কলকাতা, 30 জুন: যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছিল বৃহস্পতিবার ৷ তবে উত্তর 24 পরগনার কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র সেকথা মানতে নারাজ ৷ তিনি পুরো ঘটনার দায় স্থানীয় এক ঠিকাদারের উপর চাপিয়েছেন ৷ আর অভিযোগ করেছেন কামারহাটির প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের মানস মুখোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে ৷ যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে আক্রান্ত ও অভিযুক্ত, সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ৷ বরং অভিযুক্তদের মারার জন্য আগেই ওই ঠিকাদার 1 কোটি টাকা সুপারি দিয়েছিল ৷
বৃহস্পতিবার আড়িয়াদহের মৌসুমী মোড় এলাকায় অরিত্র ঘোষ নামে এক যুব তৃণমূল নেতাকে স্থানীয় এক ঠিকাদারের লোকজন বাঁশ ও রড দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে ৷ ওই যুব নেতাকে লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয় ৷ তাঁর পায়ে লেগে গুলি বেরিয়ে যায় ৷ পুলিশ প্রাথমিকভাবে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে ৷ তবে সাধারণ মানুষ এলাকা থেকে গুলির খোল উদ্ধার করেছে ৷
আহত অবস্থায় অরিত্র ঘোষ আপাতত একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ৷ বৃহস্পতিবার ওই যুব নেতাকে দেখতে ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান কামারহাটির বিধায়ক তৃণমূলের মদন মিত্র ৷ তার পর তিনি জানালেন, যে মেরেছে এবং যিনি মার খেয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের লোক ৷ পুলিশ মানতে নারাজ হলেও গুলি চালনার কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন ৷ তবে পুরো ঘটনার দায় তিনি সিপিএমের মানস মুখোপাধ্যায়ের উপর চাপিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন: ভোট শেষে দলীয় কর্মীদের শিক কাবাব খাওয়াব, বললেন মদন
তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে তথ্য রয়েছে মানস মুখোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বলেছেন বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে 10 লক্ষ টাকা খরচ করে হামলা করবেন ।’’ তাঁর আরও দাবি, যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদেরই কয়েকদিন আগে মারার জন্য 1 কোটি টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল ৷ তিনি জানতে পেরে ওই যুবকদের সাবধান করেন ৷ পুরো ঘটনার পিছনে এক ঠিকাদার রয়েছেন বলে দাবি মদনের ৷ তাঁর বক্তব্য, স্থানীয় একটি ক্লাবের জমি দখল নিয়ে গোলমাল ৷ এর মধ্য়ে তৃণমূলের কোনও অন্তর্দ্বন্দ্ব নেই ৷ এবার তিনি ওই জমির রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেবেন, যাতে কেউ ওই জমি দখল করে সবুজ ধ্বংস করতে না পারে ৷
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতা কিশোর কর বলেন, ‘‘শুধু কামারহাটির নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনেরই তোলাবাজি চলছে । বড় জমিতে আবাসনের কাজ চলছে । সেখান থেকে তাদের বখরা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল । আর তার কারণেই এই গুলি, বোমাবাজির ঘটনা ঘটছে । পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে থাকলে, এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না ।’’
পুলিশের দাবি, সেখানে কোনও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি ৷ কিন্তু এলাকার মানুষ সে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোলও উদ্ধার করেছে । গতকালের ঘটনায় মারামারি সময়কার ছবি না থাকলেও ঘটনা ঘটানোর পড়ে দুষ্কৃতীরা যে রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, তার ছবি ধরা পড়েছে । এই ঘটনার জন্য পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি ।
আরও পড়ুন: কামারহাটিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে যুব নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি