রায়গঞ্জ, 16 নভেম্বর : প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে দূষণ ৷ তবে চাষের কাজে জৈব সারের ব্যবহার হলে কিছুটা হলেও দূষণ কমবে, এমনটাই মত কৃষি বিশেষজ্ঞদের । এই পদ্ধতিতে চাষ করছেন উত্তর দিনাজপুরের কয়েকজন চাষি । নিজেদের জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে প্রায় 60 রকম প্রজাতির ধান ফলিয়ে নজির গড়েছেন রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভট্টদিঘির চাষিরা ।
ভারতবর্ষের অন্যতম ধান উৎপাদনকারী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । কিন্তু ইদানিং চাহিদা অনুযায়ী, ধানের উৎপাদন বাড়াতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের প্রবণতা বেড়েছে । যার ফলে শরীরে বাসা বাঁধছে দুরারোগ্য ক্যানসার ৷ সুগার ও ব্লাড প্রেশারের সমস্যাও দেখা যাচ্ছে । এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের কয়েকজন চাষি ।
গোচনা, গোবর, গাছের পাতা পচিয়ে তা সার রূপে ব্যবহার করে প্রায় 60 রকমের ধান চাষ করে নজির সৃষ্টি করেছেন এই চাষিরা । মূলত, ভট্টদিঘিতে প্রায় 100 বিঘা জমিতে এই জৈব পদ্ধতিতে চাষ করছেন তাঁরা । ভরতপুর, নয়াপাড়া, সাহাপুর, বিন্দোল, সিজগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকাতেও সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হচ্ছে । উৎপাদিত হচ্ছে গোবিন্দভোগ, রাধাতিলক, তুলাইপঞ্জি, পারিজাত, কেরালা সুন্দরী, কালোজিরা, জয় প্রকাশ, লাল বাসমতী, বহুরূপী, মনিপুরী চখাও, জসোয়া সহ বিভিন্ন প্রকারের ধান ।
চাষি টিপু মণ্ডল বলেন, "দীর্ঘ 10 বছর ধরে এই জৈব চাষের সঙ্গে কাজ করছি আমরা । আমাদের লক্ষ্য, সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জৈব সার প্রয়োগ করে ফলন বাড়ানো । সেই সঙ্গে চাষের এই পদ্ধতির মাধ্যমে খুব স্বল্প খরচে উৎপাদন সম্ভব ।"
এই অভিনব পদ্ধতিকে গ্রহণ করতে আগ্রহী বহু চাষি । এই জৈব পদ্ধতিতে কীভাবে ধান চাষ করা হচ্ছে তা শিখতে ভট্টদিঘি আসেন মালদা জেলার বামনগোলা ব্লকের প্রায় 40 জন চাষি । মালদার বামনডোলা ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মানবেন্দ্র কুমার সাহা জানান, জৈব পদ্ধতিতে চাষের কাজ শেখার জন্য মালদা থেকে এসেছেন বহু চাষি । নিজেদের এলাকাতে এই পদ্ধতিতে চাষ করে পরিবেশকে বাঁচানোর চেষ্টা করার কথাও জানান তিনি ।