ETV Bharat / state

Schools Closed: পড়ুয়া কম থাকায় বন্ধ হচ্ছে উত্তর 24 পরগনার 540 স্কুল, তুঙ্গে চর্চা

পড়ুয়ার সংখ্যা 30-এরও কম । বন্ধ হতে চলেছে উত্তর 24 পরগনার (North 24 Parganas News) 540টি প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি স্কুল (School Closed)। শিক্ষা দফতরের তালিকা ঘিরে সরগরম রাজ‍্য রাজনীতি । মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা (Schools Closed)।

Schools Closed
বন্ধ স্কুল
author img

By

Published : Mar 5, 2023, 7:21 PM IST

পড়ুয়া কম থাকায় বন্ধ হচ্ছে উত্তর 24 পরগনার 540 স্কুল

বারাসত, 5 মার্চ: ক্লাসরুম থেকে শিক্ষকদের বসার জায়গা । রয়েছে সবকিছুই । নেই শুধু পর্যাপ্ত পড়ুয়া । যার জেরে প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারি মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় 8 হাজার 207টি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে । এরমধ্যে উত্তর 24 পরগনা (North 24 Parganas News) জেলাতেই রয়েছে প্রায় 540টি স্কুল । সংখ্যাটাই বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াচ্ছে ! তবে, এতগুলো স্কুল একসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেলে পড়ুয়াদের সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মত শিক্ষা মহলের একাংশের (Schools Closed)।

তাই স্কুল বন্ধের তালিকা প্রকাশ হতেই চরম হতাশা ধরা পড়ল অভিভাবক থেকে স্থানীয় মানুষের মধ্যে । তাঁরা চাইছেন, স্কুল বন্ধ না করে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগী হোক সরকার । যাতে বাঁচানো যায় দীর্ঘদিনের এই স্কুলগুলিকে । এমনিতেই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের একচেটিয়া দাপটে ধুঁকছে রাজ্যের বেশিরভাগ বাংলা মাধ্যম স্কুল । তার উপর সরকারের স্কুল বন্ধের মনোভাবে আখেরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পড়ুয়াদের পড়াশোনার ক্ষেত্রেই । এমন আশঙ্কা ঘিরেই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শিক্ষক বদলি-সহ একাধিক মামলায় রায় দিতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, "সবাই যদি গ্রামের স্কুল ছেড়ে বদলি হয়ে শহরের স্কুলে চলে যায়, তাহলে গ্রামের স্কুলগুলি চলবে কী করে ! সেই সঙ্গে তিনি শিক্ষকদের বদলি নীতিরও পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন রাজ‍্য সরকারকে ।

এরপরই সমীক্ষা চালাতে গিয়ে বেহাল দশা প্রকট হয়ে ওঠে রাজ‍্যের অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুলগুলির । সূত্রের খবর, সমীক্ষায় দেখা যায় রাজ‍্যের অন্তত 8 হাজার 207টি প্রাইমারি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা 30-এর গণ্ডি পার করতে পারেনি । শুধু তাই নয়, শিক্ষক সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য । কোথাও দু'জন । আবার কোথাও একজন প‍্যারাটিচার নিয়েই কোনও রকমে চলছে স্কুল ।

এই অবস্থায় রাজ্যের শিক্ষা দফতরের স্কুল বন্ধের তালিকা চিন্তা বাড়িয়েছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও । সেই তালিকায় যে 24টি জেলার পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তাতে উত্তর 24 পরগনা জেলা রয়েছে চতুর্থ স্থানে । সবার প্রথমে রয়েছে রাঢ় বঙ্গের জেলা বাঁকুড়া । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক রাঢ় জেলা পুরুলিয়া । এরপরই রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর । জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, উত্তর 24 পরগনা জেলায় যে 540টি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে, তারমধ্যে প্রাইমারি স্কুলের সংখ্যা 403 । আপার প্রাইমারি রয়েছে 136টি । বাকি একটি উচ্চ মাধ্যমিক ৷

জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকই কমবেশি রয়েছে এই তালিকায় । বাদ যায়নি জেলার সদর শহর বারাসতও । সেখানেও বেশ কয়েকটি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হওয়ার মুখে । এমনই কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলের খোঁজ পেয়ে সেখানে ঢুঁ মেরেছিলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি । কিন্তু, সেখানে স্কুলের দিদিমণিরা বেহাল দশা লুকানোর মরিয়া চেষ্টা চালানোর কোনও কসুর বাকি রাখলেন না । প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে রাজিই হলেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।

এ দিকে, স্কুলছুট কমাতে ও পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে রাজ‍্য সরকার মিড-ডে মিল-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে ঠিকই, কিন্তু তারপরও প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারি স্কুলগুলিতে দিনদিন যেভাবে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে তাতে প্রশ্ন উঠেছে ৷

আরও পড়ুন: ছাত্রছাত্রীরা আসে না, তবু একা কুম্ভের মতো স্কুল আগলে সুকুমার স্যর!

এই বিষয়ে বাপি কর্মকার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "প্রসাদপুরের বিনোদিনী শিশু শিক্ষায়তন নামে যে স্কুল রয়েছে, সেখানে এলাকার গরিব ছেলে-মেয়েরা মূলত পড়ে । একসময় আমরাও এই স্কুলে পড়েছি । অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে স্কুলের মধ্যে । তাই, স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে খারাপ তো লাগবেই ! সবচেয়ে সমস্যায় পড়বে স্কুলের পড়ুয়ারা । আমরা চাই, পড়ুয়াদের স্বার্থে স্কুলটি যেন বন্ধ না করা হয় ।"

আরেক বাসিন্দা বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, স্কুল বন্ধ না করে কেন পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে, তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন । তাঁর মতে, স্কুল বন্ধ কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না । অনেক গরিব এবং পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলেমেয়েরা এই সমস্ত সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ে । তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা নেই বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলিতে ছেলেমেয়েদের ভরতি করানোর । তাই তাঁদের দিকটাও সরকারের ভেবে দেখা উচিত বলে মত তাঁর ৷

অন‍্যদিকে, এই ইস্যুতে শাসক-বিরোধীর তরজায় রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তর 24 পরগনা জেলার রাজনীতি । বিষয়টি নিয়ে শাসকদলকে খোঁচা দিয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ।

তাঁর কথায়, "আসলে সরকার শিক্ষাক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণের চেষ্টা করছে ।নিজের দায়িত্ব অস্বীকার করতে চাইছে তৃণমূল সরকার । প্রত্যন্ত এলাকায় পড়ুয়ার সংখ্যা কম হবে এটাই স্বাভাবিক । তার মানে এই নয় যে, স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করব না । নিয়োগ না করে শুধু দুর্নীতি করব ! শিক্ষাক্ষেত্রকে বারোটা বাজানোর সব চেষ্টা করছে এই রাজ‍্য সরকার । এদের শিক্ষানীতির সঙ্গে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষানীতির কোনও তফাৎ নেই । মানুষ সবকিছুই বুঝতে পারছে ।"

অপরদিকে, বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তুহিন মণ্ডল বলেন, "540টি স্কুল কেন বন্ধ হতে চলেছে তা আগে খুঁজে বের করা দরকার সরকারের । স্কুল বন্ধ কোনও সুরাহা নয় । যারা এতদিন বাড়ির কাছের স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করত, স্কুল বন্ধ হলে তাদের এ বার থেকে দূরের কোনও স্কুলে যেতে হবে পঠনপাঠনের জন্য । তাতে সমস্যা আরও বাড়বে । পড়ুয়ার সংখ্যা কমলে যদি স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়, তাহলে কত স্কুল আর বন্ধ করবে সরকার ? আমরা চাইব স্কুল চালু থাক ।"

যদিও, বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা । প্রতিক্রিয়া নিতে জেলা স্কুল পরিদর্শক কৌশিক রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বারাসত পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পৌরপারিষদ অভিজিৎ নাগ চৌধুরী ।

তিনি বলেন, সরকার এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না তা তাঁর জানা নেই । যদি নিয়ে থাকে নিশ্চয় তার পিছনে কোনও না কোনও কারণ রয়েছে । সমস্যা হল, যেখানে প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংযোগ রয়েছে সেখানেই অভিভাবকরা প্রাধান্য দেয় পড়ুয়াদের ভরতির ক্ষেত্রে । আর যেখানে প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের কোনও সংযোগ নেই সেখানেই পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে । ফলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমার এটিও একটি কারণ । সরকার নিশ্চয় বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করে তারপরেই এগোবে ৷

পড়ুয়া কম থাকায় বন্ধ হচ্ছে উত্তর 24 পরগনার 540 স্কুল

বারাসত, 5 মার্চ: ক্লাসরুম থেকে শিক্ষকদের বসার জায়গা । রয়েছে সবকিছুই । নেই শুধু পর্যাপ্ত পড়ুয়া । যার জেরে প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারি মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় 8 হাজার 207টি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে । এরমধ্যে উত্তর 24 পরগনা (North 24 Parganas News) জেলাতেই রয়েছে প্রায় 540টি স্কুল । সংখ্যাটাই বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াচ্ছে ! তবে, এতগুলো স্কুল একসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেলে পড়ুয়াদের সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মত শিক্ষা মহলের একাংশের (Schools Closed)।

তাই স্কুল বন্ধের তালিকা প্রকাশ হতেই চরম হতাশা ধরা পড়ল অভিভাবক থেকে স্থানীয় মানুষের মধ্যে । তাঁরা চাইছেন, স্কুল বন্ধ না করে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগী হোক সরকার । যাতে বাঁচানো যায় দীর্ঘদিনের এই স্কুলগুলিকে । এমনিতেই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের একচেটিয়া দাপটে ধুঁকছে রাজ্যের বেশিরভাগ বাংলা মাধ্যম স্কুল । তার উপর সরকারের স্কুল বন্ধের মনোভাবে আখেরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পড়ুয়াদের পড়াশোনার ক্ষেত্রেই । এমন আশঙ্কা ঘিরেই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শিক্ষক বদলি-সহ একাধিক মামলায় রায় দিতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, "সবাই যদি গ্রামের স্কুল ছেড়ে বদলি হয়ে শহরের স্কুলে চলে যায়, তাহলে গ্রামের স্কুলগুলি চলবে কী করে ! সেই সঙ্গে তিনি শিক্ষকদের বদলি নীতিরও পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন রাজ‍্য সরকারকে ।

এরপরই সমীক্ষা চালাতে গিয়ে বেহাল দশা প্রকট হয়ে ওঠে রাজ‍্যের অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুলগুলির । সূত্রের খবর, সমীক্ষায় দেখা যায় রাজ‍্যের অন্তত 8 হাজার 207টি প্রাইমারি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা 30-এর গণ্ডি পার করতে পারেনি । শুধু তাই নয়, শিক্ষক সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য । কোথাও দু'জন । আবার কোথাও একজন প‍্যারাটিচার নিয়েই কোনও রকমে চলছে স্কুল ।

এই অবস্থায় রাজ্যের শিক্ষা দফতরের স্কুল বন্ধের তালিকা চিন্তা বাড়িয়েছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও । সেই তালিকায় যে 24টি জেলার পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, তাতে উত্তর 24 পরগনা জেলা রয়েছে চতুর্থ স্থানে । সবার প্রথমে রয়েছে রাঢ় বঙ্গের জেলা বাঁকুড়া । দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক রাঢ় জেলা পুরুলিয়া । এরপরই রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর । জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, উত্তর 24 পরগনা জেলায় যে 540টি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে, তারমধ্যে প্রাইমারি স্কুলের সংখ্যা 403 । আপার প্রাইমারি রয়েছে 136টি । বাকি একটি উচ্চ মাধ্যমিক ৷

জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকই কমবেশি রয়েছে এই তালিকায় । বাদ যায়নি জেলার সদর শহর বারাসতও । সেখানেও বেশ কয়েকটি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হওয়ার মুখে । এমনই কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলের খোঁজ পেয়ে সেখানে ঢুঁ মেরেছিলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি । কিন্তু, সেখানে স্কুলের দিদিমণিরা বেহাল দশা লুকানোর মরিয়া চেষ্টা চালানোর কোনও কসুর বাকি রাখলেন না । প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে রাজিই হলেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।

এ দিকে, স্কুলছুট কমাতে ও পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে রাজ‍্য সরকার মিড-ডে মিল-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে ঠিকই, কিন্তু তারপরও প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারি স্কুলগুলিতে দিনদিন যেভাবে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে তাতে প্রশ্ন উঠেছে ৷

আরও পড়ুন: ছাত্রছাত্রীরা আসে না, তবু একা কুম্ভের মতো স্কুল আগলে সুকুমার স্যর!

