গাইঘাটা, 9 অক্টোবর: নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের 164 ধারায় গোপন জবানবন্দি নিতে হবে, তাও 48 ঘন্টার মধ্যে। এই সময়ের মধ্যে জবানবন্দি না-নেওয়া হলে থানার গেটে তালা মেরে দেওয়ার নিদান দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একই সঙ্গে মেয়র ফিরাদ হাকিমকে 'ডাকাত' বলেও আক্রমণ শানান সুকান্ত।
সোমবার উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটার মানিকহীরা দেশপাড়ায় নিহত বিজেপি কর্মী কানন রায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা আসেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানে এমনই মন্তব্য করেন তিনি। এদিন বিকালে নিহত কর্মীর বাড়িতে আসেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র, বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, অশোক কীর্তনীয়া, মুকুটমণি অধিকারী, জেলা বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল-সহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তারা কথা বলেন কাননের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এবং তাদের আর্থিক সহযোগিতাও করে বিজেপি ৷ কাননের বাড়িতে বসেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান সুকান্ত। অভিযোগ তোলেন, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা নিরুপম রায়ের উসকানিতে তার দলের বেশ কয়েজন হার্মাদ কাননের বাড়িতে এসে আক্রমণ করে। কাননের ছেলেকে মারধরও করা হয়। আর তাকে বাঁচাতে গিয়ে মাথায় আঘাত লেগে কাননের মৃত্যু ঘটে।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, "এর পিছনে যার ষড়যন্ত্র অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ডান হাত এই জেলার খুব কাছের মানুষ নিরুপম রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। নিরুপম রায় অন্য রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের কোনও রকম সদিচ্ছা নেই তাকে গ্রেফতার করার। থানার আধিকারিক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির মত আচরণ করছে।" পরে মানিকহীরা বাজারে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি পথ সভারও আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের একবার পুলিশকে আক্রমণ শানিয়ে নিহত কানন রায়ের পরিবারের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার দাবি জানান সুকান্ত মজুমদার। যার জন্য সময় বেঁধে দিয়ে তিনি বলেন, "48 ঘণ্টার মধ্যে জবানবন্দি না-নেওয়া হলে আমরা হাইকোর্টে গিয়ে রিডপিটিশন করব। এই থানার আধিকারিকেও কোর্টে টানবো।"
একই সঙ্গে দলীয় নেতৃত্ব ও বিধায়কদের তিনি বলেন, "এই পুলিশ যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা না-নেয়, পরিবারের জবানবন্দি যদি না-নেয় থানায় তালা লাগিয়ে দিন। থানা থেকে একটা পুলিশকে বের হতে দেবেন না। থানার মোড়ে সকলকে অবরুদ্ধ করে রাখুন। তারপর যা হয় দেখা যাবে ৷ প্রয়োজন আমি এসে অবস্থানে বসব। দেখি পুলিশের কত ক্ষমতা নিরুপম রায়কে বাঁচাতে পারে, তৃণমূল নেতাদের বাঁচাতে পারে।"
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটির ছাত্রমৃত্যু তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট
পাশাপাশি, ফিরাদ হাকিমকে কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, "ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই রেড পড়েছে ৷ হাকিম সাহেবের খুব দুঃখ হয়েছে। নিজেই প্রশ্ন করছে আমি কি চোর! আমি বলছি না আপনি চোর না, আপনি ডাকাত ৷ তৃণমূলে যারা আছে সব ডাকাত। চোররা তো ছিচকে চুরি করে আর তৃণমূল কংগ্রেসের লোকরা মানুষের সমস্ত কিছু চুরি করে নেয়।" প্রসঙ্গত, গত 27 সেপ্টেম্বর রাতে গাইঘাটা মানিকহীরা দেশপাড়ায় কানন রায় নামে 62 বছরের এক মহিলা বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠছিল তৃণমূল কর্মী সমির মল্লিকের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে খুনের মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নিরুপম রায়ের বাড়ি ঘেরাও করে গ্রামবাসীরা। নিরুপমের গ্রেফতারির দাবি করেন তারা।