বাগদা, 5 ডিসেম্বর: কেউ ঘর পাননি, কেউ আবার 100 দিনের কাজের টাকা পাননি । অনেকে আবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছেন না । কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে কাছে পেয়ে এমনই নানাবিধ অভিযোগ করলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা । আদিবাসী সম্প্রদায়ের নন্দরানী সিংয়ের আমন্ত্রণে সোমবার বাগদার সিন্দ্রানি কুঠিবাড়ি এলাকায় মধ্যাহ্নভোজনে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (union minister Shantanu Thakur)। সেখানেই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের অভিযোগের কথা শোনেন শান্তনু (Shantanu Thakur visits Bagda villages) । স্থানীয়দের অভিযোগ শুনে তার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর । যদিও মন্ত্রীর এই কর্মসূচিকে 'পিকনিক' বলে কটাক্ষ করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ।
এলাকায় মন্ত্রী আসছেন জানতে পেরে এদিন সকাল থেকেই নন্দরানী দেবীর বাড়ির সামনে ভিড় করেছিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু মহিলা । শান্তনু ঠাকুর সেখানে পৌঁছাতেই এলাকার মহিলারা তাঁকে ঘিরে ধরে তাদের নানাবিধ অভিযোগ জানাতে থাকেন । কেউ অভিযোগ করেন বহুবার পঞ্চায়েতে ঘরের জন্য কাগজপত্র জমা দিও ঘর পাননি । কেউ আবার পাঁচ-ছয় মাস কাজ করে 100 দিনের কাজ করে তার টাকা পাননি । কেউ আবার অভিযোগ করেন তাঁরা ঠিকমত লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা পাচ্ছে না । এলাকার রাস্তাঘাটের দুরাবস্থা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে ৷
নিমদাসী সিং নামে এক মহিলা বলেন, "সরকারি ঘর পাইনি । এলাকার জল নিকাশের ব্যবস্থাও নেই, রাস্তা সমস্যা রয়েছে । ঠিক মতো রাস্তায় কাজ করা হয়নি, যাতায়াতে সমস্যা হয় । বারবার পঞ্চায়েতে জানিও সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়নি । ফলে আজ মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বিষয়গুলি জানালাম ।" চন্দনা সিং নামে অন্য এক মহিলা বলেন, "জব কার্ডের টাকা পাইনি, ঘরের জন্য আবেদন করে ঘর পাইনি । পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনও সমাধান হয়নি । মন্ত্রীকে বিষয়গুলি জানালাম । তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ৷"
আরও পড়ুন: মারিশদা কাণ্ডে প্রতিক্রিয়া চাইতেই 'বাক্যহারা' পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী !
এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রসঙ্গে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) বলেন, "এলাকাবাসী বলছেন তাঁরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাচ্ছেন না, একশো দিনের কাজের টাকা পাচ্ছে না ও রেশনের মাধ্যমে সঠিকভাবে চাল পাচ্ছে না । তাদের এই অভাব অভিযোগ জানানোর জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল ৷ আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সেগুলি শোনার জন্য এসেছি । আমাদের পক্ষ থেকে এলাকার মানুষের সমস্যার যতটা সমাধান করা যায় সেটা আমরা করব । পাশাপাশি পঞ্চায়েতকে চাপ সৃষ্টি করে কী করে সাধারণ মানুষের দাবি পূরণ করা যায় সে বিষয়টাও আগামী দিনে ভাববো ।"
সিন্দ্রানি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সৌমেন ঘোষ বলেন,"গত চার বছরের মধ্যে একবারও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে এলাকায় দেখা যায়নি । তাঁকে ধন্যবাদ জানাই এলাকায় আসার জন্য ।" তাঁর দাবি, সংসদ তহবিলের টাকায় এলাকায় চার বছরে কোনও উন্নয়ন হয়নি । স্থানীয়দের অভিযোগ প্রসঙ্গে সৌমেন বলেন, "কেন্দ্র সরকার টাকা না দিলে কী করে মানুষ 100 দিনের কাজের টাকা পাবে । পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব মানুষের জন্য কাজ করা হচ্ছে । বহু রাস্তাঘাট ঠিক হয়েছে, বাকিগুলিও ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে ।"