দেগঙ্গা, 20 জুন : আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব । তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গার ঘটনা। দুর্নীতির অভিযোগে আমুলিয়া পঞ্চায়েত অফিসে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখায় দলের একাংশ। পঞ্চায়েতের মূল গেটে তালা থাকায় সকাল থেকেই ব্যাহত হয়ে পড়েছে পরিষেবা দেওয়ার কাজ। এমনকি পঞ্চায়েতে আসার পরও ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি প্রধান, উপপ্রধান সহ সরকারি কর্মীরা। ফলে কোনও কাজকর্ম না করেই বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে তাঁদের। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে ঘটনার পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত দেখছেন ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জিলহজ বিবি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
সুপার সাইক্লোন আমফানের তাণ্ডবে দেগঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে প্রশাসনের তরফে। অথচ, আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রথম থেকেই স্বজনপোষণ, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে দেগঙ্গায় তৃণমূল পরিচালিত বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ, যাদের বাড়ির কোনও ক্ষতিই হয়নি, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে এসেছে। এমনই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের লোকজন। এমন কী আন্দোলনেও নেমেছেন তাঁরা। কখনও স্থানীয় পঞ্চায়েত আবার কখনও BDO অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির যে বদল ঘটেনি তা আমুলিয়া পঞ্চায়েতে তালা দেওয়া থেকেই স্পষ্ট।
এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী হাসান আলি গোলদার, সুজাউদ্দিন গোলদারদের অভিযোগ,"যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরনের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ,যাদের কোনও ক্ষতিই হয়নি দিব্যি তাঁরা ক্ষতিপূরনের টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। এই নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান সহ পঞ্চায়েত সদস্যরা স্বজনপোষণ করছেন। দুর্নীতি চলছে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে। সেই জন্যই পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ না এই নিয়ে পঞ্চায়েতের তরফে কোনও সদুত্তর মিলছে ততক্ষণে পঞ্চায়েত খুলতে দেওয়া হবেনা"।
যদিও,আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করেছেন আমুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জিলহজ বিবি। বরং ঘটনার জন্য বিরোধীদের উস্কানিকেই দায়ী করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যারা এই কাজ করেছে তাঁরা তৃণমূল দলের কেউ নন। বিরোধীরা উসকিয়ে কিছু গ্রামবাসীকে দিয়ে এই কান্ড ঘটিয়েছে। যারা ক্ষতিপূরন পেয়েছেন তাঁদের সমস্ত তথ্য পঞ্চায়েতের কাছে রয়েছে। তাই অযথা দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা গোটা ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েছে। তাঁদেরকে বলেছি এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে"।
এবিষয়ে দেগঙ্গার BDO সুব্রত মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি আমার কাছে। তাই খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তারপরই কোনও মন্তব্য করতে পারব এই বিষয়ে"।