হিঙ্গলগঞ্জ, 30 মে: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বানভাসি হিঙ্গলগঞ্জে মেডিকেল ক্যাম্প করে বিপর্যস্ত মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়শনের রাজ্য শাখা । রবিবার সংগঠনের সম্পাদক এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি টিম পৌঁছায় জলবন্দি হিঙ্গলগঞ্জে । সেখানে স্থানীয় মামুদপুর হাইস্কুলে খোলা হয় মেডিকেল ক্যাম্প । এরপর,সামাজিক দূরত্ব মেনে স্কুলে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতদের এক এক করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন আইএমএ-র চিকিৎসকরা । দূষিত জল থেকে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বানভাসি মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন ওষুধ, ওআরএসের মতো সামগ্রী । দেওয়া হয়েছে বিস্কুট, শুকনো খাবার এবং মাস্ক । চিকিৎসকদের কাছ থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়ে খুশি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বানভাসি মানুষ ।
যশ এবং ভরা কোটালের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বিদ্যাধরী, গৌড়েশ্বর, রায়মঙ্গল, কালিন্দী, কলাগাছি, বেতনী ও ইছামতি নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত সুন্দরবনের একাধিক গ্রাম । সন্দেশখালি ১ ও ২, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ সহ সুন্দরবন লাগোয়া বসিরহাটের প্রায় ছ'টি ব্লক এখনও জলের তলায় । নদীর নোনা জল ঢুকে ক্ষতি হয়েছে বিঘার পর বিঘা মাছের ভেড়ি, মারা গিয়েছে গৃহপালিত জীবজন্তু । আবার কোথাও ভেড়ি এবং পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে । দুর্গন্ধে টেকায় দায় হয়ে পড়েছে বানভাসি মানুষের । এই অবস্থায় জলবাহিত এবং পেটের বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে । সেই আশঙ্কা করেই হিঙ্গলগঞ্জে যশের রিভিউ মিটিংয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন আইএমএ-র টিম শীঘ্রই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সেখানে যাবে । মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের একদিন পরই বানভাসি হিঙ্গলগঞ্জে এসে দুর্গত মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেন আইএমএ-র চিকিৎসকরা ।
এই বিষয়ে আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "করোনাকালে প্রথম থেকেই আইএমএ রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছে । গতবারও আমফানের সময় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা বিভিন্ন জায়গায় হেলথ ক্যাম্প করেছিলাম । এবারও যশ বিধ্বস্ত পূর্ব মেদিনীপুর,উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোট ১৩টি বন্যা কবলিত এলাকায় আইএমএ-র রাজ্য শাখা হেলথ ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তারই অঙ্গ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন আমরা বানভাসি হিঙ্গলগঞ্জে মেডিকেল ক্যাম্প করলাম । জলবাহিত ও পেটের অসুখ রোধে প্রশাসনের সর্বদা নজর রয়েছে ৷" কাকলি রায় নামে এক বানভাসি মহিলা বলেন, "ত্রাণ শিবিরে খুব ভালো পরিষেবা পাচ্ছি আমরা । খাওয়া দাওয়ায় কোনও অসুবিধা হচ্ছে না । ডাক্তারবাবুরা এখানে ক্যাম্প করে সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেন । ওষুধপত্রও তুলে দিলেন ৷ এতে আমরা খুব খুশি ৷"