বারাসত, 19 সেপ্টেম্বর : বিশ্বকর্মা পুজোর পিকনিকে মদের আসরে খুন যুবক । অভিযোগ, বারাসতের আক্রমপুরে খুনের পর দেহ টোটোতে তুলে মৃতের বাড়ির সামনে ফেলে পালায় আততায়ীরা । মৃতের নাম নজরুল সর্দার (33) । তবে খুনের ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুই অভিযুক্ত রঞ্জিত ও রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
অভিযুক্তদের মধ্যে রঞ্জিত একটি গ্যারেজের মালিক । অপরজন তার দোকানের কর্মচারী । বাকিরা পলাতক । তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পেশায় টোটো চালক নজরুলের বাড়ি বারাসতের টালিখোলায় । গতকাল সকালে রেশন তুলে বাড়ি ফিরে সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি । বিশ্বকর্মা পুজোর খাওয়া-দাওয়া রয়েছে তাই দুপুরে খেতে আসবেন না, বলে গিয়েছিলেন বাড়িতে । এরপরই বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ একটি টোটোতে তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে যায় কয়েকজন । নজরুলকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে । সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । রাতেই স্থানীয় গ্যারেজ মালিক রঞ্জিত ও তার কর্মচারী রাজু-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় বারাসত থানায় । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় রঞ্জিত ও রাজুকে ।
মৃতের বিবি মুসলিমা বিবি বলেন, "রুটি খেয়ে সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল শওহর । রেশন তুলে এগারোটা নাগাদ ফের বাড়ি ফিরে আসে । এরপর বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় বলে যায় বিশ্বকর্মা পুজোর পিকনিক রয়েছে । বাড়িতে কোনও অশান্তি হয়নি । যারা দেহ বাড়ির সামনে রেখে গিয়েছিল তাদের ঠিক চিনি না । কী কারণে এই ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না ।" মৃতের আব্বা কাজল সর্দার বলেন, "রঞ্জিতের গ্যারেজে ছেলে টোটো সারাইয়ের কাজ করাত । সেখানেই মদের আসর বসেছিল । চার-পাঁচ জন ছিল । ওরাই ছেলেকে খুন করে টোটোতে করে দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেয় । রঞ্জিত ও তার দোকানের কর্মচারী রাজুকে চিনতে পেরেছি । বাকিদের চেনা সম্ভব হয়নি । ওদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল কি না সেটা বলতে পারব না । তবে মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে । যার ফলে খুনের বিষয়টি আরও গাঢ় হয়েছে ।"
এই বিষয়ে বারাসত থানার পুলিশ জানিয়েছে, "পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । সেই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা দু'জনকে । বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে । খুনের পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । ধৃতদের জেরা করে এই বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে ।"