বারাসত, 5 জুন : গাছ নিতে সাধারণ মানুষের ভিড় । সামাজিক দূরত্ব মানার কোনও বালাই নেই। সুরক্ষা বিধি কার্যত শিকেয় উঠল BJP-র বৃক্ষদান কর্মসূচিতে। একপ্রকার গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই চলল চারাগাছ নেওয়ার হিড়িক। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এমনই ঘটনা ঘটল উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসতে।
কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে আমফান ঘূর্ণিঝড়। এই ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে দুই 24 পরগনা ও কলকাতায়। বিশেষত আমফানের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের ঘরবাড়ি ও ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ। এছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য গাছেরও ক্ষতি হয়েছে। যে পরিমাণ গাছ উপড়ে গিয়েছে তাতে পরিবেশের ভারসাম্যের উপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় একমাত্র উপায় সবুজায়ন।
ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে 5 কোটি গাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। বসে নেই বিরোধীরাও। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বারাসতের দুটি জায়গায় BJP-র পক্ষ থেকে কয়েক হাজার চারাগাছ তুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের হাতে। আর এই কর্মসূচিতেই ধরা পড়ল অনিয়মের ছবি। মানা হয়নি সুরক্ষা বিধি। গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় BJP কর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষকে-ও। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের মতে, "প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসলেও কোরোনার থাবা কিন্তু এতটুকু কমেনি। বরং প্রতিদিনই কোরোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা সুরক্ষা বিধি মেনে চলার কথা বারবার বলছেন। তারপরও যদি কারও হুঁশ না ফেরে তাহলে আগামীদিনে ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।"
এবিষয়ে BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায় সাফাই দিয়ে বলেন, "BJP-র নেতা ও কর্মীদের নিয়েই বৃক্ষদানের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে চারাগাছ নিতে ভিড় করেন উৎসাহী মানুষেরাও। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কোনও কথায় কান দেয়নি। আগামীদিনে এসবের দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে ।"
অন্যদিকে, সুরক্ষা বিধি না মেনে বৃক্ষদানের কর্মসূচি করায় BJP-কে কটাক্ষ করেছেন বারাসত পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা সুনীল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ওঁদের কাজকর্মই হল মানুষকে বিপদে ফেলা। মানুষ ভালোভাবেই এঁদের চিনে গেছে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত জবাব দেবে মানুষ।"