রায়গঞ্জ, 29 জানুয়ারি: এবার ডালখোলা বাইপাস নির্মাণেে বিজেপি- তৃণমূল তরজা চরমে। বিজেপির অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিতে এমনতিতেই শ্লথ হয়েছে রাস্তা তৈরির কাজ৷ তার উপর তৃণমূলের তোলাবাজি অবস্থা আরও জটিল করে তুলেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই তোলাবাজির অভিযোগ মানতে নারাজ শাসক শিবির৷ তাদের পাল্টা দাবি, দীর্ঘদিন আগেই রাজ্য সরকার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে সড়ক নির্মাণের জন্য় অধিগৃহীত জমি তুলে দিয়েছে৷ কিন্তু ভোট না এলে কোনও কাজই করে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার৷ একমাত্র ভোটের সময়েই দেখা যায় তাদের৷ তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। তাই বাইপাসের কাজ ধীর গতিতে চলছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে জ্বলন্ত সমস্যা ডালখোলা রেলগেটের যানজট। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটে নাজেহাল দূরপাল্লার বাস থেকে পণ্যবাহী বিভিন্ন গাড়ি৷ বেহাল জাতীয় সড়কের কারণে যানজটে পাঁচ থেকে ১০ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকছে সমস্ত যানবাহন। দুর্ভোগে পড়ছেন নিত্যযাত্রী থেকে কলকাতা-শিলিগুড়ি রুটের যাত্রীরা৷
যানযন্ত্রণা মেটাতে শুরু হয়েছে বাইপাস তৈরির কাজ৷ কিন্তু কবে শেষ হবে ডালখোলার এই বাইপাস, তা কেউই জানে না৷ যদিও উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা জানিয়েছেন, দ্রুত গতিতে চলছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাস নির্মাণের কাজ। খুব শীঘ্রই ডালখোলার যানজট সমস্যা মিটে যাবে।
বর্তমানে কলকাতা বা রায়গঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত বাসে বা সড়কপথে অন্য কোনও গাড়িতে যাওয়াটা কার্যত দুঃস্বপ্ন যাত্রীদের কাছে৷ দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে যাওয়া-আসার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আর কোথাও যানজটে না আটকালেও উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায় যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়াটা নিত্যদিনের ঘটনা। তার এক এবং একমাত্র কারণ ডালখোলা রেলগেট ক্রসিং।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বুক চিরে গিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ব্যস্ততম রেললাইন। দিনে-রাতে প্রায় ৭৫ জোড়া প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে এই লাইনের উপর দিয়ে। ফলে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুশোবার রেলগেট বন্ধ হয়। আর এর জেরেই তৈরি হয় যানজট৷ এর উপর রয়েছে ডালখোলায় সংকীর্ণ জাতীয় সড়কের বেহাল দশা। বেহাল রাস্তায় মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি রাস্তায় পড়ে থাকাতেও যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যাত্রীবাহী যানবাহন থেকে পণ্যবাহী গাড়ি।
ডালখোলার এই যানজট সমস্যা জ্বলন্ত ইশু হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলায়। যানবাহনের চালকরা জানিয়েছেন, কিষানগঞ্জ, শিলিগুড়ি যেতে গিয়ে যানজটে আটকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় তাঁদের। সাধারণের অভিযোগ, যানজট মেটাতে বাইপাস তৈরির কাজ শুরু হলেও তার মন্থর গতিতে সমস্য়া জিইয়ে থাকছে৷ যা বিরক্তিকর৷ তবেএ বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি৷
আরও পড়ুন: আসন কমলেও ফের একবার সরকার গড়বে তৃণমূল, দাবি গুরুঙের
বিধানসভা ভোটের আগে এবার এই বিষয়টিকেই ইশু করে মাঠে নামল তৃণমূল-বিজেপি৷ জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ির অভিযোগ, তৃণমূলের তোলাবাজি ও কোরোনা পরিস্থিতির জন্য়ই বাইপাসের কাজ কিছুটা শ্লথ গতিতে চলছে। তবে খুব শীঘ্রই এই কাজ শেষ করা হবে। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার তোলাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন আগেই রাজ্য সরকার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগৃহীত জমি তুলে দিয়েছে৷ কিন্তু ভোট না এলে বিজেপি সরকারের দেখা পাওয়া যায় না৷ তারা মানুষের কথা ভাবে না৷ তাই বাইপাসের কাজ ধীর গতিতে চলছে।