শাসন, 30 জুলাই: পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পরেও শাসকদল নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ৷ এবার উত্তর 24 পরগনার শাসনে জেলা পরিষদের 38 নম্বর আসনের দু’টি বুথের সবক’টিতেই নাকি ভোট পড়েছে তৃণমূলের পক্ষে ৷ আর এই ইস্যুতে ফের ময়দানে নেমে পড়েছে বিরোধীরা ৷ সেখানে বিজেপি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের ভোট রয়েছে ৷ প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে ওই দু’টি বুথে জেলা পরিষদের আসনে একটি ভোটও পেলেন না বিরোধী প্রার্থীরা ? বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেছেন, দু’টি বুথেই অবাধে ছাপ্পা ভোট করেছে তৃণমূল ৷ ইতিমধ্যে, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে চলা মামলায় বিষয়টি তুলেছেন 38 নম্বর আসনের বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর হালদার ৷
উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের 38 নম্বর আসনে এবার লড়াই ছিল চতুর্মুখী ৷ এই আসনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিদায়ী জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ ৷ তাঁর বিপরীতে বিজেপির প্রতীকে প্রার্থী করেন দীপঙ্কর হালদার ৷ কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন আসিকুল ইমরান ৷ আর আইএসএফ-এর হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নিজামউদ্দিন ৷ দাদপুর ও কীর্তিপুর 1 ও 2 পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদের 38 নম্বর আসনটি ৷ সব মিলিয়ে প্রায় 63টি বুথ রয়েছে এখানে ৷
এর অধিকাংশ বুথেই বিরোধী প্রার্থীদের কেউ হয় শূন্য পেয়েছে ৷ নতুবা সর্বসাকুল্যে এক অঙ্কের কিংবা দুই অঙ্কের ভোটের গণ্ডিতে গিয়ে থমকে যেতে হয়েছে ৷ যেমন দাদপুর পঞ্চায়েতের ভাটপাড়া বুথে মোট ভোটার সংখ্যা 910 ৷ সেখানে ভোট পড়েছে 830টি ৷ কিন্তু, সব ভোটই পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী এ কে এম ফারহাদ ৷ বিজেপি, কংগ্রেস ও আইএসএফ প্রার্থীর কেউই কোনও ভোট পাননি ৷ একই অবস্থা উত্তর বহিরা বুথেও ৷
অভিযোগ উঠেছে, বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর হালদারের নিজের বুথ দক্ষিণ বহিরাতেও কোনও ভোট পাননি তিনি ৷ সেই বুথে কংগ্রেস প্রার্থী আসিকুল ইমরান মাত্র 3টি ভোট পেয়েছেন ৷ আইএসএফ প্রার্থী নিজামউদ্দিনও কোনও ভোট পাননি দক্ষিণ বহিরা বুথে ৷ এই আসনের বহু বুথেই এরকম ছবি ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের ৷ স্বাভাবিকভাবেই উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের 38 নম্বর আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী এ কে এম ফারহাদ ৷
আরও পড়ুন: গণনার তিন দিন পরেও আধপোড়া ব্যালট পেপার উদ্ধারে চাঞ্চল্য
দীপঙ্কর হালদার অভিযোগ করছে, "বারাসত 2 নম্বর ব্লক জুড়ে কীভাবে ভোট হয়েছে তার নমুনা এটাই ৷ ভোট লুঠ, ছাপ্পা, রিগিং করেই তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটে জয়লাভ করেছে ৷ এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আজ ৷ সেই কারণেই তো ব্লকে ব্লকে বিডিও এবং মহকুমাতে এসডিও-দের তলব করা হচ্ছে হাইকোর্টে ৷ এখানকার বিডিও ছাড় পাবেন না ৷ তাঁকেও হাজিরা দিতে যেতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে ৷" যদিও এই সব অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব ৷