বারাসত, 10 ডিসেম্বর: 'সংকটকালে দাদাদের কথাই বেশি মনে পড়ে। সেইজন্য আমার কথা বারবার মনে পড়ছে সৌমিত্র খাঁয়ের। ওঁ চাইছে আমার হাত ধরে পুনরায় তৃণমূলে ফিরতে।' বুধবার দুপুরে পুরোনো একটি মামলায় বারাসত বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে এসে দুর্নীতি ও দলবদল প্রসঙ্গে এভাবেই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে জবাব দিলেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে দলীয় এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি ও সাংসদ সৌমিত্র খাঁ অভিযোগ করেন, "টি বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী 50 কোটি টাকার দুর্নীতি করেন। সেই দুর্নীতি থেকে বাঁচতে সে বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছে ।" এই অভিযোগেরই পাল্টা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী।
বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে খোঁচা দিয়ে সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, "ওঁর (সৌমিত্র খাঁ) জানা উচিত টি বোর্ড বলে কিছু হয় না। ওটা টি অ্যাডভাইজারি বোর্ড। সেই বোর্ডের হাতে আর্থিক কোনও ক্ষমতা নেই। আসলে ওঁ যতদিন তৃণমূলে ছিল ততদিন পড়াশোনার মধ্যে থাকত। যেদিন থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে সেদিন থেকে পড়াশোনা করা ছেড়ে দিয়েছে। বিজেপি পার্টিটাই অশিক্ষিত। সেখানে পড়াশোনার কোনও ব্যাপার নেই। ওঁর এই সমস্ত কথা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও বিশ্বাস করছে না। কারণ তাঁদের সঙ্গে সৌমিত্র খাঁয়ের সম্পর্ক খারাপ।" এরপরই বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "দলের মধ্যে বেকায়দায় পড়েছেন সৌমিত্র খাঁ। সংকট বুঝতে পেরেই আমার নাম বারবার করছে ওঁ। কারণ একসময় কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসা সৌমিত্র খাঁ আমার হাত ধরেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল। তৃণমূলে কেরিয়ার তৈরি করে ওঁ এখন বিজেপিতে গিয়েছে নতুনভাবে কেরিয়ার তৈরি করতে। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে সৌমিত্র এখন চাইছেন পুনরায় আমার হাত ধরে তৃণমূলে ফিরতে। ওঁ জানে দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে আমার। কিন্তু সেই লাইন ওঁর জন্য বন্ধ। ভগবান কিংবা দেবতারা যেখানে আগে পৌঁছাতে সাহস পান না, সেখানে মূর্খরা পৌঁছে যাচ্ছে আগে। এটাই বড় সমস্যা।"
আরও পড়ুন: এক মাসের মধ্যে তৃণমূল দলটাই থাকবে না : সৌমিত্র
উত্তরকন্যা অভিযানে গিয়ে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যু নিয়ে গেরুয়া শিবিরের তোলা অভিযোগও উড়িয়ে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, "তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনও অবধি কোনও রাজনৈতিক কিংবা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুলি চলেনি। উল্টে পুলিশ মার খেয়েছে। মৃত্যু হয়েছে। গাড়ি জ্বলেছে। বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ছিল সংগঠিত গন্ডগোল। সেই কারণ এর দায় নিতে হবে বিজেপিকেই। বাম আমলে পুলিশ ছিল হ্যাপি টিগার। আর তৃণমূল আমলে পুলিশ যথেষ্ট সংযত বলেও দাবি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী।