মধ্যমগ্রাম, 15 জানুয়ারি : তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে যেন বিতর্ক থামছে না । বরং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর মন্তব্যের আঁচ এসে পড়ল মধ্যমগ্রামে ৷ পথে নেমে শ্রীরামপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে রীতিমতো পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হলেন যুব তৃণমূল কর্মীরা (Agitation against Kalyan Banerjee) । উঠল অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সমর্থনে স্লোগানও ।
শনিবার উত্তর 24 পরগনার মধ্যমগ্রামে বিক্ষোভে সামিল হন তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা । সাংসদের সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা । এমনকি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুস্থতা কামনা করে তাঁর কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ির ঠিকানায় কুরিয়ারের মাধ্যমে চিঠি পাঠাবেন বলেও ঠিক করেছেন যুব তৃণমূল কর্মীরা । এভাবে একজন দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে পথে নেমে তৃণমূল যুব কর্মীদের আন্দোলন কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
বিতর্কের সূত্রপাত তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার মডেলকে ঘিরে । সম্প্রতি নিজের লোকসভা কেন্দ্রে করোনার সংক্রমণ রুখতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের উপর জোর দিয়েছিলেন অভিষেক । একদিনে 53 হাজারেরও বেশি করোনা পরীক্ষা করিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ । যা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে প্রশংসাও শোনা যায় । এরপরই ডায়মন্ড হারবার মডেল অনুসরণ করা উচিত বলে অভিষেকের সমর্থনে এগিয়ে আসেন তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ । যা নিয়ে উল্টো সুর শোনা গিয়েছিল শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় । রীতিমতো ডায়মন্ড হারবার মডেলের বিরুদ্ধাচারণ করে অভিষেকের নেতৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ । প্রকাশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কাউকে দলের নেতা মানতে অস্বীকার করেছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ । যা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় তৃণমূলের অন্দরে । বাকযুদ্ধ শুরু হয় কুণাল-কল্যাণের মধ্যে । এই ইস্যুতে শ্রীরামপুরের সাংসদকে আক্রমণ করেন দলেরই সাংসদ অপরূপা পোদ্দার । একে অপরের কাদা ছোঁড়াছুড়িতে অস্বস্তিতে পড়তে হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে । শেষে এই বিষয়ে ইতি টানতে হস্তক্ষেপ করেন রাজ্য নেতৃত্ব । তবে, বিতর্ক যে তাড়াতাড়ি থামছে না তা স্পষ্ট যুব তৃণমূল কর্মীদের রাস্তায় নেমে আন্দোলনে । আজ দুপুরে মধ্যমগ্রাম পৌরসভার সামনে কল্যাণের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান দলের স্থানীয় কর্মীরা । নেতৃত্ব দেন যুব তৃণমূলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ নন্দী ।
আরও পড়ুন : Partha Chatterjee on internal tussle : পৌরভোট নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে কাজিয়া, কড়া বার্তা মহাসচিবের
এই বিষয়ে তিনি বলেন, "কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সৈনিক । পরবর্তীতে তিনি দলের টিকিটে সাংসদ হন । তাঁর কাছ থেকে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সম্পর্কে এরকম মন্তব্য আশা করিনি আমরা । এই মন্তব্যকে ধিক্কার জানাই । অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নিজের যোগ্যতায় দলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন । তাঁর নেতৃত্বে দল একদিন গোটা ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হবে । তাই কেউ তাঁকে অপমান করলে আমরা তা মেনে নেব না । কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সুস্থতা কামনা করেই এদিন আমরা পথে নেমে আন্দোলনে সামিল হয়েছি । ওনার মাথা বিগড়ে গিয়েছে নাকি অন্য কিছু বিগড়ে গিয়েছে সেটা আপনারই ভালো বলতে পারবেন । তবে ওনার সম্পর্কে আমরা কু-মন্তব্য করব না ৷"