এই বিষয়ে বাপি কর্মকার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "প্রসাদপুরের বিনোদিনী শিশু শিক্ষায়তন নামে যে স্কুল রয়েছে, সেখানে এলাকার গরিব ছেলে-মেয়েরা মূলত পড়ে । একসময় আমরাও এই স্কুলে পড়েছি । অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে স্কুলের মধ্যে । তাই, স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে খারাপ তো লাগবেই ! সবচেয়ে সমস্যায় পড়বে স্কুলের পড়ুয়ারা । আমরা চাই, পড়ুয়াদের স্বার্থে স্কুলটি যেন বন্ধ না করা হয় ।"

আরেক বাসিন্দা বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, স্কুল বন্ধ না করে কেন পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে, তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন । তাঁর মতে, স্কুল বন্ধ কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না । অনেক গরিব এবং পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলেমেয়েরা এই সমস্ত সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ে । তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা নেই বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলিতে ছেলেমেয়েদের ভরতি করানোর । তাই তাঁদের দিকটাও সরকারের ভেবে দেখা উচিত বলে মত তাঁর ৷

অন‍্যদিকে, এই ইস্যুতে শাসক-বিরোধীর তরজায় রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তর 24 পরগনা জেলার রাজনীতি । বিষয়টি নিয়ে শাসকদলকে খোঁচা দিয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ।

তাঁর কথায়, "আসলে সরকার শিক্ষাক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণের চেষ্টা করছে ।নিজের দায়িত্ব অস্বীকার করতে চাইছে তৃণমূল সরকার । প্রত্যন্ত এলাকায় পড়ুয়ার সংখ্যা কম হবে এটাই স্বাভাবিক । তার মানে এই নয় যে, স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করব না । নিয়োগ না করে শুধু দুর্নীতি করব ! শিক্ষাক্ষেত্রকে বারোটা বাজানোর সব চেষ্টা করছে এই রাজ‍্য সরকার । এদের শিক্ষানীতির সঙ্গে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষানীতির কোনও তফাৎ নেই । মানুষ সবকিছুই বুঝতে পারছে ।"

অপরদিকে, বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তুহিন মণ্ডল বলেন, "540টি স্কুল কেন বন্ধ হতে চলেছে তা আগে খুঁজে বের করা দরকার সরকারের । স্কুল বন্ধ কোনও সুরাহা নয় । যারা এতদিন বাড়ির কাছের স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করত, স্কুল বন্ধ হলে তাদের এ বার থেকে দূরের কোনও স্কুলে যেতে হবে পঠনপাঠনের জন্য । তাতে সমস্যা আরও বাড়বে । পড়ুয়ার সংখ্যা কমলে যদি স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়, তাহলে কত স্কুল আর বন্ধ করবে সরকার ? আমরা চাইব স্কুল চালু থাক ।"

যদিও, বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা । প্রতিক্রিয়া নিতে জেলা স্কুল পরিদর্শক কৌশিক রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বারাসত পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পৌরপারিষদ অভিজিৎ নাগ চৌধুরী ।

তিনি বলেন, সরকার এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না তা তাঁর জানা নেই । যদি নিয়ে থাকে নিশ্চয় তার পিছনে কোনও না কোনও কারণ রয়েছে । সমস্যা হল, যেখানে প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংযোগ রয়েছে সেখানেই অভিভাবকরা প্রাধান্য দেয় পড়ুয়াদের ভরতির ক্ষেত্রে । আর যেখানে প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের কোনও সংযোগ নেই সেখানেই পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে । ফলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমার এটিও একটি কারণ । সরকার নিশ্চয় বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করে তারপরেই এগোবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.