দেগঙ্গা, 27 জুন: স্কুল খুলেই আন্দোলন ৷ উত্তর 24 পরগনার বেড়াচাঁপা বীণাপাণি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে আন্দোলন (Student Agitation on Transfer of headmistress)। পড়ুয়াদের এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন অভিভাবকরাও। শেষে দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপার সার্কেল ইন্সপেক্টর মহম্মদ হাবিবুল্লাহের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘ 22 বছরেরও বেশি সময় ধরে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা বীণাপাণি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত প্রধান শিক্ষিকা সাথী মুখোপাধ্যায়। তাঁর ব্যবহার এবং ভালোবাসায় পড়ুয়াদের ও প্রধান শিক্ষিকার মধ্যে ক্রমেই নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই সম্পর্ক যেন ছিল মাতৃসম ! কিন্তু অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি রাজ্য সরকারের 'ঊষশ্রী'-পোর্টালে বদলির আবেদন করেন প্রধান শিক্ষিকা। বদলির সেই আবেদন দিন কয়েক আগে মঞ্জুরও হয়েছে বলে খবর স্কুল সূত্রে।
যদিও গরমের ছুটি থাকায় প্রিয় 'দিদিমণি'-র বদলির বিষয়টি সেই সময় প্রকাশ্যে আসেনি। গরমের ছুটি কাটিয়ে সোমবার সকালে স্কুলে আসতেই প্রধান শিক্ষিকার বদলির কথা জানতে পারেন পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা। এরপরই ক্লাস ছেড়ে 'দিদিমণি'-র বদলি রুখতে আন্দোলনে নামে তাঁরা। তাও আবার পোস্টারিং, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে। কোনও প্ল্যাকার্ডে লেখা, 'দিদি আপনার পায়ে ধরি এভাবে আমাদের ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাবেন না'। আবার কোনও প্ল্যাকার্ডে লেখা হয়েছে 'মাতৃসম দিদিকে আমরা হারাতে চাই না'।
প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পর স্থানীয় স্কুল পরিদর্শক মহম্মদ হাবিবুল্লাহ স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপরই ক্লাসে ফেরেন অন্দোলনরত পড়ুয়ারা। এই বিষয়ে রিয়া দাস নামে এক ছাত্রী বলেন, "দিদিমণি এখান থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাক, সেটা আমরা চাই না। আমরা চাই বড়দিদি এখানে থেকেই আমাদের আগের মতো ভালোবাসুক। ওনাকে আমরাও সকলে ভালোবাসি। উনি স্কুল থেকে চলে গেলে খুব মিস করব। সেই কারণেই ক্লাস বন্ধ করে বিক্ষোভে সামিল হয়েছি সকলে ।"
আরও পড়ুন : গরমের ছুটির পর খুলছে স্কুল; সঙ্গে জারি করোনা বিধিনিষেধ
দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপা সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক মহম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, "বদলি প্রক্রিয়া সরকারি নিয়মের মধ্যেই পড়ে। তা সত্বেও পড়ুয়া-অভিভাবকদের ভালোবাসা দেখে প্রধান শিক্ষিকাকে অনুরোধ করা হয়েছে তিনি যাতে বিষয়টি বিবেচনা করেন। উনি তা বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।" অন্যদিকে, যাঁর বদলি রুখতে পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা জোটবদ্ধ সেই প্রধান শিক্ষিকা সাথী মুখোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য মেলেনি।