ETV Bharat / state

Tree Sculpture in Bangaon: শিল্পীর নৈপুণ্যতায় প্রাণ ফিরছে বনগাঁর শতাব্দীপ্রাচীন মৃত শিরিষ গাছের - শিরিষ গাছ

উত্তর 24 পরগনার সীমান্ত শহর বনগাঁ রাস্তার পাশের মৃত শিরিষ গাছের কাণ্ডে চলছে ভাস্কর্যের কাজ ৷ যাতে বনগাঁবাসীর মধ্যে এই কাজগুলি স্মৃতি হয়ে থেকে যেতে পারে। একই সঙ্গে সীমান্ত শহর বনগাঁর সৌন্দর্যও বাড়বে।

Tree Sculpture in Bangaon
বনগাঁয় শতাব্দী প্রাচীন মৃত শিরিষ গাছে ভাস্কর্য
author img

By

Published : Apr 18, 2023, 5:31 PM IST

প্রাণ ফিরছে বনগাঁর শতাব্দীপ্রাচীন মৃত শিরিষ গাছের

বনগাঁ, 18 এপ্রিল: যশোর রোডের দু'পাশে শতাব্দী প্রাচীন শিরিষ গাছ বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। জরাজীর্ণ অনেক গাছই এখন মৃতপ্রায়। বেশ কিছু গাছ ইতিমধ্যে মারাও গিয়েছে। বনগাঁ পৌরসভার উদ্যোগে সেই মৃত গাছে প্রাণ ফেরাচ্ছেন শিল্পীরা। মৃত গাছগুলির শাখা-কান্ড খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন শিল্পনৈপুণ্য। কোনও গাছে ফুটে উঠছে মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি, কোনও গাছে আবার বিশ্ব বাংলার লোগো। বর্তমানে হাতি এবং অশোকস্তম্ভ তৈরির কাজ চলছে।

বনগাঁ পৌরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ রামনগর রোডের মুখ থেকে বিএসএফ ক্যাম্প মোর পর্যন্ত যশোর রোডের ধারের মৃত দশটি গাছে ভাস্কর্যের কাজ চলছে। আরও বেশ কিছু গাছ মৃত অবস্থায় রয়েছে। আগামিদিনে সেই কাজগুলোতেও ভাস্কর্য তৈরি করা হবে। পৌরপ্রধান গোপাল শেঠ জানান, শতাব্দী প্রাচীন এই শিরিষ গাছগুলি বনগাঁর বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বয়স ভারে যে গাছগুলি মারা যাচ্ছে, সেই গাছগুলি ফেলে না-দিয়ে তাতে বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য করা হচ্ছে। যাতে বনগাঁবাসীর মধ্যে এই কাজগুলি স্মৃতি হয়ে থেকে যেতে পারে। একইসঙ্গে এর ফলে সীমান্ত শহরটির সৌন্দর্যও বাড়বে।

গোপাল শেঠ বলেন, "বিভিন্ন আর্ট কলেজের ছাত্ররা এই ভাস্কর্যের কাজ করছেন।" শিল্পী কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, "গাছগুলি মারা গেলেও এখনও কাঠ খুব ভালো রয়েছে। একে কাঠ নয় পাথর বললে চলে।" তিনি জানান, প্রায় এক বছর ধরে 10-15 জন মিস্ত্রি গাছে খোদাইয়ের কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে তাঁরা চার থেকে পাঁচ জন মিলে কাজ করছেন। তাঁদের এই কাজ শেষ করতে এখনও প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে ৷

আরও পড়ুন: মুকুল ভরতি 40টি আমগাছ কেটে বিতর্কে মালাদা বনদফতর

অন্যদিকে, শহরের সৌন্দর্যায়ন জন্য গাছে ভাস্কর্য করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়দের একাংশ ও বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। স্থানীয়রা বলছেন, বহু মূল্যবান এই গাছগুলিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে যে কাজ করছে এটা শুধুমাত্র সময় আর অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। বিধায়ক বলেন, "আমরা ভারতীয় জনতা পার্টি সৌন্দর্যায়নের পক্ষে। কিন্তু যশোর রোড বনগাঁ শহরে একটা ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করে রেখেছে। তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাস্তা ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।" বিধায়কের প্রশ্ন, "যখন রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে তখন এই গাছগুলির কী হবে? সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে যে সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে তা জলে যাবে।" তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "এটা আসলে সৌন্দর্যায়নের নামে কাটমানি খাওয়ার একটা নতুন সংযোজন।"

তবে বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বনগাঁ বাসিন্দা তথা আইনজীবী দীপাঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, "এতে গাছগুলি আরও কয়েকটা বছর আমাদের মধ্যে থেকে যাবে।" এ বিষয়ে প্রধান গোপাল শেঠ বলেন, "আগামিদিনে যদি রাস্তা সম্প্রসারণ হয় তখন এই ভাস্কর্যগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে সরিয়ে রাস্তার পাশেই আবার বসানো হবে।" বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "ওরা উন্নয়নমূলক কোনও কাজে থাকে না, ভাস্কর্যগুলি যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে এসব ওদের মাথায় আসবে না।"

আরও পড়ুন: রঘুনাথপুরে অবৈধ বৃক্ষচ্ছেদন, বিপুল পরিমাণ শালকাঠ বাজেয়াপ্ত বনদফতরের

প্রাণ ফিরছে বনগাঁর শতাব্দীপ্রাচীন মৃত শিরিষ গাছের

বনগাঁ, 18 এপ্রিল: যশোর রোডের দু'পাশে শতাব্দী প্রাচীন শিরিষ গাছ বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। জরাজীর্ণ অনেক গাছই এখন মৃতপ্রায়। বেশ কিছু গাছ ইতিমধ্যে মারাও গিয়েছে। বনগাঁ পৌরসভার উদ্যোগে সেই মৃত গাছে প্রাণ ফেরাচ্ছেন শিল্পীরা। মৃত গাছগুলির শাখা-কান্ড খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন শিল্পনৈপুণ্য। কোনও গাছে ফুটে উঠছে মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি, কোনও গাছে আবার বিশ্ব বাংলার লোগো। বর্তমানে হাতি এবং অশোকস্তম্ভ তৈরির কাজ চলছে।

বনগাঁ পৌরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ রামনগর রোডের মুখ থেকে বিএসএফ ক্যাম্প মোর পর্যন্ত যশোর রোডের ধারের মৃত দশটি গাছে ভাস্কর্যের কাজ চলছে। আরও বেশ কিছু গাছ মৃত অবস্থায় রয়েছে। আগামিদিনে সেই কাজগুলোতেও ভাস্কর্য তৈরি করা হবে। পৌরপ্রধান গোপাল শেঠ জানান, শতাব্দী প্রাচীন এই শিরিষ গাছগুলি বনগাঁর বহু ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বয়স ভারে যে গাছগুলি মারা যাচ্ছে, সেই গাছগুলি ফেলে না-দিয়ে তাতে বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য করা হচ্ছে। যাতে বনগাঁবাসীর মধ্যে এই কাজগুলি স্মৃতি হয়ে থেকে যেতে পারে। একইসঙ্গে এর ফলে সীমান্ত শহরটির সৌন্দর্যও বাড়বে।

গোপাল শেঠ বলেন, "বিভিন্ন আর্ট কলেজের ছাত্ররা এই ভাস্কর্যের কাজ করছেন।" শিল্পী কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, "গাছগুলি মারা গেলেও এখনও কাঠ খুব ভালো রয়েছে। একে কাঠ নয় পাথর বললে চলে।" তিনি জানান, প্রায় এক বছর ধরে 10-15 জন মিস্ত্রি গাছে খোদাইয়ের কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে তাঁরা চার থেকে পাঁচ জন মিলে কাজ করছেন। তাঁদের এই কাজ শেষ করতে এখনও প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে ৷

আরও পড়ুন: মুকুল ভরতি 40টি আমগাছ কেটে বিতর্কে মালাদা বনদফতর

অন্যদিকে, শহরের সৌন্দর্যায়ন জন্য গাছে ভাস্কর্য করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়দের একাংশ ও বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। স্থানীয়রা বলছেন, বহু মূল্যবান এই গাছগুলিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে যে কাজ করছে এটা শুধুমাত্র সময় আর অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। বিধায়ক বলেন, "আমরা ভারতীয় জনতা পার্টি সৌন্দর্যায়নের পক্ষে। কিন্তু যশোর রোড বনগাঁ শহরে একটা ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করে রেখেছে। তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাস্তা ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।" বিধায়কের প্রশ্ন, "যখন রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে তখন এই গাছগুলির কী হবে? সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে যে সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে তা জলে যাবে।" তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "এটা আসলে সৌন্দর্যায়নের নামে কাটমানি খাওয়ার একটা নতুন সংযোজন।"

তবে বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন বনগাঁ বাসিন্দা তথা আইনজীবী দীপাঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন, "এতে গাছগুলি আরও কয়েকটা বছর আমাদের মধ্যে থেকে যাবে।" এ বিষয়ে প্রধান গোপাল শেঠ বলেন, "আগামিদিনে যদি রাস্তা সম্প্রসারণ হয় তখন এই ভাস্কর্যগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে সরিয়ে রাস্তার পাশেই আবার বসানো হবে।" বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "ওরা উন্নয়নমূলক কোনও কাজে থাকে না, ভাস্কর্যগুলি যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে এসব ওদের মাথায় আসবে না।"

আরও পড়ুন: রঘুনাথপুরে অবৈধ বৃক্ষচ্ছেদন, বিপুল পরিমাণ শালকাঠ বাজেয়াপ্ত বনদফতরের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.