বারাসত, 23 অগাস্ট : BJP-এর থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে উধাও সামাজিক দূরত্ব ৷ মানা হল না সুরক্ষাবিধি ৷ উত্তর 24 পরগনার বারাসতের ঘটনা ৷ অভিযোগ ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, জমায়েত রুখতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে । যার ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ।
কোরোনা মোকাবিলায় বারবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সুরক্ষা বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ । সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে সুরক্ষা বিধি শিকেয় তুলে জমায়েত করার অভিযোগ উঠছে বারবার । বারাসতে গেরুয়া শিবিরের থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে উঠেছে একই অভিযোগ । যদিও এই নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি BJP-র জেলা নেতৃত্ব । পুলিশি জুলুম, BJP কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো সহ একাধিক দাবিতে আজ বারাসত থানা ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির । সেই মতো কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন মন্ডল কমিটি মিছিল করে বারাসতের দিকে আসতে শুরু করে । থানা ঘেরাও কর্মসূচি হওয়ায় পুলিশও অশান্তি এড়াতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল RAF, কামব্যাট ফোর্স সহ বিশাল পুলিশবাহিনী ৷ রাস্তায় নেমেছিলেন খোদ বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর । সঙ্গে ছিলেন বারাসতের SDPO সত্যব্রত চক্রবর্তী, স্থানীয় থানার IC দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ।
দলের বিভিন্ন মণ্ডল কমিটির কয়েকশো মানুষের মিছিল একসময় জমায়েত হয় বারাসতের হরিতলা মোড়ে । এরপর,সেই জমায়েতে যোগ দেন BJP-র বারাসতের সাংগঠনিক সহ-সভাপতি শংকর দাস সহ দলের বিভিন্ন জেলা নেতৃত্ব । সেখান থেকে BJP-র জমায়েত আর বারাসত থানার দিকে এগোতে দেওয়া হয়নি । আধ কিলোমিটার আগে হরিতলা মোড়েই আটকে দেওয়া হয় তাঁদের । বাধা পেয়ে একসময় সেখানেই বসে পড়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন দলের নেতা-কর্মীরা । পরে, BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শংকর দাসের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল থানায় গিয়ে IC-র কাছে স্মারকলিপি জমা দেন । এদিকে, কোরোনা পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিতে সুরক্ষা বিধি কার্যত শিকেয় উঠেছিল । সামাজিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘন করেই ভিড় করেছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ । মুখে মাস্ক নেই কারোর । আবার থাকলেও তা ঝুলছিল থুতনিতে ।
আর এই অনিয়ম দেখেও জেলা পুলিশকর্তারা জমায়েত রুখতে কিংবা পদক্ষেপ নিতে কোনও উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ উঠেছে । যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে ।
অপরদিকে, পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শংকর দাস । তিনি বলেন, "শাসকদল পুলিশকে ব্যবহার করে দলের নেতা ও কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে । আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি দল-মত নির্বিশেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে । তাঁরা যেন শাসকদলের তাবেদারি করে না চলে ৷" পাশাপাশি তিনি বলেন, "কোন দুঃখে শাসকদলের সঙ্গে সমঝোতা করতে যাব । আমরা আগামীদিনে রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় বসতে চলেছি । তৃণমূল সেটা বুঝতে পেরেই পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করতে চাইছে । পুলিশ প্রশাসন আমাদের শত্রু নয় । তাঁরা চাপের কাছে অন্যায় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে । আমরা ক্ষমতায় এসে হিংসা মুক্ত বাংলা গড়ব ৷"
কোরোনা আবহে জমায়েত করে কর্মসূচি করার জন্য গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শাসকদল । এই বিষয়ে বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি ও পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন,"ওরা(BJP) কোনও নিয়মবিধি কিংবা আইনকানুনের তোয়াক্কা করে না । তাই তো কোরোনা পরিস্থিতিতে বারবার জমায়েত করে আন্দোলনে নামছে । যেখানে আমরা এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি । সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা করছি । সেখানে নাটক করতে রাস্তায় নামছে BJP-র নেতারা । ওঁদের সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভালো ৷"