বসিরহাট, 12 ডিসেম্বর: ছাদে জামা-কাপড় শুকাতে দিয়েছেন? কিন্তু খেয়াল করেননি যে বৃষ্টি এসেছে । একটু শুকনো হতে না হতেই ফের ভিজে ঢোল সবকিছু । মাথায় হাত আপনার । প্রায়শই এই সমস্যার মুখে পড়ি আমরা । কিন্তু বসিরহাটের দুই খুদের চেষ্টায় এবার সেই সমস্যারই সমাধান হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে । দূর হতে চলেছে চিন্তা । বৃষ্টি এলে আর তাড়াহুড়ো করে ছাদে গিয়ে শুকাতে দেওয়া জামাকাপড় তুলতে হবে না । বৃষ্টির ফোঁটা পড়লেই সেগুলি নিরাপদে পৌঁছে যাবে স্মার্ট ঘরে । আবার বৃষ্টি ধরে এলেই সেগুলি ফের খোলা আকাশের চলে যাবে । শুধু তাই নয়,সন্ধ্যা নামতেই ঘরে নিজের থেকেই জ্বলে উঠবে আলো । ফের সূর্য উঠলে আপনা থেকেই বন্ধ হবে ।
কর্মক্ষেত্র থেকে দৈনন্দিন কোনও কাজ, বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই দিনে দিনে ক্রমেই বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সের ব্যবহার । এবার এই এআই-কে কাজে লাগিয়েই গৃহস্থলির সমস্যার সমাধান করতে মাঠে নেমে পড়ল বসিরহাটের বিজ্ঞানমনষ্ক দুই ছাত্র । বসিরহাট মহকুমার বসিরহাট 2 নম্বর ব্লকের বেলের ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুলের দুই ছাত্র নিজামউদ্দিন গাজি ও মহম্মদ সামিম মণ্ডল তৈরি করে ফেলেছে এক বিশেষ স্মার্ট ঘরের মডেল । তা নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছে তাঁদের স্কুল, এমনকী এলাকাতেও । অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রের কীর্তিতে হতবাক শিক্ষকেরাও । খুশি পরিবারের লোকজনও ।
এই ঘর তৈরিতে নিজামউদ্দিন ও সামিম ব্যবহার করেছেন আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স । ঘরের উপর থাকছে বিশেষ সেন্সসর । থাকছে সাইরেন । বৃষ্টি আসলেই সেন্সরের সাহায্য নিয়ে বেজে উঠবে ওই সাইরেন । নিজামউদ্দিন-সামিমরা অবশ্য তাদের এই কাজের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন । দু'জনেই জানান,স্কুলের ল্যাবে পড়াশোনা করার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ে শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়েই তাঁরা এই স্মার্ট ঘর তৈরি করে ফেলেছেন । তবে আপাতত এটা মডেল ঘর । আগামীতে এই ঘরে কীভাবে আরও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে আরও গবেষণা চলবে বলে জানাচ্ছেন দুই ছাত্রই ।
নিজামউদ্দিন বলে,"বৃষ্টি এলেই এই সেন্সর কাজ করতে শুরু করবে । জামাকাপড় তুলতে আর কোনও চিন্তার কারণ থাকবে না । রাতে অন্ধকার হলেও নিজে থেকে আলো জ্বলে উঠবে । সকালে নিজে থেকেই এই আলো বন্ধ হয়ে যাবে । এটা মডেল ঘর ।" এদিকে এই মডেল ঘর বাস্তবের রূপ দেখলে আখেড়ে আম-আদমির অনেক উপকার হবে বলেই মনে করছে দুই ছাত্র । অন্যদিকে দুই ছাত্রের এই কৃতিত্ব একদিন না না একদিন সরকারি স্বীকৃতি মিলবে বলেই আশাবাদী সকলে ।
আরও পড়ুন: