বারাসত, 12 এপ্রিল: 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকেই চাই', 'নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি মানছি না,মানব না'। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের গাড়ি লক্ষ্য করে এমনই স্লোগান উঠল বুধবার ৷ স্থান বারাসত ৷ এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝটিকা সফরে এসেছিলেন রাজ্যপাল বোস ৷ এদিন তাঁর কনভয়কে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেখেই ওই স্লোগান তোলেন একদল পড়ুয়া ৷ যাকে কেন্দ্র করে কিছুক্ষণের জন্য সরগরম হয়ে ওঠে ওই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ৷
যদিও বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা রাজ্যপালের গাড়ি পর্যন্ত যাতে এগিয়ে যেতে না পারেন, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এদিন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছিল পুলিশ । তার ফলে এড়ানো গিয়েছে বড় অপ্রীতিকর ঘটনা । এদিন বিক্ষোভকারীদের হাতে কোনও দলীয় বা সংগঠনের পতাকা না থাকলেও জানা গিয়েছে, এদিনের আন্দোলনের পিছনে মূলত শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি রয়েছে ৷
এদিন দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যান আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । তাঁর কনভয় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিল ঠিক তখনই পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল পড়ুয়া । জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে ওঠে স্লোগানও । যার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে । যদিও বিক্ষোভ এবং স্লোগানের মধ্যেই রাজ্যপালের কনভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রবেশ করে যায় । এদিন রীতি মেনে প্রথমেই আচার্য তথা রাজ্যপালকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয় পুলিশের তরফে । পরে সংবর্ধনা জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ।
জানা গিয়েছে, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম খতিয়ে দেখতেই এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের এই সফর । এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহুয়া দাস এবং অধ্যাপকদের সঙ্গে একান্তে বৈঠকও করেন । সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন আচার্য । সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাঠও দিতে দেখা যায় তাঁকে ।
এদিকে, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন,"জাতীয় শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে বাংলাই নেতৃত্ব দেবে একদিন । দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করার প্রক্রিয়া চলছে । কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তা চলছে । আশা করছি, শীঘ্রই তা চালু হয়ে যাবে ৷"
আরও পড়ুন: বোলপুরের টোটোয় অনুব্রতর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গাত্মক ব্যানার চালক সুকেশের
যদিও নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে মহম্মদ সুরাজ হোসেন নামে এক আন্দোলনকারী বলেন,"যে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে এই জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করার চেষ্টা চলছে তাতে আখেরে সমস্যা বাড়বে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরই । তাই, আমরা এই জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছি । রাজ্যপালের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর কারণই হল,যাতে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কানে পৌঁছয় ৷" অন্যদিকে, এদিন রাজ্যপালকে বিক্ষোভ দেখানোর বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন,"রাজ্যপাল রাজ্যপালের কাজ করেছেন । আন্দোলনকারীরা আন্দোলনকারীদের কাজ করেছেন । এটুকুই বলতে পারি ৷" উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা রাজ্যপালকে দেখে গো-ব্যাক স্লোগান দিয়েছিলেন ৷