷ যে জায়গায় এই নাচ, গানের আয়োজন, তা আদতে বাচ্চাদের স্কুল ! খাতায়-কলমে সেই স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব যাঁর উপর, সেই টিচার ইনচার্জের বক্তব্য, তিনি নাকি কিছুই জানতেন না ! উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ লাগোয়া তাহেরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা ঘিরে চড়ছে রাজনীতির পারদ ৷ বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অপসংস্কৃতির আমদানি করছে ৷ আর তৃণমূলের বক্তব্য, এই ধরনের নাচ, গান বাংলার সংস্কৃতি নয় ৷ উত্তরপ্রদেশ, বিহারে এইসব হয় ৷ সেখানে বিজেপির শাসন ৷ সেখান থেকেই এসব বাংলায় আমদানি করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন : MLA Dance Controversy : মঞ্চ মাতিয়ে বিতর্কে ময়নাগুড়ির বিজেপি বিধায়ক
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 14 নভেম্বর তাহেরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জলসার আয়োজন করা হয় ৷ সেই অনুষ্ঠান চলে সারারাত ৷ স্কুল চত্বরেই বসে ভোজপুরী গানের সুরে তাল মিলিয়ে নাচের আসর ৷ তা দেখতে ভিড় জমান এলাকার বহু মানুষ ৷ মঞ্চে নাচ, গান দেখে তাঁরাও দর্শকাসন থেকেই তাতে যোগ দেন ৷ রাতভর এভাবেই চলে হট্টগোল ৷ প্রশ্ন হল, স্কুল চত্বরে কি এভাবে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায় ?
টিচার ইনচার্জ বিশ্বেশ্বর বর্মনের দাবি, অনুষ্ঠানের কথা কিছুই জানতেন না তিনি ৷ তাঁর কাছে অনুমতি নেওয়া তো দূরের কথা, আয়োজকরা তাঁকে বিষয়টি জানানোরও প্রয়োজন বোধ করেননি ! এখানেও প্রশ্ন থাকছে, অনুমতি সাপেক্ষেও কি প্রাথমিক স্কুলে এই ধরনের নাচ, গান হওয়ার উচিত ? বিশ্বেশ্বর বলছেন, যা হয়েছে, অন্যায় হয়েছে ৷ এমনটা তিনি সমর্থন করেন না ৷
আরও পড়ুন : বিভূতিভূষণের স্মৃতিবিজড়িত মেলায় চটুল নাচ, মদের ফোয়ারা
টিচার ইনচার্জের সাফাই, প্রতিবারই দুর্গাপুজোর সময় স্কুলের চাবি এলাকার এক যুবকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ চাবি ফেরত নেওয়া হয় কালীপুজোর পর ৷ কিন্তু, এবার আর সেই চাবি ফেরত নেওয়া হয়নি ৷ প্রশ্ন হল, এভাবে সরকারি স্কুলের চাবি এলাকার কারও হাতে কি আদৌ দেওয়া যায় ? ঘটনা সামনেই আসতেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর ৷ টিচার ইনচার্জের কাছে জবাবদিহিও চাওয়া হয়েছে ৷ তিনি শো-কজের কী উত্তর দেন, তার উপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে ৷