বারাসত, 20 জুলাই : উপসর্গহীন কোরোনা আক্রান্তদের জন্য সেফ হোম চালু করা হবে বলে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পৌরসভা । অবশেষে 50 বেডের সেফ হোম চালু হতে চলেছে বারাসত স্টেডিয়ামে (বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গন)। তৎপরতার সঙ্গে চলছে ওই সেফ হোম ঢেলে সাজানোর কাজও ।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, বারাসত স্টেডিয়ামের দু'টি ড্রেসিংরুম ও একটি হলঘরকে ব্যবহার করা হবে সেফ হোমের জন্য । দুটি ড্রেসিংরুমে 42 জন পুরুষ উপসর্গহীন রোগীকে রাখা হবে । আর হলঘরে রাখা হবে মহিলা উপসর্গহীন রোগীদের । সেখানে 10 জনের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । পুরুষদের জন্য তিনটি বাথরুম ও মহিলাদের জন্য দুটি স্থায়ী বাথরুম তৈরি হচ্ছে সেখানে । স্টেডিয়ামে পাম্পের ব্যবস্থা থাকলেও এতদিন সেখানে কোনও জলের লাইন কিংবা ট্যাঙ্ক ছিল না । সেই সমস্যা মেটাতেও উদ্যোগী হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ । নতুনভাবে জলের লাইন তৈরির পাশাপাশি দু’হাজার লিটারের জলের ট্যাঙ্কও বসানো হচ্ছে স্টেডিয়ামের ভিতরে ।
রোগীদের বিনোদনের জন্য একাধিক ব্যবস্থা করা হয়েছে । করা হয়েছে খাবারের একাধিক আয়োজন । রোগীদের একঘেয়েমি কাটানোর জন্য LCD TV, গান শোনার ব্যবস্থা থাকছে । সেইসঙ্গে বাহারি গাছ ও রকমারি ফুলের টব দিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে স্টেডিয়ামের লন । খাবারের তালিকায় থাকছে ভাত, ডাল আলুভাজা, মাছ-মাংস, ডিম, পনির ছাড়াও নানা ধরনের সবজি । সপ্তাহে একদিন নিরামিষ থাকলেও চারদিন দুপুরের মেনুতে থাকছে মাছ, দু'দিন থাকছে মাংস ।
কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে । তার ফলে বারাসত কদম্বগাছির কোরোনা হাসপাতালে রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে । সেই চাপ কমাতে বারাসতে দ্বিতীয় কোরোনা হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য দপ্তর । বেছে নেওয়া হয় চাঁপাডালির কাছে বেসরকারি এক নার্সিংহোমকে । কিন্তু, জনবহুল এলাকায় কিছুতেই কোরোনা হাসপাতাল করতে দেবেন না বলে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন স্থানীয়রা । এই পরিস্থিতিতে পৌরসভার প্রশাসক বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, উপসর্গহীন কোরোনা আক্রান্তদের রাখার জন্য সেফ হোম চালু করা হবে বারাসতে । কিন্তু, কোথায় করা হবে তা নিয়েই জল্পনা চলছিল । শেষে সবদিক ভাবনাচিন্তা করে বারাসত স্টেডিয়ামকেই বেছে নেওয়া হয় সেফ হোমের জন্য ।
এই বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য ও প্রাক্তন উপ-পৌরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, "আশা করা যায় সোমবার বিকেলের মধ্যে সেফ হোমের যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে যাবে । তারপরই সংক্রমিত রোগীদের চিহ্নিত করে সেখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে । চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও রাখা হবে সেখানে ।