রায়গঞ্জ, 23 অক্টোবর: কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী 'বয়রা মা'য়ের পুজো (Bayera Kali Puja) শতাধিক বর্ষ প্রাচীন ৷ এই পুজোয় শোল, বোয়াল-সহ পাঁচ রকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি দিয়ে দেবীর ভোগ তৈরি হয় । দীপাবলির অমাবস্যায় বয়রা কালীমাতার পুজোকে ঘিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে কালিয়াগঞ্জ শহরে (Kaliaganj Kali Temple)।
টিনের চালা আর বাঁশের বেড়ার মন্দির থেকে আজ বিশালাকার মন্দির তৈরি হয়েছে কালিয়াগঞ্জে । মৃণ্ময়ী মূর্তির বদলে দেবীর অষ্টধাতুর মূর্তি বসেছে । দীপাবলির রাতে কালীর সারা অঙ্গজুড়ে থাকে সোনার অলঙ্কার । মানত পুরণের আশায় হাজার হাজার ভক্ত পুজো দিতে আসেন বয়রা মায়ের কাছে ।
কথিত আছে, শ্রীমতি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে বাণিজ্য করতে আসতেন বণিকরা । তাঁরা নৌকা নোঙর করে বিশ্রাম নিতেন নদীর ধারের জঙ্গলে । সেখানেই বয়রা গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এক বণিক ৷ ওখানেই মূর্তি দিয়ে কালীপুজো করার জন্য দেবীর স্বপ্নাদেশ পান তিনি ৷ সেই বয়রা গাছের তলায় প্রথম পুজো শুরু হয় উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দির "বয়রা কালীবাড়ি"র । পরবর্তীতে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা সেই জঙ্গল পরিস্কার করে তৈরি করেন বাঁশ ও মাটির মন্দির ।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়িতেই কেদারনাথ দর্শন ! কালীপুজোর উদ্বোধনে এসে উচ্ছ্বসিত অভিনেতা আবির
এরপর 1962 সালে তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির, যা আজ বয়রা কালীমন্দির নামে বিখ্যাত । দীপাবলির রাতের বয়রা কালীবাড়ির পুজোকে ঘিরে কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট-সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে বিশেষ উন্মাদনা ধরা পড়ে । কয়েক লক্ষ পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে দীপাবলির রাতে । দুই-তিন হাজার পাঁঠা বলি হয়ে থাকে ।
তবে করোনা অতিমারির কারণে সরকারি বিধি মেনে সম্পূর্ণ রূপে বলি প্রথা বন্ধ আছে । বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ দাবি করে এসেছেন এই বলি প্রথা বন্ধ করার জন্য । নিরীহ প্রাণীকে হত্যা করার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকেই ৷ করোনা অতিমারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বলি প্রথা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ও সকলের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে মন্দির কমিটি বলিদান প্রথা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